উনবিংশ শতকের ইউরােপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত প্রশ্ন উত্তর ইতিহাস নবম শ্রেণী

 উনবিংশ শতকের ইউরােপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত প্রশ্ন উত্তর ইতিহাস নবম শ্রেণী

উনবিংশ শতকের ইউরােপ:

নবম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

জাতীয়তাবাদ বিষয়ক ধারণা, ভিয়েনা সম্মেলন ও মেটারনিক ব্যবস্থা

উনবিংশ-শতকের-ইউরােপ-রাজতান্ত্রিক-ও-জাতীয়তাবাদী-ভাবধারার-সংঘাত-প্ৰশ্ন-উত্তর-ইতিহাস-নবম-শ্রেণী

 

উনবিংশ শতকের ইউরােপ:

প্রশ্নঃ ।।  মেটারনিখ ব্যবস্থার মূল্যায়ন করাে। মেটারনিখ ব্যবস্থার পতনের কারণগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

 

 উত্তর

 

অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ ইউরােপে উদারতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি প্রগতিশীল ভাবধারার অগ্রগতি প্রতিহত করতে ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে যে রক্ষণশীল ও দমনমূলক নীতি কার্যকর করেন তা সাধারণভাবে মেটারনিখ ব্যবস্থা’ নামে পরিচিত।

 

মেটারনিখ ব্যবস্থার মূল্যায়ন

 

একদিকে মেটারনিখ ব্যবস্থার পক্ষে এবং অন্যদিকে এর বিপক্ষেও বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরা হয়। যেমন—

 

1] সপক্ষে যুক্তি : মেটারনিখ ব্যবস্থার সপক্ষে প্রধান যুক্তিগুলি 1 হল—[i] ইউরােপের যুদ্ধজনিত অশান্তি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করে মেটারনিখ অন্তত ৩০ বছরের জন্য শান্তি ও স্থিরতা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। [i] শান্তি প্রতিষ্ঠার ফলে ইউরােপে সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতির যথেষ্ট বিকাশ ঘটে। [iii] বহু জাতি ও ভাষাগােষ্ঠী অধ্যুষিত অস্ট্রিয়ার ঐক্য ধরে রাখার জন্য মেটারনিখের নীতির প্রয়ােজন ছিল। [iv] মেটারনিখের রক্ষণশীল নীতির পেছনে অস্ট্রিয়ার সম্রাট ফ্রান্সিস জোসেফ এবং মন্ত্রী কাউন্ট কোলেভার্ট-এর যথেষ্ট ভূমিকা ছিল।

 

[2] বিপক্ষে যুক্তি : মেটারনিখ ব্যবস্থার বিপক্ষে প্রধান যুক্তিগুলি হল—[i] মেটারনিখের নীতি ছিল নেতিবাচক, সংকীর্ণ ও সংস্কারবিরােধী। [ii] মেটারনিখ ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত উদারতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি আধুনিক ভাবধারাগুলির গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে ব্যর্থ হন। [ii] তিনি যুগধর্মকে অস্বীকার করে ইতিহাসের প্রগতিশীলতার স্রোতের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা করেন। [iv] তিনি নতুন যুগের নতুন ভাবধারার সঙ্গে পুরাতনতন্ত্রের সমন্বয় সাধনে ব্যর্থ হন। [v] তাঁর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ায় তার রক্ষণশীল নীতি চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

 

ফরাসি বিপ্লব ইউরােপে প্রগতিশীল ভাবধারা নিয়ে এলেও মেটারনিখ এই স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটার চেষ্টা করেন। ফ্রেডারিখ এঙ্গেলস-এর মতে, মেটারনিখ হ্যাপসবার্গ সাম্রাজ্যের মূলত দুটি শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করেছিলেন—[1] সামপ্রভু ও [2] মজুতদার পুঁজিপতি শ্রেণি।

 

 মেটারনিখ ব্যবস্থার পতনের কারণ

 

মেটারনিখ ব্যবস্থার পতনের বিভিন্ন কারণ ছিল। যেমন—

 

