নিরপেক্ষ ন্যায়ের বিভিন্ন প্রকার দোষ-দর্শন
নিরপেক্ষ ন্যায়ের বিভিন্ন প্রকার দোষ-দর্শন
নিরপেক্ষ ন্যায়ের চারিপদ বা চতুষ্পদঘটিত দোষ ঘটে
যুক্তিতে কখন চারিপদ বা চতুষ্পদঘটিত দোষ ঘটে? নিম্নলিখিত যুক্তিগুলির বৈধতা বিচার কর।
০ উত্তর : বৈধ ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে কোনাে ন্যায় অনুমানে তিনটির বেশি পদ থাকবে না। যদি কোনাে ন্যায়ের তিনটি পদের অতিরিক্ত চারটি পদ থাকে, তবে সেই অনুমান বা যুক্তিতে চারিপদঘটিত দোষ হয়।
টেবিলটি মাটি স্পর্শ করে আছে ; আমার হাত টেবিল স্পর্শ করেছে ; অতএব আমার হাত মাটি স্পর্শ করেছে।
যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত রূপ ঃ
A – টেবিল হয় যা মাটি স্পর্শ করে আছে।
A – আমার হাত হয় যা টেবিল স্পর্শ করে আছে।
A – আমার হাত হয় যা মাটি স্পর্শ করে আছে।
বিচার:যুক্তিটি অবৈধ ও চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। এই চারটি পদ হল ঃ (১) টেবিল। (২) যা মাটি স্পর্শ করে আছে। (৩) যা টেবিল স্পর্শ করে আছে। (৪) আমার হাত।
টেবিল’ ও যা টেবিল স্পর্শ করে আছে—এই দুটি এক পদ নয়।
কলকাতা হয় ভারতের অন্তর্গত, দিল্লি নয় কলকাতার অন্তর্গত, অতএব দিল্লি নয় ভারতের অন্তর্গত।
যৌক্তিক আকার ;
A – কলকাতা হয় ভারতের অন্তর্গত। –
E – দিল্লি নয় কলকাতার অন্তর্গত।
E – দিল্লি নয় ভারতের অন্তর্গত।
বিচার : যুক্তিটি চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। এই চারটি পদ হল ? (১) কলকাতা। (2) কলকাতার অন্তর্গত। (৩) ভারতের অন্তর্গত। (৪) দিল্লি। ।
‘কলকাতা’ ও কলকাতার অন্তর্গত’—এক পদ নয়।
চন্দ্র পৃথিবীর চারিদিকে ঘােরে, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘােরে, অতএব চন্দ্র সূর্যের চারিদিকে ঘােরে।
যৌক্তিক আকার :
A – পৃথিবী হয় যা সূর্যের চারিদিকে ঘােরে।
A – চন্দ্র হয় যা পৃথিবীর চারিদিকে ঘােরে।
A – চন্দ্র হয় যা সূর্যের চারিদিকে ঘােরে।
বিচার : যুক্তিটি অবৈধ। এটি চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটিতে চারটি পদ আছে। যথা : (১) পৃথিবী। (২) পৃথিবীর চারিদিকে ঘােরে। (৩) চন্দ্র। (৪) যা সূর্যের চারিদিকে ঘােরে। পৃথিবী ও যা পৃথিবীর চারিদিকে ঘােরে এই দুটি এক পদ নয়।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের যুক্তিতে অবৈধ সাধ্য দোষ
যুক্তিতে অবৈধ সাধ্যদোষ কখন ঘটে? নিম্নলিখিত যুক্তিগুলির বৈধতা বিচার কর।
• যৌক্তিক আকার :
উত্তর : সাধ্য আশ্রয়বাক্যে সাধ্য পদ ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হলে এই দোষ হয়।
◆ প্লেটো রবীন্দ্রনাথ নন। রবীন্দ্রনাথ হন কবি। প্লেটো নন কবি।
• যৌক্তিক আকার :
– A – রবীন্দ্রনাথ হন কবি।
E – প্লেটো নন রবীন্দ্রনাথ।
E – প্লেটো নন কবি।
বিচার : যুক্তিটি অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট। কারণ সাধ্য পদ কবি’ সাধ্য আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে।
●দেবব্রত একাজের উপযুক্ত নয়, কেননা সে স্নাতক নয়।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল স্নাতক হয় একাজের উপযুক্ত ব্যক্তি।
E – দেবব্রত নয় স্নাতক।
E – দেবব্রত নয় একাজের উপযুক্ত ব্যক্তি।
বিচার : যুক্তিটি অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট। কারণ সাধ্য পদ সাধ্য আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে।
● তিনি সুখী হতে পারবেন না, কেননা তিনি সৎ নন।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল সৎ ব্যক্তি হয় সুখী ব্যক্তি।
E – তিনি নন সৎ ব্যক্তি।
E – তিনি নন সুখী ব্যক্তি।
বিচার; যুক্তিটি অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট। সাধ্য পদ সুখী ব্যক্তি’ অশয়বাক্যে ব্যাপ্য হয়নি, কিন্তু সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে। এটি বৈধ ন্যায়ের নিয়ম বিরুদ্ধ।
● সকল কবি মরণশীল এবং পাখিরা কবি নয়। অতএব, পাখিরা মরণশীল নয়।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল কবি হয় মরণশীল জীব।
E – কোনাে পাখি নয় কবি। –
E – কোনাে পাখি নয় মরণশীল জীব।
বিচারঃ যুক্তিটি অবৈধ, এটি অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট। ন্যায়ের নিয়মানুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয়, সেই পদকে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য করা যাবে না। যুক্তিটি এই নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
