মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026 || class 10 bengali suggestion 2026 ||
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026 || class 10 bengali suggestion 2026 ||
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026 || class 10 bengali suggestion 2026 || এই আর্টিকেলটিতে দশম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে।

মাধ্যমিক 2026 সালের বাংলা পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগ: মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন
* গল্প: ‘জ্ঞানচক্ষু’, ‘বহুরূপী’, ‘পথের দাবী’ থেকে বড় প্রশ্ন (মান ৫) ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (মান ৩) ভালো করে অভ্যাস করো। বিশেষত, গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র, নামকরণের সার্থকতা, এবং লেখকের জীবনদৃষ্টি সম্পর্কিত প্রশ্নগুলি।
* কবিতা: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’, ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘অভিষেক’, ‘আহ্বান’, ‘সিন্ধুতীরে’—এই কবিতাগুলির ভাববস্তু, বিষয়বস্তু ও রূপকধর্মী প্রশ্নের ওপর জোর দাও। (মান ৫/৪ ও ৩)।
* প্রবন্ধ: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ থেকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ও রচনার সার্থকতা।
* সহায়ক পাঠ (কোনি): কোনির চরিত্র, লীলাবতী, ক্ষিতীশ এবং বারুণীর গঙ্গায় ডুব – এই অংশগুলো থেকে ৫ নম্বরের প্রশ্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
* ব্যাকরণ: কারক ও অকারক সম্পর্ক, সমাস, বাক্য পরিবর্তন, বাচ্য পরিবর্তন ও বাংলা শব্দভান্ডার (মান ১/২) ভালো করে অনুশীলন করো।
* নির্মিতি (রচনা): বিজ্ঞান ও পরিবেশ, আধুনিক জীবনে মেলা/উৎসবের ভূমিকা, ছাত্রজীবন, ভ্রমণ এবং আত্মকথামূলক রচনাগুলির ওপর বিশেষ নজর দাও।
* প্রতিবেদন ও সংলাপ: পরিবেশ বা সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন এবং সমাজ সচেতনতা বা শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সংলাপ তৈরি অভ্যাস করো।
এই প্রশ্নগুলি সিলেবাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করে, তবে পুরো পাঠ্যবই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়া দরকার।
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026: বাংলা বিষয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর সহ আলোচনা করা হলো।
১. 🧠 জ্ঞানচক্ষু:মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন
তপনের নতুন মেশোমশাইকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল—তপনের এমন উপলব্ধির কারণ কী? (মান ৫)
জ্ঞানচক্ষু খুলে যাওয়ার কারণ:
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের নতুন মেশোমশাইকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলি হলো:
* ভিন্ন ধারণা ভেঙে যাওয়া: তপনের ধারণা ছিল, যারা লেখক, তারা হয় সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা, কোনো অলৌকিক বা অন্য গ্রহের বাসিন্দা। লেখক বলতে সে শুধু বড়ো বড়ো নামকরা সাহিত্যিকদের বুঝতো।
* বাস্তব উপলব্ধি: মেশোমশাইকে দেখে সে বুঝলো, লেখকরাও আসলে সাধারণ মানুষ, যারা তার বাবার বা ছোটো মামার মতোই স্বাভাবিক। মেশোমশাইকে দেখা গেল আর পাঁচটা মানুষের মতোই দাড়ি কামাতে, সিগারেট খেতে, হাসতে-ঠাট্টা করতে।
* সত্য আবিষ্কার: এই প্রথম তপন বুঝতে পারলো যে, লেখকরাও তার হাতের কাছেই থাকে, তারা আকাশ থেকে পড়া জীব নয়। তপন নিজের জীবনে এমন একজন লেখককে এত কাছ থেকে দেখল, যিনি তার বাড়ির একজন সদস্য।
* আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: মেশোমশাই একজন লেখক জেনেও যখন তার লেখা গল্পটি পড়েন, তখন তপনের মনে হয় যে, সেও একজন লেখক হতে পারে। মেশোমশাইয়ের উপস্থিতি তপনের মনের সেই অন্ধ বিশ্বাসকে ভেঙে দেয় এবং তার মনে নতুন এক আত্মবিশ্বাস ও চেতনার জন্ম দেয়।
তপনের এই উপলব্ধিই তার ‘জ্ঞানচক্ষু’ খুলে যাওয়ার মূল কারণ।
২. 🎭 বহুরূপী:মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন
হরিদার বহুরূপী সেজে রোজগার করার কারণ এবং তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য লেখো। (মান ৫)
হরিদার বহুরূপী সেজে রোজগার করার কারণ
