Geography

মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন প্রশ্ন উত্তর সহ

মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন প্রশ্ন উত্তর সহ ||

মাধ্যমিক-2026-ভূগোল-সাজেশন

মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন :

মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন: এই আর্টিকেলটিতে মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন প্রশ্ন উত্তর সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং ম্যাপ পইন্টিং তুলে ধরা হল।

 

১. নদী, হিমবাহ, এবং বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি প্রধান ভূমিরূপের সচিত্র বর্ণনা কর?

নদী, হিমবাহ, এবং বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি প্রধান ভূমিরূপের সচিত্র বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:

১. 🏞️ নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ: গিরিখাত ও ক্যানিয়ন (Gorge and Canyon)
নদীর গতিপথে সৃষ্ট প্রধান ক্ষয়জাত ভূমিরূপগুলির মধ্যে গিরিখাত ও ক্যানিয়ন অন্যতম।

* সৃষ্টির প্রক্রিয়া: নদীর উচ্চগতিতে বা পাহাড়ি অঞ্চলে নদীর প্রধান কাজ হলো নিম্নক্ষয়। অত্যন্ত খরস্রোতা নদী যখন কঠিন শিলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন নিম্নক্ষয়ের প্রাবল্যে ইংরেজি ‘V’ আকৃতির গভীর উপত্যকা সৃষ্টি হয়। এই উপত্যকাকেই গিরিখাত বলে।

* ক্যানিয়ন: সাধারণত শুষ্ক বা মরুপ্রায় অঞ্চলে এই ধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। এই অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয় খুব বেশি হয়, কিন্তু পার্শ্বক্ষয় তেমন হয় না, কারণ বৃষ্টিপাতের অভাবে ভূমিধস বা ক্ষয় কম হয়। ফলে, গিরিখাত আরও গভীর ও খাড়া ঢালযুক্ত হয় এবং উপত্যকাটি অনেকটা ‘I’ আকৃতির দেখায়। এই ধরনের ভূমিরূপকে ক্যানিয়ন বলে।

* উদাহরণ:
* গিরিখাত: সিন্ধু, শতদ্রু ও ব্রহ্মপুত্র নদের হিমালয় অঞ্চলে সৃষ্ট গিরিখাত।

* ক্যানিয়ন: আমেরিকার কলোরাডো নদীর উপর সৃষ্ট গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়ন।

২. ❄️ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ: হিমদ্রোণী বা ইউ-আকৃতির উপত্যকা (Glacial Trough or U-shaped Valley)

হিমবাহের প্রধান ক্ষয়জাত ভূমিরূপ এটি।

* সৃষ্টির প্রক্রিয়া: সাধারণত নদী উপত্যকাতেই হিমবাহের সৃষ্টি ও প্রবাহ শুরু হয়। হিমবাহ যখন তার প্রবাহ পথে এগিয়ে চলে, তখন অবঘর্ষ (Abrasion) ও উৎপাটন (Plucking) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দু’পাশের দেওয়াল এবং তলদেশ উভয়কেই সমানভাবে ক্ষয় করতে থাকে। নদী সৃষ্ট ‘V’ আকৃতির উপত্যকাটি হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে ক্রমশ চওড়া ও গভীর হয়ে ইংরেজি ‘U’ অক্ষরের মতো রূপ নেয়। এই উপত্যকাকে হিমদ্রোণী বা ইউ-আকৃতির উপত্যকা বলা হয়।

* বৈশিষ্ট্য: এই উপত্যকার তলদেশ হয় প্রায় সমতল এবং দু’পাশের ঢাল হয় খুবই খাড়া।

* উদাহরণ: হিমালয় পর্বতে এই ধরনের বহু উপত্যকা দেখা যায়।

৩. 💨 বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ: ইনসেলবার্গ (Inselberg)

বায়ুর ক্ষয়কার্য প্রধানত মরু অঞ্চলে দেখা যায় এবং ইনসেলবার্গ সেই ক্ষয়জাত ভূমিরূপের একটি উদাহরণ।