সিদ্ধান্তে সাধ্য পদ মরণশীল’ ব্যাপ্য, কিন্তু ওই পদ সাধ্য আশ্রয়বাক্যে অব্যাপ্য আছে।
●ধার্মিক ব্যতীত আর কেহ সুখী নয় এবং তিনি সুখী নন।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল সুখী ব্যক্তি হয় ধার্মিক ব্যক্তি।
E – তিনি নন সুখী ব্যক্তি।
… E – তিনি নন ধার্মিক ব্যক্তি।
বিচার ও যুক্তিটি অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের যুক্তিতে অবৈধ পক্ষদোষ
যুক্তিতে অবৈধ পক্ষদোষ কখন ঘটে? নিম্নলিখিত যুক্তিগুলির বৈধতা বিচার। কর।
০ উত্তর : পক্ষ পদ পক্ষ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হলে এই দোষ হয়।
• সব মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব। সব বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব হয় প্রগতিবাদী, সুতরাং সব। প্রগতিবাদী হয় মানুষ।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।
A – সকল বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব হয় প্রগতিবাদী।
A – সকল প্রগতিবাদী হয় মানুষ।
বিচার : যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কারণ পক্ষ পদ ‘প্রগতিবাদী’ পক্ষ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে।
● মানুষ মাত্রই ভুল করে এবং সব মানুষ প্রাণী।
যৌক্তিক আকার :
A সকল মানুষ হয় এমন যারা ভুল করে।
A – সকল মানুষ হয় প্রাণী।
A-সকল প্রাণী হয় এমন যারা ভুল করে । .
পক্ষ পদ প্রাণী, পক্ষ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয়, কিন্তু সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট।
• মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী, এবং তারা সবাই দ্বিপদবিশিষ্ট। যৌক্তিক আকার ও
A – সব মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী।
A – সব মানুষ হয় দ্বিপদবিশিষ্ট জীব।
A – সৰ দ্বিপদবিশিষ্ট জীব হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী।
যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। পক্ষ পদ পক্ষ আশ্রয়বাক্যে অব্যাপ্য কিন্তু সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে।
• মানুষ পূর্ণ নয় এবং সব মানুষ প্রাণী।
যৌকিক আকার
– E – কোনাে মানুষ নয় পূর্ণ সত্তা,
A – সকল মানুষ হয় প্রাণী।
E কোনাে প্রাণি নয় পূর্ণ সত্তা।
যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট৷ পক্ষ পদ পক্ষ আশ্রয়বাক্যে অব্যাপ্য কিন্তু সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে।
A সব জড়বস্তু হয় ওজনবিশিষ্ট,
A সব জড়বস্তু হয় এমন বস্তু যার বিস্তার আছে,
., A-সব বস্তু যার বিস্তার আছে হয় ওজনবিশিষ্ট।
বিচার : সিদ্ধান্তে পক্ষ পদ ব্যাপ্য আছে কিন্তু পক্ষ আশ্রয়বাক্যে পক্ষ পদ ব্যাপ্য নেই। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট।
• মানুষ মরণশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী।
যৌক্তিক আকার :
A. – সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
A সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী।
… A – সকল বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী হয় মরণশীল জীব।
বিচার ও যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট।
●কতিপয় জার্মান হয় ইহুদি, সব জার্মান চতুর, অতএব সব ইহুদি চতুর। যৌক্তিক আকার ?
A সকল জার্মান হয় চতুর ব্যক্তি।
I-কোনাে কোনাে জার্মান হয় ইহুদি।
A-সকল ইহুদি হয় চতুর ব্যক্তি।
বিচার ও সিদ্ধান্তে পক্ষ পদ ব্যাপ্য, কিন্তু পক্ষ আশ্রয়বাক্যে পক্ষ পদ অব্যাপ্য থাকায় যুক্তিটি অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের যুক্তিতে অব্যাপ্য হেতুদোষ
যুক্তিতে অব্যাপ্য হেতুদোষের উদ্ভব কখন হয়? নিম্নলিখিত যুক্তিগুলির বৈধতা বিচার কর।
উত্তর : হেতু পদ কোনো আশ্রয়বাক্যে একবারও ব্যাপ্য না হলে এই দোষ হয়।
● সে নিশ্চয়ই কাপুরুষ। কারণ সে অসৎ এবং সব কাপুরুষই অসৎ। যৌক্তিক আকার :
A – সকল কাপুরুষ হয় অসৎ ব্যক্তি।
– A – সে হয় অসৎ ব্যক্তি।
.. A – সে হয় কাপুরুষ।
বিচার :যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ হেতু পদ ‘অসৎ’ কোনাে আশ্রয়বাক্যেই ব্যাপ্য হয়নি। এটি বৈধ ন্যায়ের নিয়মবিরুদ্ধ। নিয়ম হল হেতু পদকে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতে হবে।
● প্রত্যেক মানুষ শান্তি কামনা করে, কারণ তারা প্রাণী। যৌক্তিক আকার ?
A – সকল শান্তিকামী ব্যক্তি হয় প্রাণী।
A – সকল মানুষ হয় প্রাণী।
A – সকল মানুষ হয় শান্তিকামী ব্যক্তি।
বিচার : যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ হেতু পদ প্রাণী কোনাে আশ্রয়বাক্যে। ব্যাপ্য হয়নি।
● সব প্রােটিন হয় জৈবযৌগ পদার্থ, অতএব সকল এনজাইম হয় প্রােটিন।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল প্রােটিন হয় জৈবযৌগ পদার্থ।
A – সকল এনজাইম হয় জৈবযৌগ পদার্থ।
A – সকল এনজাইম হয় প্রােটিন।
বিচার ও যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। হেতু পদ উভয় আশ্রয় বাক্যে অব্যাপ্য।
• কিছু পশু হিংস্র এবং সব খুনিরা হিংস্র।
যৌক্তিক আকার :
I – কোনাে কোনাে পশু হয় হিংস্র প্রাণী।
A – সকল খুনি হয় হিংস্র প্রাণী।
I- কোনাে কোনাে খুনি হয় পশু। ..
বিচার : যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ হেতু পদ ‘ হিংস্র’ কোনাে আশ্রয়বাকে, ব্যাপ্য হয়নি।
নিরপেক্ষ ন্যায়
● রাম যে অসাধু তার প্রমাণ সে কাপুরুষ।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল অসাধু ব্যক্তি হয় কাপুরুষ। A – রাম হয় কাপুরুষ।
A – রাম হয় অসাধু।
বিচার ও যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ হেতু পদ কোনাে আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য হয়নি। এটি ন্যায়ের নিয়মবিরুদ্ধ।
●এই ন্যায়টি নিশ্চয়ই বৈধ। কারণ সব বৈধ ন্যায়ের মতাে এরও তিনটি পদ আছে।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল বৈধ ন্যায় হয় ত্রিপদবিশিষ্ট।
A – এই ন্যায়টি হয় ত্রিপদবিশিষ্ট
.:. A – এই ন্যায়টি হয় বৈধ ন্যায়।
বিচার ও যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। উভয় আশ্রয়বাক্য Aবচনের বিধেয় স্থানে হেতু পদ থাকায় হেতু পদ একবারও ব্যাপ্য হয়নি।
● দেবতারা মানুষ থেকে ভিন্ন নয়, কারণ তারাও মানুষের মতাে মরণশীল।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
A – সকল দেবতা হয় মরণশীল জীব।
.:. A – সকল দেবতা হয় মানুষ।
বিচার ও যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ যুক্তিটির উভয় আশ্রয়বাক্য Aবচন হওয়ায় এবং হেতু পদ উভয় আশ্রয়বাক্যের বিধেয় স্থানে থাকায় একবারও ব্যাপ্য হয়নি।
●সে নিশ্চয়ই সফল, কারণ একমাত্র পরিশ্রমী ব্যক্তিরাই সফল।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল সফল ব্যক্তি হয় পরিশ্রমী ব্যক্তি। –
A – সে হয় পরিশ্রমী ব্যক্তি।
A – সে হয় সফল ব্যক্তি। –
বিচার ঃ যুক্তিটি অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট। কারণ হেতু পদ একবার ও ব্যাপ্য হয়নি।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের দোষ
● সে নিশ্চয়ই দোষী, কেননা সে দোষী ব্যক্তিদের মতাে ভয়ে কাঁপছিল।
যৌক্তিক আকার :
A – সকল দোষী ব্যক্তি হয় এমন ব্যক্তি যারা ভয়ে কাঁপে। –
A – সে হয় এমন ব্যক্তি যে ভয়ে কাঁপে।
A-সে হয় দোষী ব্যক্তি।
বিচার ঃ যুক্তিটির উভয় আশ্রয়বাক্য A বচন। উভয় আশ্রয়বাক্যে হেতু পদ বিধেয় স্থানে থাকায় হেতু পদ কোনাে আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য হয়নি। বৈধ ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে হেতু পদকে অন্তত একবার যে-কোনাে আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য হতে হবে। যুক্তিটি এই নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ হয়েছে ও যুক্তিটিতে অব্যাপ্য হেতুদোষ ঘটেছে।