হরিদার বহুরূপী সেজে রোজগার করার প্রধান কারণ হলো তার দারিদ্র্য এবং তার শিল্পপ্রীতি।
* দারিদ্র্য: হরিদাকে অত্যন্ত গরিব জীবনযাপন করতে হতো। তার ঘরে নিত্য অভাব লেগেই থাকতো এবং তার নির্দিষ্ট কোনো বাঁধা চাকরি ছিল না। তাই দিনের খোরাক জোগাড় করতে তাকে বিভিন্ন বেশ ধরে রাস্তায় বের হতে হতো।
* শিল্পের প্রতি টান: রোজগারের প্রয়োজন থাকলেও, হরিদা শুধু পয়সার জন্য বহুরূপী সাজতো না। তার এই কাজে এক ধরনের আনন্দ ছিল। সে একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে এবং সাধারণ মানুষের চোখে বিস্ময় ফুটিয়ে তুলতে ভালোবাসতো। তার কাছে বহুরূপী সেজে মানুষকে চমকে দেওয়াটা ছিল একপ্রকার শিল্পসাধনা।
হরিদার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য: মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন
হরিদার চরিত্রের কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
* দরিদ্র কিন্তু আত্মমর্যাদাশীল: হরিদা গরিব হলেও তার আত্মমর্যাদাবোধ ছিল অত্যন্ত বেশি। বিরাগী সেজে সে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামী গ্রহণ করেনি, কারণ শিল্পীর কাছ থেকে মূল্য নিতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে নয়।
* উচ্ছৃঙ্খল ও খেয়ালি: হরিদা বাঁধা ধরা নিয়মে চলতে পছন্দ করত না। সে যখন খুশি বহুরূপী সাজতো, আবার যখন খুশি বাড়িতে বসে থাকতো। তার এই স্বেচ্ছাবিহারী জীবনযাপন তাকে সাধারণ জীবন থেকে আলাদা করে তুলেছিল।
* সহানুভূতিশীল ও সহৃদয়: সে গরিব মানুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। তার সাজে সে কখনও কখনও সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে কিছু কঠিন সত্য তুলে ধরত।
৩. 🚢 পথের দাবী: “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে”—কার সম্পর্কে বলা হয়েছে? তার শখের পরিচয় দাও। (মান ৫)
কার সম্পর্কে বলা হয়েছে
উদ্ধৃত কথাটি পথের দাবী উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
তার শখের পরিচয়
পুলিশের চোখে ধুলো দিতে ছদ্মবেশে থাকা বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের যে ‘শখ’টির কথা এখানে বলা হয়েছে, তার পরিচয় নিচে দেওয়া হলো:
* পরিচ্ছদে আভিজাত্য: সব্যসাচীর স্বাস্থ্য ভেঙে গেলেও, তার পরনে ছিল দামী বিলিতি শৌখিন পোশাক। গায়ে জাপানি সিল্কের শার্ট, পায়ে নমের শৌখিন নাগরা জুতো ছিল।
* দামি জিনিসপত্রের ব্যবহার: তার হাতে ছিল রোল্ড-গোল্ডের চেন লাগানো একটি ঘড়ি। সর্বোপরি, তার হাতে একটি বিশাল টর্চ ছিল, যার দামও ছিল অনেক বেশি।
* বিলাসিতা ও সাজসজ্জা: এই সমস্ত জিনিসপত্র ব্যবহার করে সব্যসাচী যেন তার জীবনের বিলাসিতাকে প্রকাশ করছিল, যা একজন পুলিশের চোখে সন্দেহজনক ঠেকতে পারে। আসলে এই শখের আড়ালে তার বিপ্লবী সত্তা লুকিয়ে ছিল।
পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই হোক বা স্বভাবজাত আভিজাত্যের কারণেই হোক, সব্যসাচীর এই দামি পোশাক ও জিনিসপত্র ব্যবহারই তার ‘শখ’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026: কবিতা গুলির কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হলো
১. 🎶 অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান: কবিতার মূল বক্তব্য কী? ‘অস্ত্র’ কীভাবে ‘গানে’ পরিণত হয়েছে? (মান ৫)
কবিতার মূল বক্তব্য
‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবি জয় গোস্বামীর লেখা একটি প্রতিবাদী কবিতা। এর মূল বক্তব্য হলো:
* শান্তির বার্তা: এই কবিতার প্রধান সুর হলো যুদ্ধ ও হানাহানির বিরুদ্ধে শান্তির বার্তা প্রচার করা। কবি মনে করেন, অস্ত্র বা হিংসার দ্বারা জগতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
* শিল্পের শক্তি: কবি বিশ্বাস করেন, ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের চেয়েও মানবতা ও সৃজনশীলতার প্রতীক গান বা শিল্প অনেক বেশি শক্তিশালী। গান হলো মানুষের হৃদয়ের ঐক্য, প্রেম ও ভালোবাসার প্রতীক।
* প্রতিবাদ: কবি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে, তিনি কোনো অবস্থাতেই অস্ত্র হাতে তুলে নেবেন না। তাঁর প্রতিবাদের ভাষা হবে তাঁর কবিতা বা গান। হিংসা নয়, প্রেম ও সৌন্দর্য দিয়েই পৃথিবীকে জয় করতে হবে।
‘অস্ত্র’ কীভাবে ‘গানে’ পরিণত হয়েছে
কবিতায় ‘অস্ত্র’ থেকে ‘গানে’ উত্তরণের ভাবনাটি রূপকের মাধ্যমে ব্যক্ত হয়েছে:
* অস্ত্রের হাতবদল: কবি অস্ত্রকে হাতে না তুলে নিয়ে, সেটিকে হাতের উল্টো দিকে রাখতে বলেছেন। অর্থাৎ, অস্ত্রকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে বা তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বলেছেন।
* সংকল্পের পরিবর্তন: কবি অস্ত্রকে ‘কাব্য-পংক্তি’ বা ‘চতুর্দিকে হাত ছুঁড়ে ছুঁড়ে’ দেখার কথা বলেছেন। এই ‘হাত ছুঁড়ে দেখা’ মানেই অস্ত্রকে বাদ দিয়ে মানবতাকে আঁকড়ে ধরা।
* প্রতিবাদের ভাষা: কবি তাঁর গায়ের চামড়া, কবিতার পাতা, এবং বুককে গান বানিয়ে তুলেছেন। অর্থাৎ, তাঁর অস্তিত্বের প্রতিটি অংশই এখন হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের ভাষা। যখন কবি বলেন, “আমার মাথায় কত আর কিভাবে সে গুনবে”, তখন এই ‘অস্ত্র’ যেন গান বা সুরের ধারায় মিশে গিয়ে তার নিজস্বতা হারায়।
* সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ: কবি বোঝাতে চেয়েছেন, যখন কোনো মানুষ হিংসা ছেড়ে দিয়ে গান বা শিল্পচর্চায় আত্মনিয়োগ করে, তখন অস্ত্রের ভয় বা ক্ষমতা তার কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এভাবে ধ্বংসের প্রতীক অস্ত্র পরিণত হয় সৃষ্টির প্রতীক গানে।
২. 💥 প্রলয়োল্লাস:
কবিতা অবলম্বনে ‘প্রলয়’ এবং ‘সৃষ্টি’-র ধারণাটি ব্যাখ্যা করো। (মান ৫)
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘প্রলয়’ এবং ‘সৃষ্টি’-এর ধারণা দুটি পরস্পর সম্পর্কিত:
প্রলয়ের ধারণা (ধ্বংস)
কবিতায় ‘প্রলয়’ ধ্বংসের প্রতীক হলেও তা নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। এই প্রলয় হলো:
* পুরাতন ও জীর্ণের বিনাশ: এটি হলো সমাজের সকল অন্ধকার, অন্যায়, অত্যাচার, পরাধীনতা এবং পুরনো দিনের জীর্ণ রীতিনীতির ধ্বংস। কবি প্রলয়কে কালবৈশাখীর মতো হঠাৎ আসা এক ধ্বংসকারী শক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন, যা সমাজে চেপে বসা সমস্ত অন্যায় ও শোষণকে গুঁড়িয়ে দেবে।
* ভয়ঙ্করতার বেশ: প্রলয়ের বেশভূষা ভয়ঙ্কর – “বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ঙ্কর”। এই ভয়ঙ্করতা অন্যায়কারীদের মনে ভয় জাগায়। কবি এই প্রলয়কে শিব বা নটরাজের ধ্বংসলীলার সাথে তুলনা করেছেন, যিনি জীর্ণ বিশ্বকে ধ্বংস করে নতুনের পথ তৈরি করেন।
সৃষ্টির ধারণা (নবীন)
প্রলয়ের পর নতুন পৃথিবী গড়ার যে সম্ভাবনা, তাকেই কবি ‘সৃষ্টি’ বা ‘নবীন’ রূপে বর্ণনা করেছেন:
* নতুন যুগের সূচনা: প্রলয়ের মেঘের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে নবীন বা নতুন জীবন। “ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর” – এই নতুনেরই ইঙ্গিত। এই ধ্বংসের শেষে একটি সুন্দর, স্বাধীন ও মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে।
* মুক্তি ও স্বাধীনতা: পরাধীন ভারতে এই প্রলয় ছিল স্বাধীনতার আগমনী বার্তা। প্রলয়ের পর জন্ম নেবে সেই মুক্ত ভারত, যেখানে থাকবে না কোনো শোষণ বা পরাধীনতা।
* আশার আলো: এই সৃষ্টি বা নবীনকে কবি শিশুর মতো সুন্দর ও শুভ রূপে কল্পনা করেছেন। তাই প্রলয়ের প্রচণ্ডতার মধ্যেও কবি ও মুক্তিকামী মানুষ উল্লাস করেছেন।
সম্পর্ক: এই কবিতায় প্রলয় এবং সৃষ্টি পরস্পরকে পূর্ণতা দেয়। জীর্ণ ও পরাধীনতাকে ধ্বংস (প্রলয়) না করলে নতুন জীবন (সৃষ্টি) কখনোই আসতে পারে না। প্রলয় হলো সৃষ্টির পূর্বশর্ত।
৩. 😠 অভিষেক:
‘অধিক রোষে’ বলার কারণ কী? রামচন্দ্রের প্রতি মেঘনাদের ক্রোধের কারণ ব্যাখ্যা করো। (মান ৫)
‘অধিক রোষে’ বলার কারণ
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ কবিতায়, মেঘনাদ যখন জানতে পারলেন যে তার প্রিয় ভাই বীরবাহু রামচন্দ্রের হাতে নিহত হয়েছে, তখন সে:
* ক্রোধে উন্মত্ত: মেঘনাদের এই ক্রোধ ছিল অস্বাভাবিক। একাধারে ভাইয়ের মৃত্যু এবং অপরদিকে রাবণের শোচনীয় পরাজয়ের আশঙ্কা—এই দুই কারণে তার রাগ সীমা অতিক্রম করেছিল।
* আবেগ সংযমের অভাব: স্বাভাবিক শোক বা ক্রোধের চেয়ে এই রাগ ছিল অনেক বেশি তীব্র, কারণ মেঘনাদ ছিল প্রচণ্ড আত্মমর্যাদাশীল এবং বীরত্বে বিশ্বাসী। তাই শোকার্ত পিতার সামনে সে তার স্বাভাবিক আবেগ বা শোক সংযত করতে পারেনি।
তাই কবি ‘অধিক রোষে’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন মেঘনাদের তীব্র আবেগ ও ক্রোধের গভীরতা বোঝানোর জন্য।
রামচন্দ্রের প্রতি মেঘনাদের ক্রোধের কারণ
রামচন্দ্রের প্রতি মেঘনাদের ক্রোধের প্রধান কারণগুলি ছিল:
* বীরবাহুর মৃত্যু: মেঘনাদ যখন প্রমোদ উদ্যান ত্যাগ করে লঙ্কার প্রাসাদে প্রবেশ করে, তখন সে জানতে পারে যে রামচন্দ্রের সাথে যুদ্ধে তার প্রিয় ভাই বীরবাহু নিহত হয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই মেঘনাদের মনে তীব্র ক্রোধের জন্ম দেয়।
* কপট যুদ্ধ: মেঘনাদের মতে, রামচন্দ্রের যুদ্ধ অস্ত্রের নিয়মে হয়নি। সে রামকে বারবার ধিক্কার দিয়েছে। তার মতে, রামচন্দ্র কপটতা এবং ছলনার আশ্রয় নিয়েছিল, যা বীরের কাছে অত্যন্ত নিন্দনীয়।
* নিজের বীরত্বে আঘাত: পূর্বে মেঘনাদ রামকে যুদ্ধে হারিয়েছিল এবং তাকে হত্যা করেছে বলে মনে করেছিল। তাই রামের পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিতি মেঘনাদের বীরত্ব ও প্রতিজ্ঞাকে আঘাত করে।
* কুলগৌরব নষ্ট: মেঘনাদ চেয়েছিল নিজে যুদ্ধ করে লঙ্কার সম্মান রক্ষা করতে। কিন্তু তার ভাইয়ের মৃত্যু এবং রামের প্রতাপ লঙ্কার কুলগৌরব নষ্ট করছিল। তাই সেই ক্ষোভ রামের প্রতি ক্রোধ রূপে প্রকাশ পায়।
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026: প্রবন্ধ থেকে প্রশ্ন-উত্তর আলোচনা করা হলো
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম:
১. 🖋️ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম: লেখক কীভাবে প্রাচীন এবং আধুনিক যুগের লেখার উপকরণের কথা তুলে ধরেছেন? কলমকে ‘তিষ্ঠির পদবিধারক’ বলার কারণ কী? (মান ৫)
প্রাচীন ও আধুনিক যুগের লেখার উপকরণের কথা
প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত লেখার উপকরণের পরিবর্তনের ধারাটি তুলে ধরেছেন:
প্রাচীন যুগের লেখার উপকরণ:
প্রাচীনকালে মানুষ লেখার জন্য প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করত।
* কলম: প্রাচীনতম কলম ছিল সরু বাঁশের কঞ্চি। পরে পালকের কলম (খাগের কলম) বা পাখির ডানার হাড়ের কলম ব্যবহার শুরু হয়। প্রাবন্ধিক ‘কুইল’ (পাখির পালক) এবং ফাউন্টেন পেনের (ঝরনা কলম) প্রাথমিক রূপের কথাও উল্লেখ করেছেন।
* কালি: কালি ছিল মূলত ঘরে তৈরি, যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক জিনিস থেকে প্রস্তুত করা হতো—যেমন ত্রিফলার ছাল, কাঠ কয়লা বা ভুষা কালি (কালি ও তেলের মিশ্রণ)। এই কালি তৈরির বিভিন্ন উপকরণের কথাও লেখক বর্ণনা করেছেন।
* লিখনের মাধ্যম: লেখার মাধ্যম ছিল তালপাতা, ভূর্জপত্র, তুলোট কাগজ এবং পরে সাধারণ কাগজ।
আধুনিক যুগের লেখার উপকরণ:
আধুনিক যুগে লেখার উপকরণের ক্ষেত্রে আসে আমূল পরিবর্তন এবং প্রযুক্তিগত উন্নতি।
* কলম: হাতে তৈরি কলমের স্থান নেয় ফাউন্টেন পেন (ঝরনা কলম)। পরে আসে বলপয়েন্ট পেন (বলপেন), যা কালি ভরা এবং রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলা দূর করে। বর্তমানে আধুনিকতার শিখরে কম্পিউটার, কি-বোর্ড, এবং পেন ড্রাইভ লেখার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
* কালি: হাতে তৈরি কালির বদলে বাজারে আসে শুকনো বা তরল রাসায়নিক কালি (যেমন, ‘ডাই’-এর গুঁড়ো)। ফাউন্টেন পেনের জন্য আসে কালির বোতল এবং বলপেনের জন্য রিফিল।
* পরিবর্তন: লেখক দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের ফলে একটি আস্ত দপ্তর এখন একটি ছোট্ট যন্ত্রের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। কালি কলমের সেই ঐতিহ্যময় ভূমিকা আজ প্রায় বিলুপ্ত।
কলমকে ‘তিষ্ঠির পদবিধারক’ বলার কারণ
প্রাচীন সংস্কৃত শ্লোক থেকে জানা যায়, ব্রহ্মা সৃষ্টিকর্তা এবং বিষ্ণু পালনকর্তা। আর ‘তিষ্ঠি’ শব্দের অর্থ হলো স্থিতি বা রক্ষা করা। অর্থাৎ, সৃষ্টিকে বজায় রাখা এবং রক্ষা করার দায়িত্ব তাঁর।
প্রাবন্ধিক কলমকে ‘তিষ্ঠির পদবিধারক’ বলেছেন কারণ:
* জ্ঞানের স্থায়িত্ব: লেখার মাধ্যমেই মানুষের জ্ঞান, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং সভ্যতার সমস্ত অর্জন স্থায়ী রূপ পায় এবং এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়।
* সভ্যতার ধারক: মানবসভ্যতাকে রক্ষা করা (তিষ্ঠি দেওয়া) বা ধরে রাখার কাজটি কলমই করে এসেছে। কলমের সাহায্যেই আইন, চুক্তি, ধর্মগ্রন্থ, সাহিত্য এবং বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।
* ঐতিহ্যের প্রতীক: যদিও বর্তমানে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে, তবুও কলমের মাধ্যমেই সেই প্রাচীন লেখার ঐতিহ্য টিকে আছে এবং ভবিষ্যতেও তা জ্ঞান সংরক্ষণের কাজটি করবে।
এই কারণে কলমকে কেবল লেখার উপকরণ না বলে, মানবসভ্যতাকে রক্ষা করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদবি বহনকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026: সায়কপাঠ থেকে প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হলো
সহায়ক পাঠ (কোনি)
১. 💪 ‘খেটে খাওয়া মানুষ’ কোনির জীবনসংগ্রামের পরিচয় দাও। (মান ৫)
‘কোনি’ উপন্যাসে কোনি শুধুমাত্র একজন সাঁতারু নয়, সে হলো কলকাতার বস্তি অঞ্চলে বাস করা এক খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি। তার জীবনসংগ্রামের পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো:
* আর্থিক দারিদ্র্য: কোনির জীবন ছিল চরম দারিদ্র্যের শিকার। তার বাবা মারা গেছেন, আর বড়ো ভাই কমলের সামান্য রোজগারে তাদের আটজনের সংসার চলত। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাড় করা তাদের কাছে ছিল প্রতিদিনের কঠিন লড়াই।
* শারীরিক শ্রম: কোনিকে তার দারিদ্র্যের কারণে ছোটো থেকেই কঠোর শারীরিক শ্রম করতে হয়েছে। সে অন্যের বাড়িতে কাজ করত (কাপড় কাচা), মুড়ি বিক্রি করত, এবং খাবার জল বয়ে আনত। সাঁতার শেখার আগে এবং শেখার সময়ও তাকে এই কাজগুলি চালিয়ে যেতে হয়েছিল।
* মানসিক বঞ্চনা ও লাঞ্ছনা: বস্তির নোংরা পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে সে সমাজের চোখে অবহেলা এবং বঞ্চনা পেয়েছে। এমনকি তার সাঁতারের ক্লাব ‘অ্যাপোলো’-তে এসেও ধনী পরিবারের মেয়েদের কাছে তাকে কটূক্তি ও উপহাসের শিকার হতে হয়েছে।
* আত্মমর্যাদার লড়াই: এত প্রতিকূলতার মধ্যেও কোনি নিজের আত্মমর্যাদা হারায়নি। সে কখনো করুণা বা ভিক্ষা চায়নি। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই সে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার সংকল্প নিয়েছিল। ক্ষিতীশের ‘ফাইট, কোনি, ফাইট’ মন্ত্রটি তাকে এই জীবনসংগ্রামে টিকে থাকতে শক্তি জুগিয়েছিল।
সংক্ষেপে, কোনি ছিল জীবনের ময়দানে এক লড়াকু সৈনিক, যে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে শুধুমাত্র টিকে থাকেনি, বরং প্রতিকূলতাকে জয় করে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিল।
২. 🥊 “দারিদ্র্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির লড়াই”—আলোচনা করো। (মান ৫)
‘কোনি’ উপন্যাসের মূল উপজীব্য হলো এই কিশোরীর দারিদ্র্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম। এই লড়াইকে কয়েকটি ধাপে বিশ্লেষণ করা যায়:
ক. দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই:
* অভাবের তাড়না: কোনি ছিল কলকাতার এক বস্তিবাসী মেয়ে। চরম অর্থের অভাব তার জীবনকে সবসময় তাড়া করেছে। ভালো খাবার, ভালো পোশাক বা সাঁতারের উন্নত সরঞ্জামের কিছুই তার ছিল না।
* ক্ষুধার জ্বালা: দরিদ্র কোনিকে প্রায়শই ক্ষুধা নিয়ে লড়াই করতে হয়েছে। খিদে মেটানোর জন্য তাকে রোজ মুড়ি নিয়ে বের হতে হতো। ক্ষিতীশ যখন তাকে সাঁতার শেখাতে শুরু করেন, তখন পুষ্টির অভাবে সে প্রায়ই দুর্বল হয়ে পড়ত।
* অতিরিক্ত পরিশ্রম: সংসারের অভাব মেটাতে সে কাপড় কাচা এবং মুড়ি বিক্রির মতো কাজ করে নিজের পড়াশোনা ও সাঁতারের জন্য সামান্য অর্থ জোগাড় করত, যা ছিল তার দৈনন্দিন সংগ্রাম।
খ. বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই:
* সামাজিক বঞ্চনা: সমাজের ধনী ও তথাকথিত উচ্চবিত্তদের কাছে কোনি ছিল নগণ্য এবং অবজ্ঞার পাত্রী। তার বস্তির পরিবেশের কারণে সে সামাজিক লাঞ্ছনার শিকার হতো।
* ক্লাবের বঞ্চনা: সাঁতার শেখার জন্য ‘অ্যাপোলো’ ক্লাবে এলেও কোনিকে বঞ্চনার শিকার হতে হয়। জুপিটার ক্লাবের সদস্যেরা তাকে “খেঁদি” বলে ডেকে উপহাস করত। প্রশিক্ষক হরিচরণ এবং অন্য প্রতিযোগীরাও তাকে সন্দেহের চোখে দেখত এবং তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত।
* কর্তৃপক্ষের অবিচার: যখন কোনি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি হয়, তখন ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে অকারণে বাদ দিতে চেয়েছিল। এই বঞ্চনা তার লড়াইকে আরও কঠিন করে তোলে।
এই সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করতে কোনিকে কেবল শারীরিক শক্তি নয়, প্রয়োজন হয়েছিল অদম্য মানসিক শক্তির। ক্ষিতীশের প্রশিক্ষণে এবং তার নিজের ‘ফাইট, কোনি, ফাইট’ মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে সে এই দ্বৈত সংগ্রামে জয়ী হয় এবং চ্যাম্পিয়ন হয়। কোনি প্রমাণ করে যে, প্রতিভা ও ইচ্ছা থাকলে দারিদ্র্য কোনো বাধা হতে পারে না।
৩. 💡 ক্ষিদদা (ক্ষিতীশ) কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা জুগিয়েছে? (মান ৫)
উপন্যাসটিতে ক্ষিতীশ সিংহ বা ক্ষিদদা কোনির জীবনে কেবল একজন প্রশিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন তার পথপ্রদর্শক, রক্ষাকর্তা ও প্রেরণা উৎস। নিচে তাঁর ভূমিকার মাধ্যমে কোনির জীবনে প্রেরণা জোগানোর দিকগুলি আলোচনা করা হলো:
* আবিষ্কার ও বিশ্বাস: ক্ষিতীশই প্রথম কোনির মধ্যে অদম্য প্রতিভা ও জেদ দেখতে পান। সকলে যখন তাকে অবহেলা করে, তখন ক্ষিতীশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে কোনি একজন সেরা সাঁতারু হতে পারে।
* প্রশিক্ষণ ও অভ্যাস: ক্ষিতীশ কোনিকে বস্তি থেকে নিয়ে এসে নিয়মিত ও কঠোর সাঁতার প্রশিক্ষণ দেন। তিনি তার দুর্বলতাগুলিকে শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য বিশেষ ধরনের অভ্যাস করান এবং তাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যান।
* মানসিক শক্তি প্রদান (মোটিভেশন): ক্ষিতীশই কোনিকে তার জীবনের মূলমন্ত্র “ফাইট, কোনি, ফাইট” দেন। যখনই কোনি হতাশ হয়েছে বা পিছিয়ে যেতে চেয়েছে, তখনই ক্ষিতীশ তাকে মানসিক বল জুগিয়েছেন এবং লড়তে শিখিয়েছেন। এই মন্ত্রই কোনির জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।
* দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা: প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি শুধু সাঁতার শেখাননি, কোনির দারিদ্র্য দূরীকরণেও সাহায্য করেছেন। তিনি তাকে নিজের বাড়িতে এনে খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ সাহায্য করেছেন।
* প্রতিনিধিত্ব ও অভিভাবকত্ব: ক্লাব কর্তৃপক্ষ যখন কোনিকে প্রতিযোগিতায় বাদ দিতে চেয়েছিল, তখন ক্ষিতীশ একাকী লড়ে তার স্থান নিশ্চিত করেন। তিনি একজন অভিভাবকের মতো শেষ পর্যন্ত কোনির পাশে থেকে তার স্বার্থরক্ষা করেছেন।
ক্ষিতীশ সিংহের এই অসামান্য প্রেরণা ও সাহায্য ছাড়া কোনোদিন কোনির পক্ষে বস্তির দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব ছিল না।
মাধ্যমিক বাংলা রচনা সাজেশন 2026
নির্মিতি (রচনা)
রচনার ক্ষেত্রে ভূমিকা, মূল অংশ (কয়েকটি উপবিভাগে বিভক্ত), এবং উপসংহার বা মন্তব্য থাকা আবশ্যক।
১. 🔬 বিজ্ঞান ও পরিবেশ: দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান ও কুসংস্কার, পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা
ক. দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
১. ভূমিকা: বিজ্ঞানের আলো ও অন্ধকারের কালো
মানুষের জীবনযাত্রাকে আরামদায়ক ও উন্নত করেছে বিজ্ঞান। বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, যোগাযোগ (মোবাইল, ইন্টারনেট) — সবকিছুই বিজ্ঞানের দান। তবে, এই আধুনিক যুগেও সমাজের বড়ো একটি অংশে কুসংস্কারের অন্ধকার রয়ে গেছে।
২. দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান (সুফল)
* চিকিৎসা: কঠিন রোগ নিরাময়, ভ্যাকসিন আবিষ্কার।
* যোগাযোগ: মোবাইল, দ্রুত ইন্টারনেট, কৃত্রিম উপগ্রহ।
* পরিবহন: দ্রুতগামী ট্রেন, উড়োজাহাজ।
* কৃষি: উন্নত সার ও বীজ, যন্ত্রের ব্যবহার (ট্রাক্টর)।
৩. কুসংস্কারের অন্ধকার (কুফল)
* দৈনন্দিন জীবনে এখনও অনেক মানুষ গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব, ডাইনি বা ওঝার মাধ্যমে চিকিৎসা, হাত দেখা, কালো বিড়াল রাস্তা কাটলে অমঙ্গল – এমন সব অন্ধবিশ্বাসে আচ্ছন্ন।
* বিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মানুষ এই কুসংস্কারগুলিকে সহজে ত্যাগ করতে পারে না।
৪. কুসংস্কার দূরীকরণে বিজ্ঞানের ভূমিকা
* বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদের প্রসার ঘটিয়ে কুসংস্কার দূর করা সম্ভব। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রতিটি ঘটনাকে বিচার করা দরকার।
খ. পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা
১. ভূমিকা: বর্তমান পরিস্থিতি
পৃথিবীজুড়ে উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ আজ এক ভয়াবহ সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে ছাত্রসমাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
২. পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা
* সচেতনতা বৃদ্ধি: ছাত্রছাত্রীরা নিজের পরিবার ও পাড়ায় পরিবেশ দূষণের কারণ ও কুফল নিয়ে আলোচনা করে সচেতনতা বাড়াতে পারে।
* বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণ: নিজেদের বিদ্যালয় ও আশেপাশে বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা এবং বড়ো গাছ রক্ষায় উদ্যোগী হওয়া।
* দূষণ নিয়ন্ত্রণ: প্লাস্টিক বর্জন, জল সংরক্ষণ ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অভ্যাস তৈরি করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্লাস্টিক-মুক্ত করার আন্দোলন শুরু করা।
* পরিচ্ছন্নতা অভিযান: নদী বা এলাকার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়া।
* প্রতিবাদ: পরিবেশবিরোধী কোনো কাজ হলে শান্তিপূর্ণভাবে তার প্রতিবাদ করা।
৩. উপসংহার
বিজ্ঞান মানুষের জীবনে আলো আনলেও, পরিবেশ না বাঁচলে এই আলো অর্থহীন। ছাত্রছাত্রীরাই এই পৃথিবীকে বাঁচাতে পারে।
২. 🏞️ আত্মকথামূলক: একটি নদীর আত্মকথা
১. ভূমিকা: আত্মপরিচয়
আমি বয়ে চলা তিস্তা (বা অন্য কোনো নদীর নাম), এই মাটির প্রাচীনতম সাক্ষী। আমার জন্ম পর্বতের এক নিভৃত কোণে, যেখানে বরফ গলে ঝর্ণা হয়ে নেমে আসে।
২. আমার বয়ে চলা জীবন
* শৈশব: পর্বতের কঠিন পথ পেরিয়ে আমি যখন সমতলে নামি, তখন আমার গতি ছিল তীব্র, জল ছিল স্বচ্ছ।
* যৌবন: সমতলে নেমে আমি বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে জল দিয়েছি। আমার জলে সেচ হয়েছে শস্যক্ষেত্রে, আমার বুকে বয়ে গেছে নৌকা। আমার দু’পাড়ে গড়ে উঠেছে গ্রাম ও জনপদ।
* মাতৃরূপ: যুগ যুগ ধরে আমি মানুষের কাছে মায়ের মতোই। আমার জলে স্নান করেছে মানুষ, আমার জলে মিশেছে তাদের আনন্দ-বেদনা।
৩. বর্তমানের হতাশা ও দুঃখ
* দূষণ: এখন আমার শরীরে দূষণ ও আবর্জনা। শহরের সমস্ত বর্জ্য এবং কারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক এসে মিশেছে আমার জলে।
* শুকিয়ে যাওয়া: অবাধে জল তুলে নেওয়ার কারণে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমি গ্রীষ্মকালে শুকিয়ে যাই।
* মানুষের অবিচার: আমি যাদের জীবন দিয়েছি, তারাই আজ আমাকে গলা টিপে মারছে। আমার বুক চিরে অবৈধভাবে বালু তোলা হয়।
৪. উপসংহার: ভবিষ্যৎ
আমি আজও আশা করি, মানুষ ভুল বুঝতে পারবে। যদি আমাকে বাঁচানো হয়, তবেই মানবসভ্যতা বেঁচে থাকবে। নতুবা, আমার নীরব কান্না একদিন তাদেরও গ্রাস করবে।
৩. 🎡 : আধুনিক জীবনে মেলা বা উৎসবের ভূমিকা
১. ভূমিকা: উৎসবের প্রয়োজনীয়তা
মানুষের জীবন একঘেয়েমি আর প্রতিদিনের রুটিনে বাঁধা। এই একঘেয়েমি কাটাতে এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে উৎসব বা মেলা এক আনন্দময় বিরতি এনে দেয়।
২. আধুনিক জীবনে মেলা ও উৎসবের ভূমিকা
* ঐতিহ্য সংরক্ষণ: মেলা বা উৎসবগুলি হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখে। লোকনৃত্য, লোকসংগীত, বা পুরনো হস্তশিল্পের মাধ্যমে এই ঐতিহ্য বজায় থাকে।
* সামাজিক মিলন: আধুনিক জীবনে মানুষ আজ এককেন্দ্রিক। উৎসবের দিনগুলিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ একসঙ্গে মিলিত হয়, যা সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করে।
* অর্থনৈতিক গুরুত্ব: বিভিন্ন মেলা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পীদের জন্য একটি বড়ো প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।
* মানসিক শান্তি ও বিনোদন: উৎসবের পরিবেশ মানুষের মনে আনন্দ ও উদ্দীপনা তৈরি করে। কাজের চাপ থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ মেলা বা উৎসবে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা খুঁজে পায়।
* শহরের চাপ মুক্তি: মেলা বা উৎসব মানুষকে সাময়িকভাবে ডিজিটাল জীবন এবং শহুরে চাপ থেকে মুক্তি দিয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি বা সহজ জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
৩. উপসংহার
আধুনিক জীবনের চাপ ও যন্ত্রসভ্যতার যুগে মেলা বা উৎসবগুলি মানুষের জীবনের প্রাণবন্ত ধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026 mcq
মাধ্যমিক বাংলা 2026 পরীক্ষার জন্য MCQ
১. 📖 গল্প (জ্ঞানচক্ষু, বহুরূপী, পথের দাবী)
mcq
িষয় | প্রশ্ন | বিকল্প | সঠিক উত্তর |
|—|—|—|—|
| জ্ঞানচক্ষু |
“কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।” – কোন কথাটা শুনে? | ক) ছোটোমাসির বিয়ে পাকা হওয়ার খবর। খ) মেশোমশাই একজন লেখক। গ) তার লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হবে। ঘ) প্রথম দিনই তাকে অফিসে যেতে হবে। |
খ) মেশোমশাই একজন লেখক। |
| বহুরূপী |
বহুরূপী সেজে হরিদা মোট কত টাকা বকশিশ পেয়েছিলেন? | ক) আট আনা। খ) এক টাকা পনেরো আনা। গ) আট টাকা দশ আনা। ঘ) দু’টাকা। |
খ) এক টাকা পনেরো আনা। |
| পথের দাবী |
গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাগরায় গাজার পরিমাণ ছিল— | ক) এক তোলা। খ) দু’তোলা। গ) আট আনা। ঘ) সিকি তোলা। |
ঘ) সিকি তোলা। |
| জ্ঞানচক্ষু |
তপনের লেখা প্রথম গল্পের নাম কী ছিল? | ক) ইস্কুলের গল্প। খ) রাজার গল্প। গ) প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা। ঘ) ছুটি। |
গ) প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা। |
| বহুরূপী |
জগদীশবাবু সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় কত টাকা প্রণামী দিয়েছিলেন? | ক) একশো টাকা। খ) এক হাজার টাকা। গ) এক টাকা। ঘ) একশো এক টাকা। |
ক) একশো টাকা। |
২. 📜 কবিতা (অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান, প্রলয়োল্লাস, অভিষেক)
| বিষয় | প্রশ্ন | বিকল্প | সঠিক উত্তর |
|—|—|—|—|
| প্রলয়োল্লাস | ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর!’—কবি কাদের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন? | ক) স্বাধীনতা সংগ্রামী। খ) নবীন দল। গ) প্রলয়ের দূত। ঘ) বৃদ্ধ মানুষ। |
খ) নবীন দল। |
| অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান | কবি অস্ত্র কোথায় রাখতে বলেছেন? | ক) পায়ে। খ) হাতের উল্টো দিকে। গ) পকেটে। ঘ) মাথায়। |
খ) হাতের উল্টো দিকে।
|
| অভিষেক |
“ধিক্ মোরে!”—কে নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন? | ক) রাবণ। খ) লক্ষ্মণ। গ) মেঘনাদ। ঘ) বীরবাহু। |
গ) মেঘনাদ। |
| অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান | কবি গানকে কিসের মতো পরতে বলেছেন? | ক) ফুলের মতো। খ) শার্টের মতো। গ) বর্মের মতো। ঘ) পাতার মতো। |
গ) বর্মের মতো। |
| প্রলয়োল্লাস | ‘আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশা’—’অনাগত’ বলতে বোঝানো হয়েছে— | ক) যা এসে গেছে। খ) যা আসেনি। গ) যা আসছে না। ঘ) যা চলে গেছে। |
খ) যা আসেনি।
|
৩. ✍️ প্রবন্ধ (হারিয়ে যাওয়া কালি কলম)
| বিষয় | প্রশ্ন | বিকল্প | সঠিক উত্তর |
|—|—|—|—|
| কালি কলম |
লেখকের ছোটোবেলায় জ্যামিতি বাক্সের কত অংশ জুড়ে কলম থাকত? | ক) অর্ধেক। খ) এক-তৃতীয়াংশ। গ) পুরোটা। ঘ) এক-চতুর্থাংশ। |
গ) পুরোটা। |
| কালি কলম | ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা কে? | ক) লুইস ওয়াটারম্যান। খ) শ্লেসINGER। গ) টমাস এডিসন। ঘ) স্টিফেন। |
ক) লুইস ওয়াটারম্যান। |
| কালি কলম | ‘কুইল’ হল— | ক) দোয়াত। খ) খাগ। গ) পালকের কলম। ঘ) তুলো। |
গ) পালকের কলম। |
৪. 💡 ব্যাকরণ (কারক, সমাস)
| বিষয় | প্রশ্ন | বিকল্প | সঠিক উত্তর |
|—|—|—|—|
| কারক | “পাগলে কী না বলে।” — ‘পাগলে’ পদটি কোন কারকের উদাহরণ? | ক) কর্তৃকারক। খ) করণ কারক। গ) অপাদান কারক। ঘ) কর্মকারক। |
ক) কর্তৃকারক। |
| সমাস | ‘উপকূল’ পদটির ব্যাসবাক্য কী হবে? | ক) কূলের সমীপ । খ) কূল ও উপ। গ) কূলের অভাব। ঘ) কূলকে। |
ক) কূলের সমীপ । |
| কারক | “বাবা বাজার থেকে ফল আনলেন।” — ‘বাজার থেকে’ পদটি কোন কারক? | ক) করণ কারক। খ) অপাদান কারক। গ) অধিকরণ কারক। ঘ) নিমিত্ত কারক। |
খ) অপাদান কারক। |
| সমাস | ‘প্রতিদিন’ এটি কোন সমাসের উদাহরণ? | ক) তৎপুরুষ সমাস। খ) নিত্য সমাস। গ) দ্বন্দ্ব সমাস। ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস। |
ঘ) অব্যয়ীভাব সমাস। |
| সমাস | যে সমাসের পূর্বপদ ও পরপদ উভয়ের অর্থই প্রাধান্য পায়, তা হলো— | ক) কর্মধারয়। খ) দ্বিগু। গ) দ্বন্দ্ব। ঘ) বহুব্রীহি। |
গ) দ্বন্দ্ব। |
পরামর্শ: MCQ-এর জন্য প্রতিটি গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধের লেখক-লেখিকার নাম, উৎস গ্রন্থ এবং প্রতিটি লাইনের ভিতরের অর্থ খুব মন দিয়ে পড়ো।