* সৃষ্টির প্রক্রিয়া: মরু অঞ্চলে বায়ুর অপসারণ, অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে। মরু অঞ্চলের কোমল শিলাগুলি দ্রুত ক্ষয় হয়ে অপসারিত হয়। কিন্তু কঠিন শিলা গঠিত পাহাড়ের অবশিষ্ট অংশ সহজে ক্ষয় না হয়ে বিচ্ছিন্ন টিলার মতো মরুভূমির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে। এই অবশিষ্ট কঠিন শিলাগঠিত পাহাড়গুলিকে ইনসেলবার্গ (Inselberg), বা জার্মানে “দ্বীপ-শৈল” বলা হয়।

* বৈশিষ্ট্য: এদের মাথা হয় গোলাকার এবং পার্শ্বদেশ হয় খাড়া।

* উদাহরণ: আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমি এবং ভারতের রাজস্থানের মরুভূমি অঞ্চলে ইনসেলবার্গ দেখা যায়।

দশম শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন 2026

——
২. জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির প্রধান কারণ এবং এর গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলগুলি আলোচনা কর?

জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির প্রধান কারণ এবং এর গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলগুলি নিচে বর্ণনা করা হলো:

১. 🌊 জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির কারণ (Causes of Tides)
জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির প্রধানত দুটি কারণ রয়েছে:
ক. মহাকর্ষ বল (Gravitational Force)

* চাঁদের আকর্ষণ: পৃথিবী এবং চাঁদ একে অপরের থেকে অনেক দূরে থাকা সত্ত্বেও, চাঁদের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে পৃথিবীর জলরাশির ওপর একটি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি থাকায়, এটি সূর্যের চেয়ে বেশি আকর্ষণ সৃষ্টি করে।

* পৃথিবীর যে অংশটি চাঁদের ঠিক সামনে থাকে, সেই অংশের জলরাশি সবচেয়ে বেশি জোরে আকৃষ্ট হয়ে ফুলে ওঠে, একে প্রত্যক্ষ জোয়ার (Direct Tide) বলে।

খ. কেন্দ্রাতিগ বা বহির্মুখী বল (Centrifugal Force)

* চাঁদ এবং পৃথিবী উভয়েই একটি সাধারণ ভরকেন্দ্রকে (Common Centre of Mass) কেন্দ্র করে আবর্তন করে।

* এই আবর্তনের ফলে পৃথিবীর জলরাশির ওপর একটি কেন্দ্রাতিগ বল সৃষ্টি হয়, যা জলরাশিকে কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে ঠেলে দিতে চায়।

* চাঁদের আকর্ষণে সৃষ্ট প্রত্যক্ষ জোয়ারের বিপরীত দিকে অবস্থিত জলরাশির ওপর এই কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব সবচেয়ে বেশি হয়। এই বলের প্রভাবে জলরাশি বাইরের দিকে ফুলে ওঠে, একে পরোক্ষ জোয়ার (Indirect Tide) বলে।

এক নজরে: চাঁদ বা সূর্যের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে এক দিকে প্রত্যক্ষ জোয়ার এবং এই ব্যবস্থার আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে তার বিপরীত দিকে পরোক্ষ জোয়ার সৃষ্টি হয়। এই দুটি জোয়ারের মধ্যবর্তী স্থানে জলস্তর নেমে গিয়ে ভাটা সৃষ্টি হয়।

 

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2026 mcq

>
২. 📈 জোয়ার-ভাটার ফলাফল (Effects of Tides)

জোয়ার-ভাটার কারণে প্রকৃতি ও মানব জীবনে নানাবিধ প্রভাব দেখা যায়:

ক. অর্থনৈতিক গুরুত্ব

* বিদ্যুৎ উৎপাদন: জোয়ার-ভাটার শক্তির সাহায্যে জোয়ার-ভাটা শক্তি কেন্দ্র (Tidal Power Plants) স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। (যেমন, গুজরাটের কচ্ছ উপসাগরে)।

* বন্দর ও জাহাজ চলাচল: জোয়ারের সময় জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বড় বড় জাহাজগুলি নদীর মোহনা বা অগভীর বন্দরে সহজে প্রবেশ করতে ও নোঙর করতে পারে। ভাটার সময় এগুলি আবার বন্দর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে।

* নাব্যতা রক্ষা: জোয়ারের সময় জলস্রোতের ধাক্কায় নদীর মোহনায় জমে থাকা পলি বা বালু অপসারিত হয়, যা নদীর নাব্যতা (Depth for Navigation) বজায় রাখতে সাহায্য করে।

খ. প্রাকৃতিক প্রভাব

* আবর্জনার অপসারণ: জোয়ারের শক্তিশালী স্রোতে উপকূল ও নদীর মোহনার আবর্জনা, দূষিত পদার্থ এবং কাদা সমুদ্রে চলে যায়, যা তীরভূমিকে পরিষ্করণে সহায়তা করে।

* জীববৈচিত্র্য: জোয়ার-ভাটার প্রভাবে সৃষ্ট লবণাক্ত পরিবেশ উপকূলবর্তী অঞ্চলে (যেমন, ম্যানগ্রোভ অরণ্যে) এক বিশেষ ধরনের জীববৈচিত্র্য বজায় রাখে।

* সময় নির্ধারণ: জোয়ার-ভাটার ব্যবধান থেকে প্রাচীনকালে স্থানীয় সময় ও তিথি নির্ণয় করা হতো।

——

৩.

১. নদী উপত্যকা ও হিমবাহ উপত্যকার মধ্যে পার্থক্য (Difference between River Valley and Glacial Valley)

| বৈশিষ্ট্যের ভিত্তি | নদী উপত্যকা (River Valley) | হিমবাহ উপত্যকা (Glacial Valley) |

| আকার |

নদী উপত্যকা সাধারণত ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়। | হিমবাহ উপত্যকা সাধারণত ইংরেজি ‘U’ অক্ষরের মতো দেখতে হয়। |

| প্রক্রিয়া |

নদী উপত্যকা প্রধানত নিম্নক্ষয় (Vertical Erosion) ও পার্শ্বক্ষয় (Lateral Erosion) প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। | হিমবাহ উপত্যকা প্রধানত উৎপাটন (Plucking) ও অবঘর্ষ (Abrasion) প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। |

| ঢাল |

নদী উপত্যকার পার্শ্বদেশগুলি সাধারণত ঢালু হয়। | হিমবাহ উপত্যকার পার্শ্বদেশগুলি সাধারণত খাড়া বা প্রায় উল্লম্ব হয়। |

| তলদেশ |

নদী উপত্যকার তলদেশ সাধারণত অসমতল বা বন্ধুর হয়। | হিমবাহ উপত্যকা তলদেশ সাধারণত সমতল বা মসৃণ প্রকৃতির হয় (হিমবাহের ঘর্ষণের ফলে)। |

| উদাহরণ |

নদী উচ্চ গতিতে নদীর সৃষ্ট গিরিখাত। |হিমবাহ উপত্যকা হিমালয় অঞ্চলে বহু ‘U’ আকৃতির উপত্যকা দেখা যায়। |

২. গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য (Difference between Gorge and Canyon)

| বৈশিষ্ট্যের ভিত্তি | গিরিখাত (Gorge) | ক্যানিয়ন (Canyon) |
|—|—|—|
| আকৃতি |

গিরিখাত সাধারণত ইংরেজি ‘V’ আকৃতির গভীর উপত্যকা। | ক্যানিয়ন সাধারণত ইংরেজি ‘I’ আকৃতির বা অত্যন্ত গভীর ও খাড়া ঢালযুক্ত উপত্যকা। |

| সৃষ্টির কারণ |

গিরিখাত মূলত নদীর প্রবল নিম্নক্ষয় এবং অপেক্ষাকৃত আর্দ্র অঞ্চলে পার্শ্বক্ষয়ের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। | ক্যানিয়ন শুষ্ক বা মরুপ্রায় অঞ্চলে সৃষ্টি হয়, যেখানে নদীর নিম্নক্ষয় প্রবল হলেও পার্শ্বক্ষয় প্রায় হয় না। |

| প্রকৃতি |

গিরিখাত পার্শ্বদেশ খাড়া হলেও ক্যানিয়নের মতো এত বেশি খাড়া হয় না। | ক্যানিয়ন পার্শ্বদেশগুলি প্রায় উল্লম্ব হয়। |

| উদাহরণ |

গিরিখাত সিন্ধু, শতদ্রু, ব্রহ্মপুত্র নদের হিমালয়ে সৃষ্ট গিরিখাত। | ক্যানিয়ন আমেরিকার কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। |

৩. বার্খান ও সিফ বালিয়াড়ির মধ্যে পার্থক্য (Difference between Barchan and Seif Dunes)

| বৈশিষ্ট্যের ভিত্তি | বার্খান বা অর্ধচন্দ্রাকার বালিয়াড়ি (Barchan) | সিফ বা অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি (Seif) |
|—|—|—|

| আকার |

বার্খান দেখতে অনেকটা অর্ধচন্দ্রাকার (Half-moon shaped)। | অর্ধচন্দ্রাকার দেখতে অনেকটা লম্বা ও সরলরৈখিক বা তরবারির মতো। |

| সৃষ্টির প্রক্রিয়া |

বার্খান প্রধানত একমুখী (One-way) এবং নিয়মিত বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। | অর্ধচন্দ্রাকার মূলত বায়ুপ্রবাহের দিকের সঙ্গে সমান্তরালভাবে সৃষ্টি হয় এবং পার্শ্ববর্তী বায়ুপ্রবাহের তারতম্যে গঠিত হয়। |

| শৃঙ্গ ও বাহু |

বার্খান বায়ুপ্রবাহের দিকে এর দুটি শিং বা বাহু থাকে। | অর্ধচন্দ্রাকার এর কেবল একটি দীর্ঘ ও তীক্ষ্ণ শীর্ষ থাকে, যা বায়ুপ্রবাহের দিকে বিস্তৃত হয়। |

| উদাহরণ |

বার্খান সাহারা মরুভূমি, থর মরুভূমিতে দেখা যায়। |অর্ধচন্দ্রাকার সাহারা মরুভূমিতে এই ধরনের বালিয়াড়ি প্রচুর দেখা যায়। |

 

৪. সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents) মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির জন্য একাধিক প্রাকৃতিক শক্তি কাজ করে। প্রধান কারণগুলি হলো:

ক. গ্রহীয় বায়ুপ্রবাহ (Planetary Winds)

* এটি সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ।

* সারা বছর ধরে প্রবাহিত নিয়ত বায়ুপ্রবাহ (যেমন অয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু) সমুদ্রের উপরিভাগের জলকে নির্দিষ্ট দিকে ঠেলে নিয়ে যায়, ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।

* উদাহরণ: উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের সৃষ্টি।

খ. সমুদ্রজলের ঘনত্বের পার্থক্য (Difference in Density of Seawater)

* সমুদ্রজলের উষ্ণতা ও লবণাক্ততার তারতম্যের কারণে ঘনত্বের পার্থক্য সৃষ্টি হয়।

* ভারী ও ঘন জল (ঠান্ডা বা বেশি লবণাক্ত) নিচের দিকে নেমে যায় এবং সেই স্থান পূরণের জন্য হালকা জল (গরম বা কম লবণাক্ত) অনুভূমিকভাবে প্রবাহিত হয়ে স্রোতের সৃষ্টি করে।

গ. সমুদ্রজলের উষ্ণতার পার্থক্য (Difference in Temperature of Seawater)

* নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ জল হালকা হওয়ায় মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় এবং মেরু অঞ্চলের শীতল, ভারী জল নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

ঘ. পৃথিবীর আবর্তন গতি (Rotation of the Earth)

* পৃথিবীর আবর্তন গতির কারণে সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে সমুদ্রস্রোতগুলি উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁদিকে বেঁকে যায়।

ঙ. বাষ্পীভবন ও বৃষ্টিপাতের পার্থক্য (Difference in Evaporation and Precipitation)

* যে অঞ্চলে বাষ্পীভবন বেশি হয়, সেখানে জলস্তর কমে যায় ও লবণাক্ততা বাড়ে। ফলে ঘন জল নিচের দিকে নেমে আসে এবং এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য অন্য এলাকা থেকে কম লবণাক্ত জল অনুভূমিকভাবে ছুটে আসে, যা স্রোত সৃষ্টি করে।

