আবহবিকারের ফলাফল, আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ
আবহবিকারের ফলাফল, আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ
■ আবহবিকারের ফলাফল উল্লেখ করাে এবং আবহবিকারের ফলে কীভাবে মৃত্তিকার সৃষ্টি হয় তা ব্যাখ্যা করাে।
আবহবিকারের ফলাফল
আবহবিকারের ফলাফলগুলি হল—
1. ভূমিরূপের সৃষ্টি: আবহবিকারের ফলে আর্ন ক্রান্তীয় অঞ্চলে টর, উয় মরু অঞ্চলে ইনসেলবার্জ, গােলাকৃতি পাহাড়, চুনাপাথরযুক্ত অঞলে দ্রবণ গর্ত, গুহা, স্ট্যালাকটাইট প্রভৃতি ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।
2, খনিজের সৃষ্টি: শিলার বিয়ােজনের মাধ্যমে নতুন ধরনের খনিজ পদার্থের সৃষ্টি হয়। যেমন—আ ক্রান্তীয় অঞ্চলে বক্সাইটের সৃষ্টি হয়।
3. কৃষিকার্যের সুবিধা: আবহবিকারের ফলে শিলাস্তর চূর্ণবিচূর্ণ হয় বলে মাটির জলধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, মৃত্তিকায় জল ও বায়ুর সঞ্চালন ভালাে হয়, ফলে কৃষিকার্যের সুবিধা হয়।
: 4. রেগােলিথের সৃষ্টি: শিলার বিচূর্ণন ও বিয়ােজনের ফলে যে রেগােলিথের সৃষ্টি হয়, তা পরবর্তী সময়ে মৃত্তিকা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আবহবিকারের ফলে মৃত্তিকার সৃষ্টি
আবহবিকারের ফলে মৃত্তিকার সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে কয়েকটি পর্যায়ের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যেমন
1. প্রথম পর্যায়: যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও জৈবিক আবহবিকারের মাধ্যমে আদি শিলা ক্রমাগত চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়ােজিত হয়ে শেষে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয় এবং ভূমির ওপর এক শিথিল, কোমল বস্তুকণার অবরণ সৃষ্টি করে, যার নাম রেগােলিথ বা ভূ-আস্তরণ। এটিই হল মৃত্তিকা সৃষ্টির মূল উপাদান এবং প্রথম পর্ব ও অন্যতম শর্ত।
2. দ্বিতীয় পর্যায়: রেগােলিথ সৃষ্টির পর তার ওপর জীবদেহজাত নানা ধরনের জৈব পদার্থ (মৃত প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহাবশেষ) জমতে থাকে। তখন ভূমির উপরিভাগের বিভিন্ন প্রকার অণুজীব বা সূক্ষ্ম জীবাণু (যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি) ওই জৈব পদার্থকে ক্রমশ বিয়ােজিত করে বা পচিয়ে এক ধরনের জটিল কালাে পদার্থ সৃষ্টি করে, যার নাম হিউমাস। আর এই প্রক্রিয়াটিকে বলে হিউমিফিকেশন।
3. তৃতীয় পর্যায়: উৎপন্ন হিউমাস ও আবহবিকারজাত পদার্থসমূহ বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয়ে অত্যন্ত জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় নতুন নতুন খনিজ সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়াটিকে বলে খনিজকরণ। মাটি সৃষ্টির এইসব প্রক্রিয়া চলার সময় মাটির উপরিভাগ থেকে লােহা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি খনিজ পদার্থ
এলুভিয়েশন পদ্ধতিতে নিম্নস্তরে চলে যায় এবং ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়ায় সঞ্চিত হয়। এইভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাটির উপাদানসমূহের রাসায়নিক ধর্ম পরিবর্তিত হয় এবং ধীরে ধীরে জৈব ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ এক নরম শিথিল পরিণত স্তর ভূত্বকের উপরিভাগে সৃষ্টি হয়, যার নাম মৃত্তিকা।
সুতরাং আবহবিকার জাত হিসেবে পদার্থকে মূল উপাদান গ্রহণ করে মৃত্তিকা সৃষ্টিকারী প্রক্রিয়াসমূহ বিভিন্ন প্রকার জৈবিক ও জৈব- চিত্র: মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়া রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠে মৃত্তিকার গঠন করে। আবহবিকারের ফলে মৃত্তিকার সৃষ্টি আর এজন্যই বলা হয় মৃত্তিকা সৃষ্টিতে আবহবিকারের অবদান সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
2 মৃত্তিকা ক্ষয়ের ধারণা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করাে।
মৃত্তিকা ক্ষয়ের ধারণা
প্রাকৃতিক বা প্রাকৃতিক কারণে ভূমির উপরিভাগ থেকে মৃত্তিকার অপসারণ ঘটলে তাকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে।
মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ
মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—প্রাকৃতিক কারণ ও অপ্রাকৃতিক কারণ।
1 প্রাকৃতিক কারণ: মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রাকৃতিক কারণগুলি হল—
বষ্টিপাত: অধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে, বৃষ্টির ফোঁটার আঘাতে ভূমি থেকে মৃত্তিকা আলগা হয়ে যায় এবং মৃত্তিকা ক্ষয় পায়।
বায়ু প্রবাহ; মরু অঞ্চলে এবং সমুদ্র উপকূলে বায়ু বাধাহীনভাবে তীব্রগতিতে প্রবাহিত হয় এবং এর প্রভাবে মৃত্তিকা ক্ষয় পায়।
জলপ্রবাহ: নদী বা সমুদ্রের জলপ্রবাহের আঘাতে মাটিচয় হয়।
2. অপ্রাকৃতিক কারণ: মৃত্তিকা ক্ষয়ের অপ্রাকৃতিক কারণগুলি হল—
অরণ্য হ্রাস: উদ্ভিদ তার শিকড় দিয়ে মৃত্তিকাকণাকে ধরে রাখে। কিন্তু দ্রুত হারে বন ধ্বংসের ফলে উদ্ভিদের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমাণ বেড়ে চলেছে।
অতিরিক্ত পশুচারণ: তৃণভূমি অঞ্চলে অতিরিক্ত পশুচারণের ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ: জঙ্গল পুড়িয়ে ঝুমচাষের মতাে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজের ফলেও মাটিক্ষয় ঘটে। মৃত্তিকা ক্ষয়ের পদ্ধতি জলপ্রবাহ ও বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে মূলত প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়—
1. জলপ্রবাহের মাধ্যমে ক্ষয়:
চাদর ক্ষয় (Sheet erosion): ভূমির ওপর থেকে চাদরের মতাে বা পাতের মতাে বিশাল অঞ্চলজুড়ে মৃত্তিকার ক্ষয় হলে তাকে চাদর ক্ষয় বলে।
রিল ক্ষয় (Rillerosion): প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে মাটিতে নালার সৃষ্টি হলে সেই সূক্ষ্ম নালি বরাবর মাটি ধুয়ে গিয়ে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়, একে রিল ক্ষয় বা নালি ক্ষয় বলে।
খাত ক্ষয় (Gully erosion): প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ছােটো ছােটো নালিগুলি পরস্পর জুড়ে গিয়ে খাত সৃষ্টি হয় এবং এই খাত বরাবর যে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়, তাকে খাত ক্ষয় বলে।
রেভাইন ক্ষয় (Ravine erosion): যখন নালাগুলি খুব গভীর ও প্রশস্ত হয়ে পড়ে এবং ওই গভীর নালা বরাবর যে ক্ষয় হয়, তাকে রেভাইন ক্ষয় বলে।
2. বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে কয়: মরু অঞলে, বায়ুর অপসারণ ক্ষয় প্রক্রিয়ায় এক স্থানের মৃত্তিকা (বালুকণা, পলি ইত্যাদি) সহজেই অন্য জায়গায় উড়ে যায় এবং এর ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় ঘটে।
মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রভাব
মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রভাব গুলি হল—
1. প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর প্রভাব: ১ ভৌম জলস্তর নেমে যায়, ২ জলচক্রে ব্যাঘাত ঘটে, ৩ মৃত্তিকাথিত বিয়ােজকদের (যেমন—ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি) বাসভূমি নষ্ট হয়, ফলে খাদ্যশৃঙ্খল ব্যাহত হয়, ৪ নদীসহ অন্যান্য জলাশয়ের নাব্যতা হ্রাস পায়, ফলে বন্যার সম্ভাবনা দেখা যায়।
2. মানবিক পরিবেশের ওপর প্রভাব: ১ উর্বর মাটি ক্ষয় পাওয়ায় কৃষি উৎপাদন কমে যায়, ২ নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নৌচলাচলে অসুবিধা হয়, ৩ জলাভূমিগুলি (wetland) ক্ষয়প্রাপ্ত মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়, ফলে জলাভূমির বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়।
মৃত্তিকা ক্ষয়প্রবণ অঞ্চল
পার্বত্য অঞ্চল, উদ্ভিদশূন্য মালভূমি অঞ্চল, মরুভূমি অঞ্চল, সমুদ্র উপকূল ও নদীতীরবর্তী ভূভাগে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমাণ বেশি লক্ষ করা যায়।
1. কৃষি পদ্ধতি
(1) বনসৃজন অনুর্বর, পতিত জমি এবং পাহাড়ের ঢাল বরাবর যদি বৃক্ষরোপণ করা হয় তাহলে মৃত্তিকা ক্ষয় নিবারণ সম্ভব হয়, কারণ উদ্ভিদ তার শিকড়ের সাহায্যে মাটিকে ধরে রাখে।
(2) পশুচারণ নিয়ণ: যদি অতিরিক্ত পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে তৃণভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা শুয়া নিবারণ সম্ভব।
3 শস্যাবর্তন: শস্যাবর্তন অর্থাৎ সারাবছর ধরে কৃষিজমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসল চাষ করলে মৃত্তিকা কা কমে।
4) অরণ্যবলয় সৃষ্টি: কৃষিজমির চারিদিকে, সমুদ্র উপকূলে, বায়ুপ্রবাহের গতিপথে, মরুভূমির সীমানায় অরণ্যবলয় সৃষ্টি করলে মৃত্তিকা ক্ষয় হ্রাস পায়।
5) ঝুমচাষ নিষিদ্ধকরণ: জঙ্গল পুড়িয়ে ঝুমচাষ করা হলে উদ্ভিদের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মৃত্তিকার ক্ষয় হয়। তাই যদি ঝুমচাষ নিষিদ্ধ করা যায় তাহলে এর মাধ্যমে মৃত্তিকা ক্ষয়ের হ্রাস সম্ভব।
6) ধাপচাষ: পাহাড়ি অঞ্চলের ঢালু ভূমিতে ধাপ কেটে জমি সমতল করে কৃষিকাজ করলে মৃত্তিকা ক্ষয় রােধ করা যায়। ধাপ তৈরির ফলে প্রবহমান জলের গতি হ্রাস পায় এবং তার ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় রােধ করা সম্ভব হয়।
(7) সমােন্নতিরেখা বরাবর চাষ: পাহাড়ি ঢালু ভূমিতে সমােন্নতিরেখা বরাবর বাঁধ দিয়ে চাষ করলে প্রবহমান জলের গতি হ্রাস পায় এবং মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরােধ করা সম্ভব হয়।
8) ফালিচাষ: উদ্ভিদশূন্য ঢালু জমিতে, ঢালের আড়াআড়ি দিকে চওড়া ফিতের মতাে জমি তৈরি করে সেখানে মৃত্তিকা ক্ষয় নিরােধক শস্য, যথা—সিম, ডাল, চিনাবাদাম প্রভৃতি শস্য চাষ করলে মৃত্তিকা ক্ষয় নিয়ন্ত্রিত হয়।
9) জমি আচ্ছাদন: উদ্ভিদ বা শস্যের পরিত্যক্ত অংশ (যেমন—খড়, শিকড় প্রভৃতি) জমিতে ছড়িয়ে দিলে মৃত্তিকার আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং তার ফলে বায়ুপ্রবাহের আধিক্যযুক্ত অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমাণ হ্রাস করা যায়। উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশ যেমন—খড়, শস্যের শিকড় প্রভৃতি দ্বারা জমি আচ্ছাদনের এই পদ্ধতিকে মালচিং বলে।
2. কারিগরি পদ্ধতি
কৃত্রিম দেয়াল নির্মাণ : সমুদ্র উপকূলে বা নদীর তীরে কৃত্রিম দেয়াল তৈরি করলে জলপ্রবাহের দ্বারা সৃষ্ট মৃত্তিকা ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
নালা খনন: নালা কেটে নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করলে এবং মরুভূমিতে একাধিক জলাশয় তৈরি করলে মৃত্তিকা ক্ষয় নিবারণ সম্ভব হয়।
অন্যান্য পদ্ধতি: মৃত্তিকা ক্ষয় নিবারণ ও মৃত্তিকার উৎকর্ষতা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্ভব হয়।
● আবহবিকারের ফলে কী কী ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়?
আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ: আবহবিকার এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের শিলাসমূহ চূর্ণবিচূর্ণ অথবা বিয়ােজিত হয়ে সেই স্থানেই পড়ে থাকে। আবার ক্ষয়ীভবনের মাধ্যমে সেই সকল ক্ষয়িত পদার্থ স্থানান্তরিত হয়। সুতরাং, আবহবিকার এবং ক্ষয়ীভবন মিলিতভাবেই বিভিন্ন ধরনের ভূমিরূপ সৃষ্টি করে, যেমন—১. গ্র্যানাইটজাতীয় শিলা শল্কমােচন প্রক্রিয়ার দ্বারা গােলাকৃতি ধারণ করে এবং অনেকক্ষেত্রে গম্বুজাকৃতি ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। ২. ব্যাসাল্ট-জাতীয় শিলায় প্রস্তরচাই খণ্ডীকরণ প্রক্রিয়ায় চ্যাপটা আকৃতির হয়। 3 উয়-মরু অঞ্চলে ইনসেলবার্জ-জাতীয় অবশিষ্ট পাহাড় সৃষ্টি হয়। অনেকক্ষেত্রে এগুলি আরও বেশি আবহবিকার এবং ক্ষয়ীভবন দ্বারা মেসা, বিউট জাতীয় ভূমিরূপও সৃষ্টি করে। 4 আদ্র ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞলে অনেকসময় টর-জাতীয় ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়। 5 চুনাপাথরগঠিত অঞলে দ্রবণ এবং অঙ্গারযােজন প্রক্রিয়ার ফলে ভূ-অভ্যন্তরে গুহা, স্ট্যালাকটাইট, স্ট্যালাগমাইট, স্তম্ভ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে এরূপ অঞলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র বা সিঙ্ক হােলের মধ্য দিয়ে নদীর জল প্রবেশ করে ভূপৃষ্ঠে শুষ্ক নদী উপত্যকা বা অন্ধ নদী উপত্যকা সৃষ্টি করে। 5 পর্বতের পাদদেশে ট্যালাস বা স্ক্রি সঞ্চিত হয়ে প্রস্তরময় ভূমি বা ফেলসেনমার সৃষ্টি করে।
● আবহবিকার কীভাবে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ?
মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে আবহবিকারের ভূমিকা :
মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধিতে আবহবিকারের ভূমিকাগুলি হল— আবহবিকারের মাধ্যমে ১) সৃষ্ট শিলাচূর্ণ ভূত্বকের ওপর নরম আস্তরণ তৈরি করে, যাকে রেগােলিথ বলে। এই রেগােলিথ মধ্যস্থ খনিজগুলি বৃষ্টির জলের মাধ্যমে মাটির নীচের স্তরে যায় ও উদ্ভিদের প্রয়ােজনীয় পুষ্টি জোগান দেয়। ২) জৈব আবহবিকার প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদের শিকড় শিলাকে ফাটিয়ে দেয়। এ ছাড়া কেঁচো, ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণী মাটির গভীর পর্যন্ত গর্ত করে মাটিতে বায়ু চলাচলের সুযােগ করে দিয়ে মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি করে। 3) গাছের পাতা, ফুল, শিকড়, প্রাণীর দেহাবশেষ প্রভৃতি মাটির সাথে মিশে আবহবিকারের মাধ্যমে হিউমাস তৈরি করে। ওই হিউমাস মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।