[1] নেতিবাচক নীতি : মেটারনিখের নীতি ছিল নেতিবাচক এবং সংস্কারবিরােধী। তিনি ফরাসি বিপ্লব ও উদারতন্ত্রের ধ্বংসাত্মক দিকটি দেখলেও এর গঠনমূলক দিকটি দেখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

 

 [2] নতুন যুগের আগমন : ঊনবিংশ শতকে ইউরােপে শিল্পবিপ্লব, নগরজীবনের প্রসার, বুর্জোয়াদের প্রাধান্য প্রভৃতির ফলে নতুন যুগের আগমন ঘটে। এর সঙ্গে মেটারনিখের পুরােনাে নীতি মােটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না।

 

[3] যুগধর্মের বিরােধিতা: উনবিংশ শতকের শুরুতে ইউরােপে : ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। কিন্তু মেটারনিখ যুগধর্মকে উপেক্ষা করে পিছিয়ে পড়া পুরানাে নীতিগুলিই আঁকড়ে ধরে থাকেন।

 

[4] ইউরােপের বিরােধিতা : ইউরােপের বিভিন্ন দেশ মেটারনিখের নীতির বিরােধিতা করে এই নীতি ত্যাগ করে। ইংল্যান্ড ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে, রাশিয়া ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে এবং ফ্রান্স ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে এই নীতি থেকে সরে আসে।

 

[5] ফেব্রুয়ারি বিপ্লব : ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় যে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয় তা ক্রমে বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে। নিরুপায় মেটারনিখ ইংল্যান্ডে পালিয়ে যান। এভাবে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে।

 

উপসংহার: মেটারনিখ ব্যবস্থা ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভেঙে পড়লেও অন্তত তিন দশক তারই অঙুলিহেলনে ইউরােপের রাজনীতি আবর্তিত হয়। এই সময় তিনি প্রকৃতপক্ষে ইউরােপীয় রাজনীতির বরপুত্র হয়ে উঠেছিলেন।

উনবিংশ শতকের ইউরােপ:

প্রশ্নঃ।। ইউরােপে জাতীয়তাবাদী ধারণার বিকাশের পরিচয় দাও। 

 

উত্তর 

 

ফরাসি বিপ্লবের (১৭৮৯ খ্রি.) আগে ইউরােপের মানুষ রাজতন্ত্রের প্রতি সীমাহীন আনুগত্য প্রকাশ করত। বিভিন্ন জাতিকে পদানত করে সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটানােই ছিল সে যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

 

[1] ফ্রান্সে জাতীয়তাবাদ : ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তীকালে সাধারণ মানুষ স্বৈরাচারী রাজা ও রাজতন্ত্রের পরিবর্তে দেশ ও জাতির প্রতি আনুগত্য জানাতে শুরু করে। এভাবে তাদের মনে জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের জন্ম হয়। ফ্রান্সের জাতীয় সভা’ ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে পিতৃভূমি বিপন্ন’ বলে ঘােষণা করলে ফরাসিদের মধ্যে তীব্র জাতীয়তাবােধের প্রসার ঘটে। দেশে একই ধরনের আইনকানুন চালু হলে দেশবাসীর মধ্যে জাতীয়তাবােধ আরও তীব্র হয়।

 

[2] ফ্রান্সের বাইরে জাতীয়তাবাদ; ফরাসি সম্রাট নেপােলিয়ন তাঁর সাম্রাজ্যবাদের দ্বারা বিপ্লবের ভাবধারা ইউরােপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেন। ফলে ফরাসি জাতির জাতীয়তাবাদী চেতনা ইউরােপের অন্যান্য দেশেও প্রসারিত হয়। এর ফলে ফ্রান্সের বাইরে ইটালি, জার্মানি, পােল্যান্ড, পাের্তুগাল, অস্ট্রিয়া, গ্রিস, বেলজিয়াম, বলকান প্রভৃতি অঞলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়। 

 

[3] নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ : ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তীকালে ফরাসি সম্রাট নেপােলিয়ন নগ্ন সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করে ইউরােপের বিভিন্ন জাতিকে পদানত করে ফরাসি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু তাঁর রাজত্বের শেষদিকে ইউরােপের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে স্পেন, পাের্তুগাল, জার্মানি প্রভৃতি দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। :

 

উপসংহার: ইউরােপের জাতীয়তাবাদের বিকাশ সেখানে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের সম্ভাবনা তৈরি করে। কিন্তু নেপােলিয়নের পতনের পর মেটারনিখতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার ফলে সেই সম্ভাবনা দ্রুত ধ্বংস হয়। ইউরােপে আবার স্বৈরাচারি রাজতন্ত্রের উত্থান ঘটে।

 

প্রশ্নঃ।। ভিয়েনা সম্মেলনের গৃহীত নীতিগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে। 

 

ঐতিহাসিক কেটেলবি বলেছেন যে, ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮১৫ খ্রি.) নেতৃবৃন্দ ইউরােপের পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে মূলত তিনটি নীতি গ্রহণ করেন। এই নীতিগুলি ছিল—1) ন্যায্য অধিকার নীতি, {2] ক্ষতিপূরণ নীতি এবং [3] শক্তিসাম্য নীতি।

 

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান নীতিসমূহ

 

(1) ন্যায্য অধিকার নীতি : ভিয়েনা সম্মেলনের কর্তারা ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা ইউরােপে বিপ্লব-পূর্ববর্তী রাজবংশগুলিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। এর ফলে—[i] ফ্রান্সে বুরবো বংশ, [ii] স্পেন, নেপক্স ও সিসিলিতে বুরবো বংশের অপর একটি শাখা, [ii] হল্যান্ডে অরেঞ বংশ, [iv] স্যাভয়, জেনােয়া, সার্ডিনিয়া ও পিডমন্টে স্যাভয় বংশ, [v] মধ্য ইটালিতে পােপ প্রমুখ ক্ষমতা লাভ করেন। [v] এ ছাড়া ইটালি ও জার্মানিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

[2] ” ক্ষতিপূরণ নীতি: অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, সুইডেন প্রভৃতি দেশ নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামে বহু ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেছিল। এখন ভিয়েনা সম্মেলনে ক্ষতিপূরণ নীতির মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ভূখণ্ড দখল করে নেয়।

 

[3] শক্তিসাম্য নীতি: ভবিষ্যতে ফ্রান্স যাতে শক্তিশালী হয়ে পুনরায় ইউরােপের শান্তি নষ্ট করতে না পারে এবং বিজয়ী শক্তিগুলির মধ্যে কেউ যাতে খুব বেশি শক্তিশালী হতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে শক্তিসাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

 

উপসংহার: ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত নীতিগুলি প্রগতি-বিরােধী হলেও ঐতিহাসিক ডেভিড টমসন মনে করেন যে, এই সম্মেলন মােটামুটিভাবে চল্লিশ বছরের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। এই শান্তির ফলে রং ইউরােপে সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল।

উনবিংশ শতকের ইউরােপ:

প্রশ্নঃ।।  ভিয়েনা সম্মেলনে ন্যায্য অধিকার নীতি সম্বন্ধে যা জান লেখাে। 

 

ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত তিনটি প্রধান নীতির মধ্যে অন্যতম ছিল ন্যায্য অধিকার নীতি’ (Principle of Legitimacy’)। অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ এবং ফ্রান্সের প্রতিনিধিতালির ছিলেন এই নীতির উগ্র সমর্থক। ন্যায্য অধিকার নীতি

 

| উত্তর

 

1) অর্থ: ন্যায্য অধিকার নীতির অর্থ হল বৈধ অধিকারের প্রতিষ্ঠা। এই নীতির দ্বারা ভিয়েনা সম্মেলনের কর্তাগণ ইউরােপে ফরাসি বিপ্লবের (১৭৮৯ খ্রি.) আগে যেখানে যে রাজা বা রাজবংশ রাজত্ব করতেন সেখানে তাদের ক্ষমতার পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন।

 