৫. বদ্বীপ গঠনের অনুকূল পরিবেশ (Favourable Conditions for Delta Formation)

নদী ও সমুদ্রের মিলিত প্রভাবে বদ্বীপ (Delta) সৃষ্টি হয়। একটি বৃহৎ বদ্বীপ গঠনের জন্য নিম্নলিখিত অনুকূল পরিবেশগুলি প্রয়োজন:

ক. নদীর পলির জোগান (Supply of Sediments)

* নদীর পার্বত্য অঞ্চল: নদীর উৎস অঞ্চলে ক্ষয়কার্যের তীব্রতা বেশি হতে হবে, যাতে নদী প্রচুর পরিমাণে পলি, বালি ও কাঁকর বহন করে আনতে পারে।

* পলিবহনের হার: নদীর গতিপথে পলিবহনের হার যথেষ্ট বেশি হতে হবে।

খ. সমুদ্রের অগভীরতা (Shallow Sea)

* নদীর মোহনা সংলগ্ন সমুদ্রের গভীরতা কম হতে হবে। গভীর সমুদ্রে পলি সঞ্চিত হওয়ার আগেই তলিয়ে যায়, ফলে বদ্বীপ গঠিত হতে পারে না।

গ. সমুদ্রস্রোত ও জোয়ার-ভাটার দুর্বলতা (Weak Currents and Tides)

* দুর্বল সমুদ্রস্রোত: নদীর মোহনায় শক্তিশালী সমুদ্রস্রোত বা ঢেউ থাকলে নদী বাহিত পলিকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় বা ছড়িয়ে দেয়। তাই বদ্বীপ গঠনের জন্য দুর্বল সমুদ্রস্রোত থাকা বাঞ্ছনীয়।

* কম জোয়ার-ভাটা: মোহনায় জোয়ার-ভাটার তীব্রতা কম হলে পলি সহজে জমা হতে পারে। যদি জোয়ার-ভাটার তীব্রতা বেশি হয়, তবে স্রোতের টানে পলি সমুদ্রে চলে যায়।

ঘ. নদীর গতিবেগ (River Velocity)

* নিম্ন গতিতে কম গতিবেগ: নদী যখন মোহনার কাছে আসে, তখন তার গতিবেগ অত্যন্ত কমে যাওয়া প্রয়োজন। গতি কমলে তবেই বহন করে আনা পলি সহজে সঞ্চিত হতে পারে।

ঙ. নদীগর্ভ প্রশস্ত হওয়া (Wide River Bed)

* পলি জমার জন্য নদীর মোহনা বা নদীগর্ভ যথেষ্ট প্রশস্ত হওয়া দরকার।

* উদাহরণ: এই সকল কারণ অনুকূল থাকায় গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী মিলিতভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে।

——-

🗺️ ম্যাপ পয়েন্টিং (Map Pointing):মাধ্যমিক 2026 ভূগোল সাজেশন

ম্যাপ পয়েন্টিং-এর জন্য প্রতিটি অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলি অভ্যাস করা জরুরি। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ দেওয়া হলো:

* পর্বত ও পাহাড়: আরাবল্লী পর্বত, বিন্ধ্য পর্বত, সাতপুরা পর্বত, শিবালিক পর্বত, নীলগিরি পর্বত, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি।

* নদী ও হ্রদ: নর্মদা নদী, তাপ্তি নদী, গোদাবরী নদী, চিল্কা হ্রদ, উলার হ্রদ।

* কৃষি ও শিল্প কেন্দ্র: যেকোনো একটি প্রধান কার্পাস বয়ন শিল্প কেন্দ্র (যেমন মুম্বাই, আহমেদাবাদ), লৌহ-ইস্পাত শিল্প কেন্দ্র (যেমন জামশেদপুর, ভিলাই), চা উৎপাদন অঞ্চল, কফি উৎপাদন অঞ্চল।

* মৃত্তিকা: মরু মৃত্তিকা অঞ্চল, কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *