কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা
এখানে একাদশ শ্রেণির বাংলা কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে
কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর একাদশ শ্রেণি বাংলা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
কর্তার ভূত গল্প
প্রশ্নঃ) “তবু স্বভাবদোষে যারা নিজে ভাবতে যায়”—কোন্ প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে? স্বভাব-দুষ্ট, নিজেভাবতে যাওয়া লােকগুলির স্বরূপ উদ্ঘাটন করাে।
উত্তর:
বুড়ােকর্তা মারা যাওয়ার সময় দেশবাসী জানায় যে, তিনি বলে গেলে তাদের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে পড়বে।তখন দেবতার দয়ায় বুড়ােকর্তা ভূত হয়ে তাদের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের নিশ্চিন্ত করলেন। আসলে, ভবিষ্যতের ভাবনাই উদবিগ্ন করে তােলে, ভূতের ভাবনা নয়। তাই দেশবাসী নিশ্চিন্ত হয়। এ প্রসঙ্গেই লেখক এ কথা বলেছেন যে, যে সব দেশবাসী স্বভাবদোষে চিন্তা করতে যায়, তারা ভূতের কানমলা খায়।
| ‘কর্তার ভূত’ রচনায় লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধর্মতন্ত্রের দ্বারা শাসিত জনসাধারণের সেই বেশিরভাগ অংশ, যারা ভীরু ও উদ্যমহীন, তাদেরই ‘দেশসুদ্ধ সবাই’ বলে উল্লেখ করেছেন। যারা যুক্তির আলােকে দেশের প্রাচীন সংস্কারের মায়াজাল থেকে নিজেদের এবং দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়,তাদেরই লেখক ‘স্বভাবদোয়ে যারা নিজে ভাবতে যায়’-এর পর্যায়ভুক্ত করেছেন। মৌলিক চিন্তার অধিকারী এইসব ‘হুঁশিয়ার মানুষ কখনােই সমাজের প্রথাগত ধারণার স্রোতে গা ভাসায় না বলে তাদের ভাগ্যে জোটে ‘ভূতের কানমলা’ | আর এই ভূতের কানমলা যেহেতু খালি চোখে দেখা যায় , তাই তা থেকে নিজেকে যেমন ছাড়ানাে যায় না, তেমনই সেখান থেকে হুঁশিয়ারদের পালানােও সম্ভব হয় না। তা ছাড়া, ভূতুড়ে জেলখানার অধিবাসী এইসব মানুষ সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও তার দেয়াল যেহেতু চোখে দেখা যায় না, তাই বােঝাও যায় না কীভাবে সেই দেয়াল ভেঙে বাইরে বেরােনাে সম্ভব। অর্থাৎ, ধর্মতন্ত্র বা অন্ধ সংস্কারের বেড়াজালকে যারা যুক্তিতর্কের দ্বারা মানতে পারে না, ধর্মতন্ত্র চিরকালই সেইসব চিন্তাশীল মানুষকে চোখরাঙানি, হূমকি আর শাস্তি দিয়ে দমিয়ে রাখতে সচেষ্ট থাকে।
কর্তার ভূত বড় প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ ) কেন না ভবিষ্যৎকে মানলেই তার জন্যে যত ভাবনা, ভূতকে মানলে কোনাে ভাবনাই নেই;”-কোন্ প্রসঙ্গে এই কথাটি বলা হয়েছে? ভুতকে মানলে ভাবনা নেই কেন? উদ্ধৃতিটির অন্তনিহিত তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনার বুড়ােকর্তা মারা যাওয়ার সময় দেশের সমস্ত লােক তাকে জানায় যে, তিনি চলে যাওয়ার পর তাদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়বে, তারা অভিভাবকহীন হয়ে পড়বে। এ কথা শুনে মর্মাহত মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধ দেশের লােকেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ভগবান তাই দয়াপরবশ হয়ে দেশবাসীকে জানান যে, চিন্তার কিছুই নেই, মৃত্যুর পর কর্তা ভূত হয়েই দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকবেন। মানুষের মরণ থাকলেও প্রেতের তাে মৃত্যু নেই। ভূতদশাপ্রাপ্ত বুড়াে কর্তার অভিভাবকত্বে থাকার নিশ্চয়তা পেয়ে তাই দেশবাসী নিশ্চিন্ত হয়। দেশবাসীর এই চিন্তাহীনতার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়েই লেখক প্রশ্নোত্ত উদ্ধৃতিটির অবতারণা করেছেন।
ভূতকে মানলে সমস্ত ভাবনা ভূতের মাথায় চাপে বলে দেশবাসীর কোনাে ভাবনা থাকে না।
সাধারণ মানুষ ‘চলতি হাওয়ার পন্থী’ | তাই সে সহজে পুরােনাে ব্যবস্থাকে বর্জন করে নতুন ব্যবস্থাকে গ্রহণ করতে চায় না| অজানা নতুনের প্রতি ভয় এবং জরাগ্রস্ত মানসিকতাই তাকে ভবিষ্যৎবিমুখ করে রাখে|আধুনিকতাকে গ্রহণ করতে গেলে সবকিছুকেই বিচারবিশ্লেষণ করতে হয়, যুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। কিন্তু ভূতরূপী ধর্মতন্ত্রকে অন্ধভাবে মানলে তাে কোনাে ভাবনাই থাকে না-—সব ভাবনাচিন্তা ধর্মতন্ত্র তথা অদৃষ্টের ওপর চাপিয়ে মানুষ দায়িত্বশূন্য হয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারে।
কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর
উত্তর :
‘কর্তার ভূত’ গল্পের লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং উদ্ধৃতিটির বক্তা।
ভূতগ্রস্ত’ কথাটির অর্থ হল ভূতে পাওয়া।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনায় আমরা দেখি যে, বুড়াে মারা গেলেও দেবতার দয়ায় তার ভূত দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে বসে থাকে। বেশিরভাগ দেশবাসী এতে নিশ্চিন্ত-নিরুদবিগ্ন হলেও স্বাধীন ভাবনাচিন্তার অধিকারী কয়েকজন মানুষ স্বভাবদোষে নিজে ভাবতে যায় এবং ভূতের কানমলা খেয়ে নিরস্ত হয়। ফলস্বরূপ দেশসুদ্ধ লােক ভূতে-পাওয়া অবস্থায় চোখ বুজে জীবন কাটাতে থাকে। দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরাও দেশবাসীর এই আচরণকে সমর্থন করেন।
দেশের তত্ত্বজ্ঞানসম্পন্ন মানুষেরা বলেন যে, ‘চোখ বুজে চলাই’ হল পৃথিবীর অতি প্রাচীন চলন—এই চলাকেই বলে নিয়তির নিয়মে চলা সৃষ্টির প্রথম অন্ধ জীবাণুরা তেমনভাবেই চলত, ঘাস থেকে শুরু করে গাছের মধ্যেও তেমনভাবে চলার ইঙ্গিত স্পষ্ট। এই কথাগুলির রূপকাৰ্থ হল এই যে, ধর্মতন্ত্রকে অনুসরণ করে অন্ধের মতাে এগিয়ে চলাই মানুষের আদিম চলন। নিয়তির কাছে, ভাগ্যের কাছে নিজের কর্তব্যবােধ ও বিবেকবুদ্ধিকে সঁপে দিয়ে অন্ধভাবে ধর্মতন্ত্র-নির্দেশিত পথ অনুসরণ করাই হল ‘অদৃষ্টের চালে চলা’ |
প্রশ্নঃ) “মানুষের মৃত্যু আছে, ভূতের তাে মৃত্যু নেই।”-কে, কোন্ প্রসঙ্গে কথাটি বলেছে? উক্তিটির তাৎপর্য লেখাে।
উত্তর :
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্তার ভূত’ কাহিনিতে দেশবাসীর অভিভাবক বুড়ােকর্তার মুমুষু অবস্থা হলে দেশবাসী তাকে জানায় যে, তিনি চলে গেলে তাদের অবস্থা সঙ্গিন হয়ে পড়বে। মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধ তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দুঃখিত হয়ে পড়লেন। তখন দেবতা প্রশ্নোস্তৃত উক্তিটির মাধ্যমে জানালেন যে বুড়ােকর্তা ভূত হয়ে দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকবেন।
‘কর্তার ভূত’ গল্পে রূপকের সাহায্যে প্রাচীন ধর্মকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থার স্বরূপ এবং জITধারণের দুরবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বুড়ােকর্তা ভূত হয়ে অর্থাৎ প্রাচীন সভ্যতা তার ধর্মতন্ত্রের মাধ্যমে দেশের লােকের ঘাড়ে চেপে থাকে| আর দেশের লােকও তাতে পরম নিশ্চিন্ত হয়, কারণ এই ধর্মতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করলে নিজের ভাবনা আর ভাবতে হয় না। কারণ মানুষ মরণশীল হলেও ভূতের মৃত্যু নেই। তাই তারা সারাজীবন এই ভূততন্ত্রের আশ্রয়েই কাটাতে চায়। ভূতগ্রস্ত দেশের মানুষেরা চোখ বুজে চলে আর ভবিষ্যৎকে ভূতের খোঁটায় বেঁধে রাখে। বুড়ােকর্তা যদি ভূত হয়ে দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে বসেন তাহলে দেশবাসীকে আর অভিভাবকহীন হতে হয় না। সেক্ষেত্রে, তারা তাদের ‘আদিম চলা’ অর্থাৎ চোখ বুজে চলা অব্যাহত রাখতে পারে। নিজের শক্তি ও আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে অন্ধ সংস্কারের ওপর নির্ভরশীল থাকাটাই দেশবাসীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তাই নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও কাজ করার বাসনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভূতরূপী ভবিতব্যের ওপরই দেশবাসী নির্ভর করে থাকে। এই নির্ভরশীলতা থেকেই আসে ভীতি। মানুষের মনের এই অন্তহীন ভয়ের সূত্র ধরেই প্রাচীন ধর্মব্যবস্থার ভূত টিকে থাকে সমাজে। অর্থাৎ বুড়ােকর্তা তথা প্রাচীন সভ্যতার ভূতরূপী ধর্মতন্ত্র অমর হয়ে থাকে।
কর্তার ভূত pdf
কর্তার ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর
উত্তরঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনায় দেখা যায়, বুড়ােকর্তা মারা গেলেও দেবতার দয়ায় তার ভূত দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে বসে থেকে তাদের নিশ্চিত করেন। কিন্তু দু-একজন নিজস্ব চিন্তার অধিকারী মানুষ এ ব্যবস্থার সমালােচনা করতে চাইলে তারা সেই বুড়ােকর্তার ভূতের কানমলা খায়। ফলস্বরূপ দেশসুদ্ধ লােক ভূতগ্রস্ত হয়ে জীবন কাটাতে থাকে। দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে দেশবাসীকে জানান যে, চোখ বুজে চলাই আদিম চলা। তা-ই হল নিয়তির নিয়মে চলা। পৃথিবীর আদিম জীব থেকে শুরু করে মনুষ্যেতর সকল জীবের চলনেই তেমন চলার আভাস মেলে। তত্ত্বজ্ঞানীদের সেই কথার প্রসঙ্গই প্রশ্নোধৃত উক্তিটিতে উল্লিখিত হয়েছে।
আলােচ্য গল্পে লেখক বুড়ােকার রূপকে ‘সর্বাঙ্গাসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতা কে এবং ‘ভূত’-এর রূপকে ‘ধর্মতন্ত্র’-কে প্রকাশ করেছেন। তাই এখানে তিনি ‘ভূতগ্রস্ত’ বা ‘ভূতে পাওয়া শব্দের মাধ্যমে ধর্মতন্ত্রে আচ্ছন্ন হওয়াকে অর্থাৎ ধর্মরূপ আফিমে ঝুঁদ হয়ে থাকাকে বুঝিয়েছেন।
* তত্ত্বজ্ঞানীদের সেই জ্ঞানগর্ভ কথা আর রক্ষণশীল বিধান শুনে দেশবাসী তাদের প্রাচীন কৌলীন্য এবং আভিজাত্যকে অনুভব করে। এতে তারা অত্যন্ত আনন্দও লাভ করে। তাদের সর্বদা ভূতুড়ে জেলখানার ঘানি ঘােরাতে হয়, যা থেকে বিক্রিযােগ্য এক ছটাক তেলও বের হয় না। শুধু বের হয় ঘানিটানা মানুষের তেজ। ফলে দেশবাসী ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে যায়। ফলে ভূতশাসনতন্ত্রে দেশবাসীর অন্ন বস্ত্র বাসস্থান-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-এর সুরাহা না হলেও দেশে শান্তি থাকে। দেশবাসী ভূততন্ত্রের অর্থাৎ ধর্মতন্ত্রের খোটায় বাঁধা ভেড়ার মতাে মাটিতে পড়ে থাকে। তাদের ভবিষ্যৎও থাকে ভূতের খোঁটায় বাঁধা— তা যেন একেবারে চিরকালের মতাে মাটি।
কর্তার ভূত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর
উত্তরঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ নামক রূপকধর্মী ছােটোগল্পে আমরা দেখি যে, সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতার অবসান হলেও আধুনিক যুগের আত্মবিশ্বাসহীন দেশবাসী ভবিষ্যতের চিন্তায় ভীত হয়ে সেই সভ্যতার ধর্মতন্ত্রকে অর্থাৎ কর্তার ভূতকে আঁকড়ে ধরাই নিরাপদ বলে মনে করে। তবে নিজস্ব প্রকৃতিগত কারণে যে দু-একজন মানুষ স্বাধীনভাবে ভাবার চেষ্টা করেন, তারা ভূতের কানমলা খান। অর্থাৎ তাদের ওপর ধর্মতন্ত্রের শাস্তি নেমে আসে। তাই দেশসুদ্ধ লােক ভূতগ্রস্ত হয়ে চোখ বুজে জীবন কাটাতে থাকে। দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরা এর সমর্থনে জানান যে, চোখ বুজে চলাই আদিম চলন, নিয়তির নিয়মে চলা। পৃথিবীর আদিম জীব থেকে শুরু করে মনুষ্যেতর সব জীবের চলনেই তেমন চলার আভাস মেলে।
“কিন্তু ভূতের রাজত্বে আর কিছুই না থাক—অন্ন হােক, বস্ত্র হােক, স্বাস্থ্য হােক—শান্তি থাকে। কিন্তু এই ‘শান্তিপূর্ণ নিরন্ন অবস্থায় দেশবাসীর কাছে ‘ভূতের পেয়াদারা অর্থাৎ ধর্মজীবন এবং ‘অভূতের পেয়াদারা অর্থাৎ প্রাত্যহিক প্রয়ােজন খাজনা দাবি করে। ধর্মভীরু দেশবাসী তা অগ্রাহ্য করতে পারে না। তখন দেশের সেই স্বাধীন-চিন্তাশীল মানুষগুলি সবাইকে প্রতিবাদপ্রতিরােধে শামিল হতে উদ্বুদ্ধ করেন। প্রথমদিকে জনসাধারণ ধর্মতন্ত্রের শাস্তির ভয়ে তাদের সংস্পর্শে আসতে ইতস্তত করলেও ক্রমশ তারা হুঁশিয়ারদের কাছে ঘেঁষে। তখন শিরােমণিচূড়ামণির দল অর্থাৎ ধর্মতন্ত্রের ধ্বজ্জাধারীরা শাস্ত্রের উদ্ধৃতি পরিবেশন করেন যে, “বেহুঁশ যারা তারাই পবিত্র, হুঁশিয়ার যারা তারাই অশুচি।” এভাবেই তারা যুক্তিতে জয়লাভ করতে না পেরে শাস্ত্রবাক্যের মাধ্যমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সচেষ্ট হন এবং শেষপর্যন্ত দেশবাসীকে স্বমতে আনতে সফল হন। আর এভাবেই ‘ভূতের রাজত্ব টিকে থাকে।
প্রশ্নঃ) রবীন্দ্রনাথের ‘কর্তার ভূত’ রচনাটির ভাষাশৈলী তথা রচনাশৈলী পর্যালােচনা করাে।
উত্তরঃ
রবীন্দ্রনাথের ‘লিপিকা’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘কর্তার ভূত’ ছােটোগল্পটির বাইরের আখ্যানের আড়ালে লুকিয়ে আছে আর-একটি সমান্তরাল অন্তর্নিহিত আখ্যান, এবং সেটিই মুখ্য। এ গল্পের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ রূপকের আড়ালে দেখিয়েছেন যে, আধুনিককালেও দেশবাসী প্রাচীন সভ্যতার ধর্মতন্ত্রে আচ্ছন্ন হয়ে কেমন যুক্তিবুদ্ধি-বিচার-বিবেচনাহীন হয়ে দিন কাটিয়ে চলেছে। লেখক সূক্ষ্ম ব্যঙ্গের সহায়তায় এবং রূপকথা ও লােকসাহিত্যের বিভিন্ন অনুষঙ্গকে ব্যবহার করে এই রূপকাৰ্থটি এ গল্পে প্রকাশ করেছেন। এ গল্পে তাই ভূত-প্রেতদত্যি-দানাের প্রসঙ্গ এসেছে, এসেছে ভগবানের প্রসঙ্গও। “খােকা ঘুমােল, পাড়া জুড়ােল’—এই অতিপরিচিত ছেলেভুলানাে ছড়াটির প্রথম দুই পঙক্তির টুকরাে টুকরাে অংশকে এ গল্পে ব্যবহার করে লেখক যেমন দেশবাসীর নিদ্রাচ্ছন্ন অবস্থাকে তুলে ধরেছেন, তেমনি উপস্থাপিত করেছেন তাদের পশ্চাৎমুখিতাকে| আর তা করতে গিয়ে লেখক ব্যবহার করেছেন গদ্যকাব্য রচনার উপযােগী সহজসরল, ভাবপ্রবণ ভাষা। সুতরাং শুধু বিষয়গত দিক দিয়েই নয়, রচনাশৈলীর দিক দিয়েও ‘কর্তার ভূত’ ছোটোগল্পটি একটি প্রতিনিধিস্থানীয় রচনা।
কর্তার ভূত গল্প
প্রশ্ন) ‘কর্তার ভূত’ কি নিছক ভূতের গল্প, নাকি রাজনৈতিক রূপক
কাহিনি? ব্যাখ্যা-সহ লেখাে। অথবা, কর্তার ভূত’ কি নিছক ভূতের গল্প, নাকি একটি সামাজিক বক্তব্য সম্বলিত রূপক-কাহিনিব্যাখ্যাসহ লেখাে।
উত্তরঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনাটি আসলে একটি কথিকা। এর মধ্য দিয়ে লেখক মানুষের চিরকালীন অভ্যাসের সমালােচনা করেছেন। ভূতের কথা বললেও এটি কোনাে ভৌতিক রহস্যময় গল্প নয়। এখানে রূপকের আড়ালে লেখক মানুষের ওপর চেপে বসা চিরকালীন কুসংস্কারের তীব্র সমালােচনা করেছেন।
‘ভূত’ বলতে এখানে অতীতকে বােঝানাে হয়েছে|অতীতকাল থেকেই আদিম মানুষ গােষ্ঠীবদ্ধ জীবনে অভ্যস্ত।তখন তারাতাদের যাবতীয় ভাবনাচিন্তা অর্পণ করেছিল দলের প্রবীণ ও নেতাস্থানীয় ব্যক্তির ওপর| সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কর্তার মৃত্যু ঘটলেও তার ভূত অর্থাৎ ‘অতীত ধারণা’ এদেশের মানুষকে ছেড়ে যায়নি। সে প্রতি পদে পদে এদের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই জেলখানায় অনেক নিয়মের চাপে পড়ে ঘানি ঘােরাতে ঘােরাতে মানুষ তার তেজ এবং অগ্রগতির পন্থাকে হারিয়ে ফেলে। আসলে মানুষের মনের ভয়ই তাকে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে দেয় না। আধুনিক চিন্তাভাবনার পথে এক পা বাড়ালে তার মনের ভয় তাকে বলে ওঠে সে অশুদ্ধ হয়ে যাবে, প্রকৃত প্রাচীন ঐতিহ্যের গর্বকে হারিয়ে ফেলবে|এই ভয় ত্যাগ করে নতুনকে গ্রহণ করতে পারলেই যে পুরােনােব্যবস্থার বদল ঘটবে—সে কথার ইঙ্গিত এ রচনার শেষে আমরা পাই। সুতরাং, ‘কর্তার ভূত’ ভূতের গল্পের মােড়কে সামাজিক ও রাজনৈতিক রূপক-কাহিনিই।
প্রশ্নঃ) “শুনে তারও মনে দুঃখ হল।”কাদের, কোন্ কথা শুনে,কার মনে, কেন দুঃখ হয়েছিল? এরপর বক্তা কী ভেবেছিলেন?
উত্তরঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ ছােটোগল্পে দেখা যায় যে, বুড়ােকর্তা ছিলেন দেশবাসীর অভিভাবক। তাই তার মরণকালে দেশবাসী একইসঙ্গে দুঃখিত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা মুমূর্য বুড়ােকর্তাকে জানায় যে, তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলে তাদের অবস্থা ভীষণ সঙ্গিন হয়ে উঠবে “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।” দেশবাসীর এই কথা শুনেই বুড়ােকর্তার ‘মনে দুঃখ হয়েছিল। মৃত্যুপথযাত্রী অভিভাবক যেমন নাবালক সন্তানের ভবিষ্যৎ-চিন্তায় আকুল হয়ে পড়েন, ঠিক তেমনই বুড়ােকর্তাও আত্মবিশ্বাসহীন দেশবাসীর ভবিষ্যৎ-চিন্তায় চিন্তিত হয়েছিলেন এবং তাদের অনিষ্ট আশঙ্কা করে দুঃখিত হয়েছিলেন।
তিনি চলে যাওয়ার পর দেশসুদ্ধ লােককে কে ঠান্ডা রাখবে—সেই ভাবনাই এরপর ভেবেছিলেন বুড়ােকর্তা।
কর্তার ভূত ছোট প্রশ্ন উত্তর
১. “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।”—এ কথা কখন বলা হয়েছিল?
উঃ “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে”—এ কথা বলা হয়েছিল বুড়ােকর্তার মরণকালে।
২. ভূতের মাথা না থাকার কী ফল হয়েছিল?
উত্তর: ‘কর্তার ভূত’ রচনায় ভূতের মাথা না থাকার ফলে কারাের জন্য ভূতুড়ে মাথাব্যথা ছিল না।
৩. ভূতুড়ে জেলখানার বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথের ‘কর্তার ভূত’ রচনায় ভূতুড়ে জেলখানার বৈশিষ্ট্য ছিল সেই জেলখানার দেয়াল চোখে দেখা যেত না।
৪. এদেশের লােকেরা ভূতের বাড়াবাড়ি হলে ওঝাদের খোঁজ করে না কেন?
উত্তর: এদেশের লােকেরা ভূতের বাড়াবাড়ি হলে ওঝাদের খোজ করে না কারণ এখানে ওঝাকেই আগেভাগে ভূতে পেয়ে আছে।
৫. অন্য সব দেশে যত ঘানি ঘােরে তার থেকে বেরােনাে তেল কী কাজে লাগে?
উত্তর: পৃথিবীর অন্য সব দেশে ঘানি থেকে যে তেল বেরােয় তা দিয়ে সেই দেশের ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখা হয়।
৬. ভূততন্ত্রের জেলখানার কয়েদিরা ঠান্ডা হয়ে যায় কেন?
: ভূততন্ত্রের জেলখানায় অনবরত ঘানি ঘােরাতে হয়। সেই ঘানির তেল হাটে বিক্রি হয় না, কিন্তু কয়েদিদের তেজ বেরিয়ে যায়। ফলে জেলখানার কয়েদিরা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে যায়।
৭. ‘কর্তার ভূত’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথের কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: ‘কর্তার ভূত’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথের গল্পিকা ধরনের রচনা লিপিকা গ্রন্থের অন্তর্গত।
৮, কর্তা মরে গিয়ে দেশের মানুষকে ঠান্ডা রাখবে কীভাবে?
উত্তর: কর্তা মরে গিয়ে ভূত হয়ে দেশের মানুষের ঘাড়ে চেপে থাকবেন। তাতেই দেশের মানুষ ঠান্ডা থাকবে।
৯. কারা ভূতের কানমলা খায়?
উত্তর: যারা স্বভাবদোষে নিজে ভাবতে যায়, তারাই ভূতের কানমলা খায়।
১০. ভূতের কানমলা কেমন হয়?
: ভূতের কানমলা ছাড়ানাে যায় না, তা থেকে পালানাে যায় না। তার বিরুদ্ধে নালিশ চলে না, এমনকি তার সম্বন্ধে বিচারও হয় না।
১১. অদৃষ্টের চালে চলা কাকে বলে?
উঃ কর্তার ভূত রচনায় ভূতগ্রস্ত হয়ে চোখ বুজে জীবন কাটানো কে অদৃষ্টের চালে চলা বলা হয়েছে
১২. অদৃষ্টের চালে কারা চলত?
উত্তর: এদেশের তত্ববিজ্ঞানীদের মতে, সৃষ্টির প্রথম চক্ষুহীন কীটাণুরা অদৃষ্টের চালে চলত।
১৩. “আজও এই চলার আভাস প্রচলিত।”—কীসের মধ্যে?
উত্তর: এদেশের তত্ত্ববিজ্ঞানীদের মতে, আজও ঘাসের মধ্যে, গাছের মধ্যে চোখ বুজে চলার আভাস প্রচলিত।
১৪. ভূতুড়ে জেলখানার দারােগা কে? উত্তর: ভুতুড়ে জেলখানার দারােগা হলেন ভূতের নায়েব।
উত্তর: ‘কর্তার ভূত’ রচনায় ভূতগ্রস্ত হয়ে চোখ বুজে জীবন কাটানােকে অদৃষ্টের চালে চলা বলা হয়েছে।
১৫. ভূতের জেলখানা থেকে বেরােনাে যায় না কেন?
উঃ ভূতের জেলখানার দেওয়াল চোখে দেখা যায় না বলেই এর থেকে বেরোনো যায় না।
১৬. বিদেশে ঘানি ঘোরানো হয় কেন?
উত্তর: বিদেশে ঘোরানো হয় মূলত তেল বের করার জন্য যাতে তা দিয়ে তাদের ভবিষ্যতের রথচক্র কে সচল রাখা যায়।
১৭. ভূতের ঘানি ঘুরিয়ে কী বের হয়?
উত্তর: ‘ কর্তার ভূত গল্পে রবীন্দ্রনাথ ব্যঙ্গ করে বলেছেন যে, ভূতের ঘানি ঘুরিয়ে মানুষের তেজ বের হয়।
১৮. ভুতের রাজ্যে কী থাকে?
উত্তর: ভুতের রাজ্যে অন্ন-বস্ত্র স্বাস্থ্য এসব না থাকলেও শাস্তি থাকে।
১৯. ভূত-শাসিত রাজ্যে শান্তি থাকার দৃষ্টান্ত কী?
উত্তর : ভুত শাসিত রাজ্যে এত বেশি শান্তি থাকে যে ভূতের বাড়াবাড়ি হলেও এই রাজ্যের মানুষ ওঝার খোঁজ করে না।
২০, এদেশের ওঝার দশা কেমন?
উত্তর: এদেশের ওঝাকে আগেভাগেই ভূতে পেয়ে বসে আছে। তাই তারা নিজেরাই ভূতগ্রস্ত।
২১. এদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ কেমন?
উত্তর: এদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ পােষা ভেড়ার মতাে ভূতের খোঁটায় বাঁধা। তারা চিরকালই চুপ করে মাটিতে পড়ে থাকে।
২২. কোন্ বিষয়ে কারও মনে কোনাে দ্বিধা জাগত
না? ২৩. কর্তার ভূত’ রচনায় কোন্ কারণে মুশকিল বেঁধেছিল? উত্তর: মুশকিল বেঁধেছিল কারণ, এদেশকে ভূতে পেলেও পৃথিবীর অন্য সব দেশকে ভূতে পায়নি।
২৪, অন্য দেশে ঘানির তেল দিয়ে কী হয়?
উত্তর: অন্য দেশে ঘানির তেল দিয়ে সে দেশের ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখা হয়।
২৫. অন্য দেশের মানুষের অবস্থা কেমন?
উত্তর: জীবনের স্বাভাবিক চলার গতিতে এগিয়ে চলা অন্য দেশগুলি ভয়ংকর সজাগ হয়ে আছে। তারা এদেশের মানুষের মতাে ভূতগ্রস্ত নয়।
২৬. মরণকালে বুড়ােকর্তার দুঃখ হল কেন?
] উত্তর: বুড়ােকর্তার মরণকালে দেশসুদ্ধ সবাই তাকে জানিয়েছিল যে, তিনি মারা গেলে তাদের খুব খারাপ দশা হবে| তাই তঁার দুঃখ হয়েছিল।
২৭. “দেশের লােক ভারি নিশ্চিন্ত হল।”—নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: বুড়ােকর্তার ভূত চিরকাল দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকবেন জানতে পেরে দেশবাসী নিশ্চিন্ত হল।
২৮, “একেই বলে অদৃষ্টের চালে চলা|”—‘অদৃষ্টের চালে চলা’ কী?
উত্তর: চোখ বুজে চলাই হল ‘অদৃষ্টের চালে চলা’ | আদিম যুগের দৃষ্টিহীন জীবাণুরা এইভাবে চলত।
২১. “এইজন্যে ভেবে পাওয়া যায় না,”—কী ভেবে পাওয়া যায় না?
উত্তর: ভূতুড়ে জেলখানার দেয়াল চোখে দেখা যায় না বলে সেটা ফুটো করে কীভাবে সেখান থেকে বেরােনাে যায়—তা ভেবে পাওয়া যায় না।
৩০, এদেশের মানুষের জেলখানার ঘানি থেকে কী বেরিয়ে যায়?
উত্তর: এদেশের মানুষের জেলখানার ঘানি থেকে হাটে বিকোনাের মতাে এক ছটাক তেলও বেরােয় না, কেবল বেরােয় মানুষের তেজ।
৩১, “এখানে সে চিন্তাই নেই।’—এখানে কোন্ চিন্তার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর। বিদেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলে মানুষ অস্থির ও চিন্তিত হয়ে ওঝার খোজ করে। এখানে সেই চিন্তার কথাই বলা হয়েছে। না থাকার কারণ কী?
৩২. “এখানে সে চিন্তাই নেই।”—চিন্তা না থাকার কারণ কি?
উত্তরঃ আমাদের ভূতগ্রস্ত দেশে ওঝাকেও যেহেতু ভূতে পেয়েছে, তাই এদেশের লােকেদের ভূত তাড়ানাের জন্য ওঝা খোজার চিন্তা নেই।
কর্তার ভূত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩৩, “চিরকালই গর্ব করতে পারত যে-কোন্ গর্বের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এই দেশের অধিবাসীদের ভবিষ্যৎ পােষা ভেড়ার মতাে ভূতের খোঁটায় বাঁধা থেকে নিঃশব্দে মাটিতে পড়ে থাকে। সেই ভবিষ্যতের গর্বের কথাই প্রশ্নোধৃত উক্তিতে বলা হয়েছে।
৩৪, “কেবল অতি সামান্য একটা কারণে একটু মুশকিল বাধল।” -মুশকিলটা কী?
উত্তর: মুশকিলটা হল এই যে, পৃথিবীর অন্য দেশগুলাের মানুষজনকে ভূতে পায়নি।
উত্তর: বিদেশে ঘানি থেকে তেল বের হয় ভবিষ্যতের রথচক্র সচল রাখার জন্য, মানুষের বুকের রক্ত পিষে ভূতের খুলিতে ঢেলে দেওয়ার জন্য নয়।তাই বিদেশিরা একেবারে জুড়িয়ে যায়নি।
৩৬, “এখানে সে চিন্তাই নেই।”—কোথায় চিন্তা নেই কেন?
উত্তর: অন্য দেশে ভূতের বাড়াবাড়ি হলে মানুষ অস্থির হয়ে ওঝার খোঁজ করে। কিন্তু এদেশে ওঝাকে আগেভাগেই ভূতে পেয়ে যাওয়ায় ওঝা খোঁজার চিন্তা নেই।
৩৭. “ভূতের তাে মৃত্যু নেই।”—এ কথা শুনে দেশের লােকের কী অবস্থা হয়?
উত্তর: “ভূতের তাে মৃত্যু নেই”—দেবতার মুখে এ কথা শুনে দেশের লােক অত্যন্ত নিশ্চিন্ত হয়।
৩৮, “তারা ভয়ংকর সজাগ থাকে।”—কারা কীভাবে সজাগ থাকে?
উত্তর: অন্য সব ভূতে না- পাওয়া দেশে ঘানি থেকে তেল বেরােয় ভবিষ্যতের রথচক্রকে সচল রাখার জন্য। তাই সেখানে মানুষ ভয়ংকর সজাগ থাকে।
৩৯. “দেশসুদ্ধ লােক ভূতগ্রস্ত হয়ে চোখ বুজে চলাে”—“ভূতগ্রস্ত চলা’ কী?
উত্তর: ‘ভূতগ্রস্ত চলা’ কথাটির অর্থ নিজস্ব ভাবনাচিন্তা বিসর্জন দিয়ে যাবতীয় ভাবনা ভূতের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে অন্ধ হয়ে চলা।
৪০, “আজও এই চলার আভাস প্রচলিত।”—এই চলার আভাস কাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে?
উত্তর: অদৃষ্টের চালে চলার আভাস আজও ঘাসের ও গাছের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।
৪১. “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।”—কে, কাকে এ কথা বলেছে?
উত্তর: দেশের মানুষেরা বুড়াে কর্তার মৃত্যুকালে তাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছে।
৪২. কর্তার ভূত’ গল্পে ‘ভূত’ বলতে কাকে বােঝানাে হয়েছে?
উঃ কর্তার ভূত গল্পে ভূত বলতে ধর্মতন্ত্র অর্থাৎ সংস্কার মানসিকতা কী বোঝানো হয়েছে।