[2) গৃহীত পদক্ষেপ : ন্যায্য অধিকার নীতির মাধ্যমে—[1] ফ্রান্সে বুরবো রাজবংশকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বংশের অষ্টাদশ লুই ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। [1] ফ্রান্সকে বিপ্লবের আগের রাজ্যসীমায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। [ii] হল্যান্ডে অরেঞ্জ বংশ, স্যাভয়, জেনােয়া, সার্ডিনিয়া ও পিডমন্টে স্যাভয় বংশ এবং মধ্য ইটালিতে পােপের ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। (iv) উত্তর ইটালি ও জার্মানিতে অস্ট্রিয়ার আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

 

(3) নীতির লংঘন :ভিয়েনা সম্মেলনের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার নীতি লঙ্ঘন করেন বা নীতির বাস্তবায়নে অনীহা দেখান। [1] বিপ্লবের আগে ভেনিস এবং জেনােয়ায় প্রজাতান্ত্রিক শাসন থাকলেও সেখানে প্রজাতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়নি। [i] মধ্য জার্মানির আগেকার রাজবংশগুলিকেও এই নীতির মাধ্যমে শাসনক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা হয়নি। [ii] আগে না থাকলেও এখন বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে এবং নরওয়েকে ডেনমার্কের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে সুইডেনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

 

উপসংহার: ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি দ্বারা ইউরােপে নতুন অশান্তির ক্ষেত্র তৈরি হয়। পূর্বতন রাজবংশগুলি তাদের সিংহাসন ফিরে পায়। কিন্তু এতে নতুন অশান্তির ক্ষেত্র তৈরি হয়।

উনবিংশ শতকের ইউরােপ:

প্রশ্নঃ।।  ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ক্ষতিপূরণ নীতির বিভিন্ন পদক্ষেপগুলি উল্লেখ করাে। | 

 

উত্তর

 

ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত তিনটি প্রধান নীতির মধ্যে অন্যতম ছিল ক্ষতিপূরণ নীতি’ (‘Principle of Compensation’)। ক্ষতিপূরণ নীতি

 

[1] অং: অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশ নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করেছিল। এই ক্ষতিপূরণের উদ্দেশ্যে তারা ভিয়েনা সম্মেলনের ক্ষতিপূরণ নীতির দ্বারা বিভিন্ন ভূখণ্ড নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

 

2] গৃহীত পদক্ষেপ ; ক্ষতিপূরণ নীতির দ্বারা অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও সুইডেন বিভিন্ন ভূখণ্ড লাভ করে।

 

(1) অস্ট্রিয়া : অস্ট্রিয়া উত্তর ইটালির লম্বার্ডি ও ভিনিশা, টাইরল, সাজ্জবার্গ ও ইলিরিয়া অঞ্চল এবং পােল্যান্ডের কিছু অংশ লাভ করে। অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ বংশ মধ্য ইটালির পার্মা, মডেনা ও টাস্কানিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।

 

[i] প্রাশিয়া; স্যাক্সনির উত্তরাংশ, পশ্চিম পােমেরেনিয়া, পােজেন, থর্ন, ডানজিগ ও রাইন অঞল লাভ করে প্রাশিয়া। [ii] রাশিয়া। রাশিয়া লাভ করে পােল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ, ফিনল্যান্ড এবং তুরস্কের বেসারেবিয়া। : .

 

[iv] ইংল্যান্ড : ইংল্যান্ড লাভ করে ভূমধ্যসাগরের মাল্টা, আয়নীয় দ্বীপপুঞ্জ, হেলিগােল্যান্ড, কেপ কলােনি, ত্রিনিদাদ, মরিশাস ও সিংহল। :

 

[v] সুইডেন; পশ্চিম পােমেরেনিয়া ছেড়ে দিয়ে নরওয়ে দেশটি সুইডেন লাভ করে।

 

 টীকা লেখাে: মেটারনিখ ব্যবস্থা।

 

 উত্তর  

 

অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স ক্লেমেন্স মেটারনিখ ছিলেন সমকালীন ইউরােপীয় রাজনীতির উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে তিনিই ছিলেন ইউরােপীয় রাজনীতির প্রধান নিয়ন্ত্রক। এজন্য ঐতিহাসিক ফিশার এই সময়কালকে ‘মেটারনিখের যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন।

 

মেটারনিখ পদ্ধতি মেটারনিখ ব্যবস্থা 

 

মেটারনিখ যতদিন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ততদিন অস্ট্রিয়ায় এবং ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তের দ্বারা ইউরােপের অন্যান্য দেশে তীব্র রক্ষণশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর রাজনৈতিক পদক্ষেপগুলির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—[1] ইউরােপে বিপ্লবের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। [2] ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত উদারতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র প্রভৃতি প্রগতিশীল ভাবধারার অগ্রগতি রােধ করা। [3] অস্ট্রিয়ার স্বার্থসিদ্ধি করা এবং ইউরােপে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য বজায় রাখা। এই নীতিগুলি বাস্তবায়িত করার উদ্দেশ্যে মেটারনিখ অস্ট্রিয়া তথা ইউরােপে যে দমনমূলক নীতির প্রবর্তন করেন তা ‘মেটারনিখ পদ্ধতি’ বা ‘মেটারনিখ ব্যবস্থা’ বা ‘মেটারনিখ সিস্টেম পরিচিত।

 

উনবিংশ শতকের ইউরােপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত  ইতিহাস নবম শ্রেণী সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্ন।  কালসড ডিক্রি কাকে বলে? অথবা, কার্লসড ডিক্রি কী?

 

০ ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর প্রিন্স মেটারনিখ জার্মানির উদারপন্থী ছাত্র ও শিক্ষকদের আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে এক ঘােষণার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিষিদ্ধ করেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেন। এই ঘােষণাটি কার্লসড ডিক্রি নামে পরিচিত।

 

প্রশ্ন।  *কালসড ডিক্রি’তে কী বলা হয়েছিল?

 

  কার্লসড ডিক্রিতে–জার্মানির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠনগুলি নিষিদ্ধকরণ, বাক্ স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়।

 

প্রশ্নঃ।। মেটারনিখ কেন কার্লসড ডিক্রি জারি করেন? 

 

মেটারনিখ জার্মানির উদারপন্থী ছাত্র ও শিক্ষকদের দমন, রাজনৈতিক দলগুলিকে নিষিদ্ধকরণ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ প্রভৃতির মাধ্যমে ইউরােপে তথা নিজ রাষ্ট্রে পুরাতনতন্ত্র বজায় রাখতে কার্লসবাড ডিক্রি জারি করেন।

 

প্রশ্ন।  ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ কার উদ্যোগে ও কত খ্রিস্টাব্দে  গঠিত হয়? 

 

 ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখের উদ্যোগে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়।

 

প্রশ্ন।  ট্রাপাে বৈঠকে গৃহীত ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছে?

 

– ট্রপাে বৈঠকে গৃহীত ঘােষণাপত্রে বলা হয়েছে যে—[1] জনগণের কোনাে অধিকার নেই সরকার পরিবর্তনের। [2] জনগণ কোনাে দেশে আন্দোলন করলে শক্তি সমবায় সেখানে বলপ্রয়ােগের দ্বারা আন্দোলন দমন করবে।

 

প্রশ্ন।  কোন্ রাজনৈতিক অদূরদর্শিতায় মেটারনিখ পদ্ধতি ব্যর্থ হয়ে যায়? 

 

মেটারনিখ পদ্ধতি ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণগুলি ছিল— [1] মেটারনিখ শুধু দমনপীড়নের দ্বারা পুরাতনতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। [2] জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, উদারতন্ত্র প্রভৃতি আধুনিক ভাবধারাগুলিকে তিনি অস্বীকার করেন।

 

প্রশ্ন।  ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ গঠনের উদ্দেশ্য কেন রক্ষণশীল ছিল?

 

ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ গঠনের উদ্দেশ্য রক্ষণশীল ছিল কারণ, শক্তি সমবায়ের লক্ষ্য ছিল পুরাতনতন্ত্র ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে আধুনিক ভাবধারাগুলির অগ্রগতি রােধ করা।

 

প্রশ্ন।  *প্রিন্স মেটারনিখ ইতিহাসে কেন স্মরণীয়

 

 প্রিন্স মেটারনিখ ইতিহাসে স্মরণীয়, কারণ—[1] ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ইউরােপের রাজনৈতিক ভাগ্যনিয়ন্তা। [2] তিনি ছিলেন ভিয়েনা সম্মেলনের মধ্যমণি। [3] তিনি বিভিন্ন দেশে পুরাতনতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে এক বিতর্কিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন।

 

প্রশ্নঃ।। জাতীয়তাবাদ বলতে কী বােঝ? কোন্ সময়কালে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

 

যে আদর্শের দ্বারা কোনাে দেশের মানুষ বা জাতি স্বদেশের প্রতি গভীর ভালােবাসা অনুভব করে, স্বদেশের গৌরব বা অগৌরবকে কেন্দ্র করে তাদের মন আবেগে আপ্লুত হয়, এমনকি তারা স্বদেশের মঙ্গলের জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত থাকে তাকে জাতীয়তাবাদ বলে। ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে।

 

প্রশ্ন।  জাতিরাষ্ট্র’ বলতে কী বোেঝ?

 

যখন কোনাে নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী ভাষা, ধর্ম ও অন্যান্য সাধারণ কিছু ঐক্যের বিষয়ে গড়ে ওঠা জনগােষ্ঠীকে নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে ওঠে তখন তাকে জাতিরাষ্ট্র বলে।

 

প্রশ্ন।। মেটারনিখ কে ছিলেন? *

 

মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী (১৮০৯-১৮৪৮ খ্রি.) এবং প্রশ্ন ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮২৫ খ্রি.) সভাপতি। তিনি ছিলেন রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও সামন্ততন্ত্রের গোঁড়া সমর্থক। ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরােপীয় রাজনীতি মূলত তারই নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।

 

প্রশ্ন ।।  ভিয়েনা সম্মেলন কবে, কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

 

মেটারনিখের সভাপতিত্বে ভিয়েনা সম্মেলন ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত হয়।

 

প্রশ্নঃ।। ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব কারা ছিলেন?

 

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন [1] অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ, [2] রুশ জার প্রথম আলেকজান্ডার, [3] ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসলরি এবং [4] ফ্রান্সের প্রতিনিধি তালির। মেটারনিখ ছিলেন ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি।

 

প্রশ্নঃ।। চার প্রধান বলতে কী বােঝাে?  অথবা, ভিয়েনা সম্মেলনের Big Four বা চার প্রধান কারা ছিলেন? 

 

ভিয়েনা সম্মেলনে (১৮১৫ খ্রি.) উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযােগ্য ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ, রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যালরি ও প্রাশিয়ার প্রিন্স হার্ডেনবার্গ। এই চারটি দেশকে ‘বিগ ফোর’ বা চার প্রধান বলা হয়।

 

প্রশ্নঃ।।  ভিয়েনা সম্মেলনের দুটি উদ্দেশ্য কী ছিল? 

 

 ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল— [1] ইউরােপের রাজনৈতিক কাঠামাের পুনর্গঠন, [2] নেপােলিয়ন কর্তৃক বিতাড়িত রাজবংশগুলির পুনঃপ্রতিষ্ঠা, [3] ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ শক্তিবৃদ্ধির সম্ভাবনা দূর করা, [4] নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, [5] ইউরােপেশক্তিসাম্য প্রতিষ্ঠা করা প্রভৃতি।

 

প্রশ্ন।  * ভিয়েনা সম্মেলনে কয়টি নীতি গৃহীত হয় ও কী কী? 

 

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান নীতি ছিল তিনটি। যথা-1] ন্যায্য অধিকার নীতি, [2] ক্ষতিপূরণ নীতি এবং [3] শক্তিসাম্য নীতি।

 

প্রশ্নঃ।।  ভিয়েনা সম্মেলনের শক্তিসাম্য নীতির দ্বারা ফ্রান্সের চতুর্দিকে কোন্ কোন্ রাষ্ট্রের দ্বারা ঘিরে ফেলা হয়?

 

ভিয়েনা সম্মেলনের শক্তিসাম্য নীতির দ্বারা ফ্রান্সের+1] উত্তর-পূর্ব সীমান্তে লাক্সেমবার্গ ও বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে, [2] পূর্ব সীমান্তে রাইন জেলাগুলিকে প্রাশিয়ার সঙ্গে, [3] দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে কয়েকটি জেলাকে সুইটজারল্যান্ডের সঙ্গে, [4] দক্ষিণ সীমান্তে স্যাভয় ও | জেনােয়াকে পিডমন্টের সঙ্গে জুড়ে ফ্রান্সকে শক্তিশালী রাষ্ট্র দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।

 

প্রশ্নঃ।।  ভিয়েনা সম্মেলনের গুরুত্ব লেখাে।

 

বিভিন্ন ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও ভিয়েনা সম্মেলনের বেশকিছু গুরুত্ব ছিল যেমন—[1] ডেভিড টসমন বলেছেন যে ভিয়েনা সম্মেলন ইউরােপে অন্তত চল্লিশ বছরের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। এর ফলে ইউরােপে শিল্প-সাহিত্য-বিজ্ঞানে অগ্রগতি ঘটে। [2] এই সম্মেলন আন্তর্জাতিকতাবাদের সূচনা করে। [3] এর ভিত্তিতেই পরবর্তীকালে জাতিসংঘ ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

প্রশ্নঃ।। কোন্ সময়কালকে ইউরােপের ইতিহাসে ‘মেটারনিখ যুগ’ বলা হয় এবং কেন? 

 

[1] ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে ইউরােপের ইতিহাসে ‘মেটারনিখ যুগ’বলা হয়। [2] ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রি মেটারনিখ ছিলেন ইউরােপের প্রধান ভাগ্যনিয়ন্তা। এই সময় ইউরােপের অধিকাংশশাসক মেটারনিখের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ নিজশাসনকাং পরিচালনা করেন। এজন্য এই সময়কালকে ‘মেটারনিখের যুগ’ বলা হয়।

 

প্রশ্ন।।  মেটারনিখ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য কী ছিল? 

 

মেটারনিখ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য ছিল—[1] ইউরােপে গণতন্ত্র জাতীয়তাবাদ ও উদারবাদের অগ্রগতি রােধ করা, [2] বৈপ্লবিক ভাবধারার আক্রমণ থেকে নিজ রাষ্ট্র অস্ট্রিয়াকে রক্ষা করা। –

 

 

উনবিংশ শতকের ইউরােপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত ছোট প্রশ্ন উত্তর

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য বা বৈধ অধিকার নীতি অনুযায়ী কোন রাজবংশের সদস্যদের ওপর পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার শাসনভার অর্পিত হয়েছিল ? 

 

  ভিয়েনা সম্মেলনের বৈধ অধিকার নীতি অনুযায়ী স্যাভয় রাজবংশের সদস্যদের ওপর পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার শাসনভার অর্পিত হয়েছিল।

 

প্রশ্নঃ. সুইস কনফেডারেশন’ কী?

 

  সুইস কনফেডারেশন’ হল বর্তমান স্বাধীন সুইটজারল্যান্ড যা ঊনবিংশ শতকে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। 

 

 

প্রশ্নঃ।।. ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ট্রপাে ঘােষণা কী ছিল?

 

 ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ট্রপাে ঘােষণা ছিল যে—[1] জনগণের সরকার পরিবর্তনের কোনাে অধিকার নেই। [2] জনগণ কোনাে দেশে আন্দোলন করলে শক্তি সমবায় সেখানে বলপ্রয়ােগের দ্বারা আন্দোলন দমন করবে।

 

প্রশ্নঃ।। ট্র্পাের বৈঠকে কী ঘােষণা করা হয়?

 

ট্র্পাের বৈঠকে (১৯২০ খ্রি.) ঘোষণা করা হয় জনগণের সরকার পরিবর্তনের কোনাে অধিকার নেই এবং তারা কোনাে দেশে আন্দোলন করলে শক্তি সময় সেখানে বলপ্রয়োগের দ্বারা আন্দোলন দমন করবে।

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি প্রযােজ্য না হওয়ার একটি উদাহৱখ দাও।

 

  ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি প্রযােজ্য না হওয়ার একটি উদাহরণ হল-ফরাসি বিপ্লবের আগে ভেনিস ও জেনােয়ায় প্রজাতান্ত্রিক শাসন প্রচলিত থাকলেও ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা সেখানে প্রজাতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি।

 

প্রশ্নঃ. ন্যায্য অধিকাৰ নীতির দ্বারা ইংল্যান্ড কোন কোন স্থান লাভ

 

  ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা ইংল্যান্ড মাল্টা, আয়নীয় দ্বীপপুঞ্জ, হেলিগােল্যান্ড, কেপ কলােনি, ত্রিনিদাদ, মরিশাস ও সিংহল লাভ করে ।

 

প্রশ্নঃ. শক্তি সময়ের প্রথম ও শেষ, বৈঠক কোথায় বসেছিল? 

 

 শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক আই-লা সাপেল নগরীতে (১৮১৮ খ্রি.) এবং শেষ বৈঠক সেন্ট পিটার্সবার্গ-এ (১৮২৫ খ্রি.) বসেছিল।

 

11. কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কার্লসড ডিক্রি জারি হয়?

 

 জেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কার্ল স্যান্ড কর্তৃক সাংবাদিক অগাস্ট ভন কটজেভু হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে কার্লসড ডিক্রি’ জারি হয়।

 

প্রশ্নঃ. কৰে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে?

 

 ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে।

 

প্রশ্নঃ. মেটারনিখ কে ছিলেন? 

 

মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী (১৮০৯-৪৮ খ্রি.) এবং ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮১৫ খ্রি.) সভাপতি।

 

ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা স্যাভয় অংশের কর্তৃত্ব প্রাণ হয় স্যাভয়, জেনােয়া, পিমেন্ট ও সার্জিনিয়ায়।

 

প্রশ্নঃ, কোন দেশগুলি ক্ষতিপূরণ নীথির দ্বারা বেশি লাভবান হয়।

 

  অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ড ক্ষতিপূরণ নীতি, বেশি লাভবান হয়।

 

প্রশ্নঃ. অস্ট্রিয়ার রাজধানী কোথায় ছিল? 

 

 অস্ট্রিয়ার রাজধানী ছিল ভিয়েনা।

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

 

 ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়।

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলন কবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

 

 ভিয়েনা সম্মেলন ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 

প্রশ্নঃ। ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি কে ছিলেন? 

 

 ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন মেটারনিখ।

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক কে ছিলেন?

 

  ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক ছিলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেল মেটারনিখ।

 

প্রশ্নঃ. মেটারনিখ কত খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন? 

 

 মেটারনিখ ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন।

 

প্রশ্নঃ।। ইউরোপীয় রক্ষণশীলতার জনক বলা হয় কাকে?

 

 ইউরােপীয় রক্ষণশীলতার জনক হলেন মেটারনিখ। 

 

প্রশ্নঃ. ক্যাসলরি কে ছিলেন? 

 

  ক্যাসলরি ছিলেন জনৈক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রতিনিধিত্ব

 

প্রশ্নঃ. কোন্ কোন্ দেশের রাজাৱা ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন?

 

 ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়ার রাজা প্রথম ফ্রান্সিস, প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডরিখ উইলিয়াম এবং রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার।

 

প্রশ্নঃ. ১৮১৫ সময়কালে ‘বিগ-ফোর’ বলতে কাদের

 

১৮১৫ সময়কালে ‘ বিগ-ফোর’ বলতে অস্ট্রিয়া, রাশিয়, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ডকে বােঝানাে হয়েছে।

 

প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রতিনিধি কে ছিলেন? 

 

ভিয়েনা সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রতিনিধি ছিলেন তালির।

 

 প্রশ্নঃ. ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের কোন বিদেশমন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন?

 

 ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী ক্যাসলরি যে দিয়েছিলেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *