অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর || অদ্ভুত আতিথেয়তা গল্প ||
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর || অদ্ভুত আতিথেয়তা গল্প ||
অদ্ভুত আতিথেয়তা
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
অদ্ভুত আতিথেয়তা গল্পের উৎস, সারাংশ, নামকরণ, প্রশ্ন উওর, MCQ, বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উওর আলোচনা করা হয়েছে।
অদ্ভুত আতিথেয়তা গল্পের উৎস:
উৎস: অদ্ভুত আতিথেয়তা’ শীর্ষক রচনাটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
অদ্ভুত আতিথেয়তা সারাংশ:
বিষয়সংক্ষেপঃ
একসময় আরবজাতির সঙ্গে মুরদের যুদ্ধ হয়েছিল। আরবসেনারা বহুদূর পর্যন্ত এক মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করছিল। মুরসেনাপতি প্রাণভয়ে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দ্রুতবেগে পালাতে লাগলেন। আরবসেনারা তাঁকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হলে, তিনি নিজের পক্ষের শিবিরের উদ্দেশে রওনা হলেন।
কিন্তু দিক ভুল করে শেষপর্যন্ত মুরসেনাপতি বিপক্ষের শিবিরে উপস্থিত হলেন। তিনি এতই ক্লান্ত ছিলেন যে, কোনোভাবেই তাঁর আর ঘোড়ার পিঠে চড়ে যাত্রা করার সামর্থ্য ছিল না। কিছুক্ষণ পরে, মুরসেনাপতি এক আরবসেনাপতির শিবিরে উপস্থিত হয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
পৃথিবীতে আতিথেয়তার বিষয়ে আরবজাতিই সেরা । কেউ আরবদের ঘরে এলে, তাঁরা সাধ্যমতো ওই ব্যক্তির সেবা করেন। এমনকি তিনি শত্রু হলেও আরবরা তাঁকে যথাযোগ্য সমাদর ও সম্মান করেন। তাই আরবসেনাপতি তক্ষুনি মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দিলেন।
মুরসেনাপতির খিদে, তেষ্টা ও ক্লান্তি দূর হলে বন্ধুর মতো উভয় সেনাপতির মধ্যে কথাবার্তা হতে লাগল। নিজেদের পূর্বপুরুষদের সাহস, পরাক্রম, সংগ্রাম-কৌশল প্রভৃতি বিষয় তাঁদের কথাবার্তায় উঠে এল। হঠাৎই আরবসেনাপতির মুখ শুকিয়ে গেল। তিনি তখনই সেখান থেকে চলে গেলেন।
অল্পসময় পরে মুরসেনাপতির উদ্দেশ্যে আরবসেনাপতি সংবাদ পাঠালেন যে, তিনি অসুস্থ, সেজন্য নিজে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। মুরসেনাপতির আহার ও শয্যা প্রস্তুত আছে, তিনি যেন তা গ্রহণ করেন। মুরসেনাপতির ঘোড়া ক্লান্ত, তাই কাল খুব ভোরে তাঁর জন্য এক দ্রুতগামী ঘোড়ার ব্যবস্থা করা থাকবে।
তিনি যেন সেই ঘোড়ায় চেপে নিজের শিবিরে ফিরে যান। যাওয়ার সময় দুজনের আবার দেখা হবে। আরবসেনাপতির এ ধরনের ব্যবহারে মুরসেনাপতি কিছুটা অবাক ও সন্দিহান হলেন। রাত্রিশেষে, আরবসেনাপতির লোক মুরসেনাপতির ঘুম ভাঙিয়ে তাঁর মুখ ধোওয়ার ও প্রাতরাশের ব্যবস্থা করে দিল।
মুরসেনাপতি নিজের শিবিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে বেরিয়ে দেখেন একটি সুসজ্জিত ঘোড়ার লাগাম ধরে দাঁড়িয়ে আছেন আরবসেনাপতি। তিনি জানালেন, আগের দিন রাতে মুরসেনাপতির কথা থেকে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী।
শত্রু হলেও তিনি সেই মুহূর্তে সূর্যোদয়ের আগেই যেন তিনি আরব শিবির ছেড়ে চলে যান। কারণ, তিনি তখন আর আরবসেনাপতির অতিথি থাকবেন না। আরবসেনাপতি তখন তাঁর পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তৎপর হবেন। এ কথা জানিয়ে তিনি সাদর সম্ভাষণ ও করমর্দন করে মুরসেনাপতিকে বিদায় দিলেন। সূর্য ওঠার পর আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির সন্ধানে বের হলেন।
তিনি অত্যন্ত দ্রুত মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করেন। কিন্তু তাঁকে নিজের শিবিরে প্রবেশ করতে দেখে আরবসেনাপতি বুঝলেন যে, শত্রুকে বধ করার প্রতিজ্ঞায় তিনি আর সফল হবেন না। তখন তিনি নিজের শিবিরে ফিরে গেলেন।
নামকরণ:
যে-কোনো সাহিত্যসৃষ্টির ক্ষেত্রেই নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাধারণত নামকরণের মধ্য দিয়েই লেখক আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে পাঠকদের একটা আগাম ধারণা দিয়ে থাকেন। লেখক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্যটিতে আতিথেয়তার ক্ষেত্রে আরব জাতির শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
আলোচ্য গল্পে যুদ্ধে ক্লান্ত এক মুরসেনাপতি দীর্ঘ পথ ঘোড়া ছুটিয়ে ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত হয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। শেষপর্যন্ত তিনি নিজের শিবিরের পরিবর্তে শত্রুপক্ষের শিবিরে উপস্থিত হলেন। এরকম আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে নিজের শিবিরে আশ্রয় দেন। তিনি মুরসেনাপতির সেবা যত্নের কোনো ত্রুটি রাখলেন না।
মুরসেনাপতি একটু সুস্থ হলে উভয়ের মধ্যে কথাবার্তার সময় আরবসেনাপতি বুঝতে পারলেন যে, এই মুরসেনাপতিই অতীতে তাঁর পিতাকে হত্যা করেছিলেন। মনের মধ্যে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ জেগে উঠলেও, আরবসেনাপতি তা প্রকাশ করলেন না।
কারণ, সেই মুহূর্তে ওই চরম শত্রু মুরসেনাপতি ছিলেন তাঁর অতিথি। আরবদের কাছে যেহেতু অতিথি দেবতার সমান, তাই আরবসেনাপতি নিজেকে সংযত রেখে শুধু সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন। পরে তিনি মুরসেনাপতির কাছে খবর পাঠালেন যে, তিনি অসুস্থ, তাই পরের দিন ভোরে আবার তাঁর সাথে দেখা করবেন।
বিদায় নেওয়ার সময় পর্যন্ত আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে অতিথির মর্যাদা দেন। তাঁর বিশ্রাম, আহার-পানীয়ের, এমনকি তাঁর জন্য সুসজ্জিত দ্রুতগামী ঘোড়ার বন্দোবস্তও করেন আরব সেনাপতি। যাওয়ার সময় আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে প্রকৃত সত্য জানান।
পিতার হত্যাকারী হলেও শুধু অতিথির প্রতি কর্তব্যের কারণেই যতক্ষণ মুরসেনাপতি আরব শিবিরে ছিলেন ততক্ষণ তাঁকে সাহায্য করেন আবরসেনাপতি। এমনকি
মুরসেনাপতিকে শিবির থেকে পালাতেও সাহায্য করেন। অবশেষে সূর্যোদয়ের পরে মুরসেনাপতি শিবির থেকে বেরিয়ে গেলে আরবসেনাপতি তাঁর পিছু নেন। কারণ মুরসেনাপতি তখন আর আরবসেনাপতির অতিথি ছিলেন না।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে লেখক আরবসেনাপতির ধৈর্য, সৌজন্য, ভদ্রতা এবং সর্বোপরি অতিথিপরায়ণতার পরিচয় দিয়েছেন।
তাঁর এই অতি প্রশংসনীয় ও আশ্চর্য অতিথিসেবাকেই লেখক অদ্ভুত আতিথেয়তা বলেছেন। তাই বলা যায়, গল্পের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা” নামকরণটি সব অর্থেই সার্থক ও যথাযথ হয়েছে।
অদ্ভুত আতিথেয়তা ছোট প্রশ্ন উত্তর :
অদ্ভুত আতিথেয়তা: হাতেকলমে’র সমাধান
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও ৷
১.১ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন্ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ?
উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
১.২ তাঁর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্রের রচিত দুটি গ্রন্থের নাম ‘আখ্যানমঞ্জুরী’ ও ‘বোধোদয়’
নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও ।
২.১ ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে কোন্ কোন্ সেনাপতির প্রসঙ্গ রয়েছে?
উত্তর: অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনাপতি ও মুরসেনাপতির প্রসঙ্গ রয়েছে।
২.২ “তিনি, এক আরবসেনাপতির পটমণ্ডপদ্বারে উপস্থিত হইয়া, আশ্রয়-প্রার্থনা করিলেন।”—উদ্ধৃতাংশে ‘তিনি’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: [:‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে গৃহীত আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ‘তিনি’ বলতে আরব শিবিরে উপস্থিত মুরসেনাপতির কথা বোঝানো হয়েছে।
২.৩ “উভয় সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল।”——উভয় সেনাপতি’ বলতে এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আলোচ্য গল্পে ‘উভয় সেনাপতি’ বলতে এখানে আরবসেনাপতি ও মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
২.৪ “তাহা হইলে আমাদের উভয়ের প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা । ” — প্রাণরক্ষার কোন্ উপায় বক্তা এক্ষেত্রে বলেছেন ?
উত্তর: আরবসেনাপতি যে ঘোড়াটি মুরসেনাপতিকে দিয়েছেন সেই ঘোড়ায় চড়ে মুরসেনাপতি যদি দ্রুতবেগে চলে যেতে পারেন, তাহলে আরবসেনাপতি ও মুরসেনাপতি উভয়েরই প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা আছে বলে বক্তা জানিয়েছেন।
২.৫ “আপনি সত্বর প্রস্থান করুন”প্রস্থান’ করার নির্দেশ দিলেন ? ”বক্তা কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে ‘সত্বর
উত্তর: সূর্যোদয়ের পর মুরসেনাপতি আর আরবসেনাপতির অতিথি থাকবেন না, তাই তখন মুরসেনাপতির ওপর প্রতিশোধ নিতে আরবসেনাপতির আর কোনো বাধা থাকবে না—এ কারণেই আরব সেনাপতি মুরসেনাপতিকে সূর্যোদয়ের আগেই পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অদ্ভুত আতিথেয়তা: নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো ।
৩.১ “তাঁহার দিভ্রম জন্মিয়াছিল।”—এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? দিগ্ভ্রম হওয়ার পরিণতি কী হল ?
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
→ দিগ্ভ্রম হওয়ার পরিণতি: মুরসেনাপতিকে আরবসেনারা অনেক দূর পর্যন্ত অনুসরণ করলে তিনি প্রাণভয়ে দ্রুতবেগে পালাতে থাকেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি পথ ভুল করে বিপক্ষের শিবিরে এসে উপস্থিত হন। ক্লান্ত অবস্থায় তিনি আরবসেনাপতির তাঁবুতে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
৩.২ “আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনও জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে।”—এই বক্তব্যের সমর্থন গল্পে কীভাবে খুঁজে পেলে ?
উত্তর: আরবদের আতিথেয়তার নিদর্শন: ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আমরা দেখলাম যে, আরবসেনাপতি তাঁর ঘোরতর শত্রু ও পিতার হত্যাকারী মুরসেনাপতিকে সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় পেয়েও প্রতিশোধ নেননি।
এর কারণ হল তিনি ওই মুরসেনাপতিকে অতিথির মর্যাদা দিয়েছিলেন। আরবদের জাতীয় ধর্মই হল প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হলেও অতিথির অনিষ্ট চিন্তা না করা। এই গল্পটি তাই আতিথেয়তা বিষয়ে আরবদের শ্রেষ্ঠত্বেরই নিদর্শন।
অদ্ভুত আতিথেয়তা বড় প্রশ্ন উত্তর :
৩.৩ “সহসা আরবসেনাপতির মুখ বিবর্ণ হইয়া গেল।”— আরবসেনাপতির মুখ হঠাৎ বিবর্ণ হয়ে ওঠার কারণ কী ?
উত্তর: মুখ বিবর্ণ হয়ে ওঠার কারণ : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে শত্রুপক্ষ আরবসেনাপতির শিবিরে আশ্রয়প্রার্থী মুরসেনাপতি জল, আহার ও বিশ্রাম গ্রহণের পর কিছুটা সুস্থ হন।
তারপর উভয় সেনাপতি কথাবার্তা শুরু করেন। তাঁদের গল্পের বিষয় ছিল পূর্বপুরুষদের সাহস, পরাক্রম, সংগ্রাম-কৌশল ইত্যাদি। কথাবার্তার সময় আরবসেনাপতি বুঝতে পারেন যে, এই মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী। কিন্তু তখনই আরবসেনাপতির পক্ষে প্রতিশোধ গ্রহণ সম্ভব ছিল না।
কারণ, সেই মুহূর্তে মুরসেনাপতি ছিলেন তাঁর অতিথি। এই কারণেই মনের যন্ত্রণায় আরবসেনাপতির মুখ বিবর্ণ হয়ে ওঠে।।
৩.৪ “সন্দিহানচিত্তে শয়ন করিলেন।”—এখানে কার মনের সন্দেহের কথা বলা হয়েছে? তাঁর মনের এই সন্দেহের কারণ কী ?
উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে মুরসেনাপতির মনের সন্দেহের কথা এখানে বলা হয়েছে।
→ সন্দেহের কারণ: আরবসেনাপতির শিবিরে বিশ্রাম নিয়ে ও খাদ্যগ্রহণ করে মুরসেনাপতি কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর উভয় সেনাপতি কথাবার্তা বলতে লাগলেন। তাঁরা তাঁদের পূর্বপুরুষদের সাহস, পরাক্রম ও সংগ্রামকৌশল বিষয়ে কথা বলছিলেন।
আরবসেনাপতির অদ্ভুত আচরণ; কথা বলার সময় হঠাৎই আরবসেনাপতি বিবর্ণ মুখে সেখান থেকে উঠে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি মুরসেনাপতিকে বলে পাঠালেন যে, তিনি অসুস্থ, তাই উপস্থিত থেকে অতিথির সেবা করতে পারছেন না।
মুরসেনাপতির জন্য আহার ও শয্যা প্রস্তুত আছে। পরের দিন ভোরে তাঁর যাত্রার জন্য একটি তেজি ঘোড়াও প্রস্তুত থাকবে। যাওয়ার সময় আরবসেনাপতি তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। আরবসেনাপতির এরকম অদ্ভুত আচরণের কারণ বুঝতে না পেরে মুরসেনাপতির মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল।
৩.৫ “…তাঁহার অনুসরণ করিতেছিলেন…” – কে, কাকে অনুসরণ করছিলেন? তাঁর এই অনুসরণের কারণ কী ?
উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্যে আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করছিলেন।
• অনুসরণের কারণ: আরবসেনাপতি জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁর অতিথি মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী। কিন্তু অতিথির ক্ষতিসাধন আরবদের ধর্মবিরুদ্ধ কাজ। তাই নির্বিঘ্নে রাত কাটানোর পর মুরসেনাপতি যখন আরবসেনাপতির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের শিবিরের দিকে রওনা দিলেন, তখন পিতৃহত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তিনি মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করেছিলেন।
অদ্ভুত আতিথেয়তা: প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
৪.১ “যাহাতে আপনি সত্বর প্রস্থান করিতে পারেন, তদবিষয়ে যথোপযুক্ত আনুকূল্য করিব।”
উত্তর: প্রসঙ্গ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে অতিথিপরায়ণ আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে এই কথাটি বলে পাঠিয়েছিলেন। যখন
তাৎপর্য: শত্রুপক্ষের সেনাপতি হলেও বিপদগ্রস্ত, খিদে-তেষ্টায় ক্লান্ত মুরসেনাপতিকে অতিথি হিসেবে নিজের শিবিরে আশ্রয় দিয়েছিলেন আরবসেনাপতি। পারস্পরিক কথাবার্তার সময় তিনি জানতে পারেন, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী।
কিন্তু তারপরেও তিনি তাঁর অতিথিসেবার ধর্ম থেকে সরে আসেননি। মনের রাগ-হিংসা সরিয়ে রেখে তিনি অতিথির সেবা করেছেন। এমনকি তিনি ক্লান্ত ঘোড়ার বদলে সুসজ্জিত ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ঘোড়া দিয়ে মুরসেনাপতিকে নিরাপদে নিজ শিবিরে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন।
৪.২ “এই বিপক্ষ শিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর নাই।”
উত্তর: প্রসঙ্গ:/বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে খুব ভোরে মুরসেনাপতিকে বিদায় জানানোর সময় তাঁকে একটি দ্রুতগামী ঘোড়ার পিঠে বসিয়ে আরবসেনাপতি এই কথাটি বলেছিলেন।]
তাৎপর্য: মুরসেনাপতি বিপক্ষ দলের হলেও আরবসেনাপতি একজন বিপদগ্রস্ত অতিথি হিসেবে তাঁকে নিজের শিবিরে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কারণ, আরবজাতির কাছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হল অতিথিসেবা। কিন্তু কথাবার্তার সময় আরবসেনাপতি জানতে পারেন, এই মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী।
তখন আরবসেনাপতি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, সূর্যোদয় হলে পিতার হত্যাকারীকে বধ করে তিনি প্রতিশোধ নেবেন। তাই তিনি বলেছিলেন যে, এই বিপক্ষ-শিবিরের মধ্যে মুরসেনাপতির সবচেয়ে বড়ো শত্রু স্বয়ং আরবসেনাপতিই।
___8.৩ “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই, প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হইলেও, অতিথির অনিষ্ট চিন্তা করি না।”
উত্তর: প্রসঙ্গ: বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনাপতি আরবজাতির অতিথিপরায়ণতার বিষয়ে এই কথাটি মুরসেনাপতিকে বলেছিলেন।
তাৎপর্য: আতিথেয়তার বিষয়ে আরবজাতিই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। কেউ অতিথি রূপে আরবদের আশ্রয়প্রার্থী হলে তাঁরা সাধ্যমতো ওই ব্যক্তির সেবা করেন। সে ব্যক্তি শত্রু হলেও আরবরা তার প্রতি এতটুকুও অনাদর বা বিদ্বেষ দেখান না।
আলোচ্য গল্পে সেই ঐতিহ্য মেনেই আরবসেনাপতি শত্রুদলের সেনাপতিকেও অতিথিরূপে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাঁর যথাসাধ্য সেবাযত্ন করেছেন। এমনকি, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী—এই সত্যি জেনেও তিনি অতিথিসেবার ধর্ম থেকে সরে আসেননি।
মুরসেনাপতির বিদায়কালে আরবসেনাপতি নিজ জাতির আতিথেয়তা বিষয়ে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন ।
অদ্ভুত আতিথেয়তা: ৫. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো ।
১ গল্পে কার আতিথেয়তার কথা রয়েছে? তিনি কীভাবে অতিথির আতিথেয়তা করেন? তাঁর সেই আতিথেয়তাকে ‘অদ্ভুত’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে কেন ?
. উত্তর বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনাপতির আতিথেয়তার কথা রয়েছে।
→ অতিথির আতিথেয়তা: আরবজাতি আতিথেয়তার বিচারে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। আলোচ্য গল্পে উল্লিখিত আরবসেনাপতি সেই আরবজাতিরই একজন। তাই বিপক্ষ দলের হলেও ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত ও আশ্রয়প্রার্থী মুরসেনাপতিকে আরবসেনাপতি সহজেই নিজ শিবিরে জায়গা দিয়েছিলেন।
তিনি মুরসেনাপতির বিশ্রাম, আহার, এমনকি নিরাপদে নিজের শিবিরে ফিরে যাওয়ার জন্য তেজস্বী ঘোড়ারও বন্দোবস্ত করেছিলেন। এইভাবেই আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির আতিথেয়তা করেছিলেন
→ ‘অদ্ভুত’ আখ্যা দেওয়ার কারণ: আশ্রয়প্রার্থী মুরসেনাপতি তাঁর পিতাকে হত্যা করেছেন জেনেও আরবসেনাপতি নিজ কর্তব্যে স্থির থেকে অতিথির সেবা করেছেন। তিনি পরম শত্রুকে হাতের কাছে পেয়েও প্রতিশোধ নেওয়ার চেয়ে অতিথিসেবাকেই কর্তব্য বলে মনে করেছিলেন। তাই তাঁর আতিথেয়তাকে ‘অদ্ভুত’ বা আশ্চর্যজনক বলা হয়েছে।
৫.২ “আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনো জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে।”—গল্পের ঘটনা বিশ্লেষণ করে মন্তব্যটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো ।
উত্তর: (উদ্ধৃত অংশটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’গল্প থেকে গৃহীত।
আলোচ্য গল্পে এক মুরসেনাপতি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে গিয়ে দিক ভুলে বিপক্ষ শিবিরে অর্থাৎ আরবদের শিবিরে এসে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি শত্রুশিবিরে আশ্রয় লাভ করেন এবং খাদ্য ও পানীয় সহযোগে বিশ্ৰাম করেন। তারপর মুর ও আরবসেনাপতির মধ্যে কথাবার্তার সময় স্পষ্ট হয় যে, মুরসেনাপতিই আরবসেনাপতির পিতার হত্যাকারী।
এই সত্যি জেনেও আরবসেনাপতি চুপ করেছিলেন। কারণ মুরসেনাপতি ছিলেন তাঁর অতিথি। তবে আরবসেনাপতি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, পরদিন সূর্যোদয়ের পর মুরসেনাপতি শিবির থেকে বেরিয়ে গেলেই তিনি তাঁকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করবেন।
মুরসেনাপতি তাঁর পিতার হত্যাকারী জেনেও যথাযথ অতিথিসেবায় কোনো ত্রুটি রাখেননি আরবসেনাপতি। এখানেই উদ্ধৃত মন্তব্যটির সার্থকতা।
৫.৩ “বন্ধুভাবে উভয় সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল।” –কোন্ দুই সেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে? তাঁদের কীভাবে সাক্ষাৎ ঘটেছিল? উভয়ের কথোপকথনের সারমর্ম নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
উত্তর: উদ্দিষ্ট সেনাপতিদ্বয় : উদ্ধৃত অংশটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে গৃহীত হয়েছে। এখানে দুই সেনাপতি বলতে আরবসেনাপতি ও মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
→ সাক্ষাতের প্রেক্ষাপট: আরবসেনারা মুরসেনাপতির পিছু নিলে তিনি পালানোর সময়ে দিক ভুল করে আরবশিবিরে এসে হাজির হন। ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত মুরসেনাপতি আরবসেনাপতির কাছে আশ্রয়ভিক্ষা চাইলে তিনি সেই প্রার্থনা মঞ্জুর করেন এবং মুরসেনাপতিকে নিজের শিবিরে আশ্রয় দেন। এইভাবে দুই সেনাপতির সাক্ষাৎ ঘটে।
→ কথোপকথনের সারমর্ম: আরবশিবিরে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের ফলে মুরসেনাপতির ক্লান্তি অনেকখানি দূর হলে উভয় সেনাপতি বন্ধুর মতো গল্প করতে থাকেন। নিজেদের এবং পূর্বপুরুষদের সাহস ও লড়াইয়ের বিষয়ে তারা গল্প করতে থাকেন।
সেই সময় আরবসেনাপতি জানতে পারেন যে, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ কথা জানতে পেরেও আরবসেনাপতি তাঁকে আক্রমণ না করে অতিথিধর্ম পালন করেন এবং সেখান থেকে উঠে যান।
৫.৪ “তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশ স্থানে উপস্থিত হইলেন।”—কার কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তিনি স্বপক্ষের শিবিরে নির্বিঘ্নে পৌঁছোলেন? তাঁর জীবনের এই ঘটনার পূর্বরাত্রের অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় আলোচনা করো ।
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি; ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ রচনাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশটিতে মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
→ স্বপক্ষীয় শিবিরে পৌঁছানোর বৃত্তান্ত : আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে যে ঘোড়াটি দিয়েছিলেন, তা আরবসেনাপতির ঘোড়ার মতোই সবল এবং দ্রুতগামী ছিল। সূর্যোদয়ের কয়েক মুহূর্ত আগে মুরসেনাপতি সেই ঘোড়ায় চড়ে রওনা দিয়েছিলেন।
তাই সূর্যোদয়ের পরে মুরসেনাপতির পিছু নিয়েও আরবসেনাপতি তাঁকে ধরতে পারেননি। ফলে মুরসেনাপতি নির্বিঘ্নেই নিজের শিবিরে পৌঁছেছিলেন।
→ পূর্বরাত্রের অভিজ্ঞতা: নির্বিঘ্নে নিজের শিবিরে পৌঁছোনোর আগের রাতটা ছিল মুরসেনাপতির জীবনের এক ঘটনাবহুল এবং স্মরণীয় রাত তাঁকে আরব সৈন্যরা অনুসরণ করলে তিনি প্রাণভয়ে পালান।
কিন্তু প্রাণে বাঁচলেও তাঁর দিগ্ভ্রম ঘটে। শ্রান্ত ক্লান্ত অবস্থায় মুরসেনাপতি এসে হাজির হন বিপক্ষীয় আরব শিবিরে। তবে আরবদের আতিথেয়তার কারণেই তাঁকে বন্দি করা হয়নি। আরবসেনাপতি নিজে এসে মুরসেনাপতির সঙ্গে বন্ধুর মতো গল্প করতে থাকেন।
এই কথোপকথনের সময়েই আরবসেনাপতি জানতে পারেন যে, তাঁর পিতার হত্যাকারী আসলে এই মুরসেনাপতি নিজেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও আতিথেয়তার কোনো ত্রুটি রাখেন না আরবসেনাপতি। পরদিন সূর্যোদয়ের আগে আরবসেনাপতির কথায় মুরসেনাপতি তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। কিন্তু আরবসেনাপতির উদারতায় শেষপর্যন্ত তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
৫.৫ “তাঁহার অনুসরণ করিতেছিলেন….. কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কাকে অনুসরণ করছিলেন? তাঁর এই অনুসরণের কারণ কী ? শত্রুকে কাছে পেয়েও তিনি ‘বৈরসাধন সংকল্প’ সাধন করেননি কেন ?
উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃত অংশটিতে আরবসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করছিলেন ।
• অনুসরণের কারণ: আরবসেনাপতি বিপন্ন ও ক্লান্ত মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দান করেন এবং তাঁর সঙ্গে বন্ধুর মতো আলাপচারিতা করতে থাকেন। তখনই তিনি জানতে পারেন যে, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী।
আরবদের আতিথেয়তার রীতি মেনে তিনি সেই মুহূর্তে তাঁর পিতৃহত্যাকারীকে আক্রমণ করেননি। কিন্তু পরের দিন মুরসেনাপতি আরব শিবির ছেড়ে বেরোনোর পর আরবসেনাপতি পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করেন।
→ বৈরসাধন সংকল্প’ সাধন না করার কারণ: শত্রু মুরসেনাপতিকে হাতের মুঠোয় পেয়েও আরবসেনাপতি তাঁকে আক্রমণ করেননি। কারণ মুরসেনাপতি ছিলেন তাঁর অতিথি। কেউ অতিথি হিসেবে আরবদের কাছে এলে তাঁরা যথাসাধ্য তাঁর সেবা করেন। চরম শত্রুর প্রতিও তারা কোনোপ্রকার বিদ্বেষ প্রকাশ বা আক্রমণ করেন না ।
৬.নীচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করে মুক্তদল ও রুদ্ধদল চিহ্নিত করো—সংগ্রাম, অশ্বপৃষ্ঠ, দণ্ডায়মান, করমর্দন, তৎক্ষণাৎ ।
উত্তর: . সংগ্রাম—সং (রুদ্ধ) · গ্রাম্ (রুদ্ধ)
) ; . . → অশ্বপৃষ্ঠ—অশ্ (রুদ্ধ) : শো (মুক্ত) পৃ (রুদ্ধ) . ঠো (মুক্ত)
দণ্ডায়মান—দন্ (রুদ্ধ) · ডা (মুক্ত) · য় (মুক্ত) · মান্ (রুদ্ধ)
করমর্দন—ক (মুক্ত) · রো (মুক্ত) · মর্ (রুদ্ধ) · দন্ (রুদ্ধ )
তৎক্ষণাৎ—তৎ (রুদ্ধ) · ক্ষ (মুক্ত) · ণাৎ (রুদ্ধ ) . . .
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করে।।
৭.১ আরবেরা তাঁহার অনুসরণে বিরত হইলে, তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশে গমন করিতে লাগিলেন। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: যখন আরবেরা তাঁহার অনুসরণে বিরত হইল, তখন তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশে গমন করিতে লাগিলেন ।
৭.২ আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনও জাতিই আরবদিগের তুল্য (ইতিবাচক বাক্যে) নহে।
উত্তর: আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীর সব জাতি অপেক্ষা আরবজাতি অতুলনীয় ।
৭.৩ দ্বারদেশে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, তিনি সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: তিনি দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন এবং দেখিলেন সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন।
৭.৪ এই বিপক্ষশিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর নাই। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: এই বিপক্ষশিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর কে আছে?
৭.৫ তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইলেন। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর: স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইতে তিনি কোনোপ্রকার বিঘ্নের সম্মুখীন হইলেন না।
অদ্ভুত আতিথেয়তা প্রশ্ন উত্তর mcq :
অদ্ভুত আতিথেয়তা — বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন [MCQ] ও উত্তর
(ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো )
১. কোন্ গ্রন্থ থেকে ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা গল্পটি নেওয়া হয়েছে।
ক) শকুন্তলা খ) সীতার বনবাস গ) আখ্যানমঞ্জরী (ঘ) কথামালা
উওর:- আখ্যানমঞ্জরী
২. আরবদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল-
ক) নিগ্রোদের খ ) মুরদের গ) আর্যদের ঘ) দ্রাবিড়দের।
উওর:- খ ) মুরদের
৩. মুররা হল ___ কৃষ্ণকায় জাতি।
ক) দক্ষিণ আমেরিকার খ) উত্তর আমেরিকার (গ) আফ্রিকার (ঘ) এশিয়ার।
উওর:- (গ) আফ্রিকার
৪. “প্রাণভয়ে দ্রুতবেগে পলায়ন করিতে লাগিলেন”-
ক) মুর সেনাপতি (খ) আরব সেনাপতি (গ) আরব সেনারা (ঘ) মুর জাতিরা [
উত্তর:- ক) মুর সেনাপতি
৫. দিগ্ভ্রম হয়েছিল-
ক) মুরসেনাপতির (খ) আরবসেনাপতির (গ) গ্রিকসেনাপতির।
উওর:- ক) মুরসেনাপতির
৬. “তিনি বিপক্ষের শিবিরসন্নিবেশস্থাপনে উপস্থিত হইলেন । বিপক্ষ শিবিরে প্রবেশ করলে- ক) আতিথেয়তা লাভের সম্ভাবনা থাকে (খ) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে গ) নিজ শিবিরে প্রত্যাবর্তনের ঠিক পথ জানার সম্ভাবনা থাকে ঘ) নিজ দলের সৈন্যদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
উওর:-(খ) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭. “আরবসেনাপতির পটমণ্ডপদ্বারে উপস্থিত হইয়া, আশ্রয়-প্ৰাৰ্থনা করিলেন।”—‘পটমণ্ডপদ্বারে’ শব্দের অর্থ—
(ক) শিবিরে খ) যুদ্ধক্ষেত্রে গ) তাঁবুর দরজায় ঘ) আরবদের আলয়ে ।
উত্তর:-গ) তাঁবুর দরজায়।
প্রার্থনা করেছিল। (ক) খাদ্য (খ) জল
৮. মুরসেনাপতি ___ প্রার্থনা করেছিল।।
ক) খাদ্য (খ) জল গ)আশ্রয় (ঘ) বাসস্থান
উওর:- গ)আশ্রয়।
ঘ) নিপুণ যোদ্ধা
৯. আরবজাতি অতিশয়- ক) ধূর্ত (খ) সাহসী গ )অতিথি-পরায়ণ ঘ) নিপুণ যোদ্ধা
উওর:- গ )অতিথি-পরায়ণ।
১০. আতিথেয়তার ক্ষেত্রে পৃথিবীতে কোন্ জাতি অতুলনীয়? ক) মুর খ) আরব (গ) ফরাসি (ঘ) ইংরেজ ।
উওর:- খ) আরব।
১১. “তাঁহারা সাধ্যানুসারে তাহার পরিচর্যা করেন”—তাহার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
ক) শত্রুকে খ) আশ্রয়দাতাকে গ) আশ্রয়প্রার্থীকে (ঘ) বন্ধুকে ।
উত্তর:- গ) আশ্রয়প্রার্থীকে।
১২. মুরসেনাপতি ও আরবসেনাপতি কী বিষয়ে গল্প করছিলেন?
ক) তাঁদের শৈশব খ) পূর্বপুরুষদের বীরত্ব—গ) সেনাদের বীরত্ব ঘ) আতিথেয়তা
উওর:- খ) পূর্বপুরুষদের বীরত্ব।
১৩. এই সময়ে সহসা আরবসেনাপতির ___ মুখ
হইয়া গেল।
ক) বিবর্ণ (খ) রক্তবর্ণ (গ) পীতবর্ণ
উওর:- ক) বিবর্ণ।
১৪. “তবিষয়ে যথোপযুক্ত আনুকূল্য [বীরভূম জিলা স্কুল] করিব।”—বক্তা-
(ক) মুরসেনাপতি (খ) আরবসেনাপতি (গ) আরবসেনাপতির পিতা (ঘ) মুরসেনাপতির পিতা
উওর:- গ) আরবসেনাপতির পিতা।
অদ্ভুত আতিথেয়তা : অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. কোন্ বিষয়ে কোনো জাতি আরবদের তুল্য নয় ?
আতিথেয়তা বিষয়ে কোনো জাতি আরবদের তুল্য নয়।
২. বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মধুসূদনের লেখা একটি সনেট জাতীয় কবিতার নাম লেখো।
‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ এবং ‘পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’এই দুটি মধুসুদন রচিত সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা।
৩. আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থটি কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় ?
‘আখ্যানমঞ্জরী’ গ্রন্থটি ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় ।
৪. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে কোন্ কোন্ সেনাপতির প্রসঙ্গ আছে?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনাপতি ও মুরসেনাপতির প্রসঙ্গ আছে।
৫. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্যে কোন্ কোন্ জাতির বৈরিতার কথা বলা হয়েছে?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্যে আরবজাতি ও মুরজাতির বৈরিতার কথা বলা হয়েছে।
৬. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে কোন্ জাতির আতিথেয়তার পরিচয় পাওয়া যায়?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবজাতির আতিথেয়তার পরিচয় পাওয়া যায়।
৭. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ আখ্যানটি কোন্ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ আখ্যানটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘আখ্যানমঞ্জরী’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
৮. ‘তাঁহার দিভ্রম জন্মিয়াছিল’—কার ?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে উদ্ধৃত উক্তির মাধ্যমে মুরসেনাপতির দিগ্ভ্রম হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
৯. মুরসেনাপতি কোথায় উপস্থিত হয়ে কী প্রার্থনা করলেন?
মুরসেনাপতি আরবসেনাপতির শিবিরের দ্বারে উপস্থিত হয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করলেন।
১০. মুরসেনাপতি কেন বিপক্ষ শিবিরে উপনীত হয়েছিলেন?
আরবসেনার হাত থেকে পালানোর সময় দিক ভুল করে মুরসেনাপতি বিপক্ষ শিবিরে উপনীত হন এবং সেখানে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
১১. কোন্ বিষয়ে আরব জাতিরা পৃথিবীতে অতুলনীয় ?
আতিথেয়তা বিষয়ে আরব জাতিরা পৃথিবীতে অতুলনীয় ।
১২. “তাঁহারা সাধ্যানুসারে তাহার পরিচর্যা করেন;”—উদ্ধৃতাংশে কাদের পরিচর্যার কথা বলা হয়েছে?
উদ্ধৃতাংশে আরবজাতির অতিথি-পরিচর্যার কথা বলা হয়েছে।
১৩. “সহসা আরবসেনাপতির মুখ বিবর্ণ হইয়া গেল।”আরবসেনাপতির মুখ কেন বিবর্ণ হয়ে গেল ?
[] আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির সঙ্গে কথোপকথনের সময় জানতে পারেন যে, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী। তাই আরবসেনাপতির মুখ বিবর্ণ হয়ে যায় ।
১৪. “পটমণ্ডপের দ্বারদেশে দণ্ডায়মান থাকিবেক।” ”–কে দাঁড়িয়ে থাকবে ?
আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে কথা দিয়েছিলেন যে, তাঁর নিজের শিবিরে নিরাপদে ফেরার জন্য ভোরবেলা একটি অশ্ব তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবে
অদ্ভুত আতিথেয়তা:ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরবসেনারা মুরসেনাপতিকে অনুসরণ করলে তিনি প্রাণভয়ে দ্রুতবেগে পালাতে থাকেন। যুদ্ধে ক্লান্ত মুরসেনাপতি দীর্ঘ পথ ঘোড়ায় চড়ে আসার কারণে খিদে ও তেষ্টায় দুর্বল হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় তিনি নিজের শিবিরের দিকে রওনা হলেও পথ ভুলে যান এবং দিক স্থির করতে না পেরে বিপক্ষের শিবিরে উপস্থিত হন।
৩. অতিথিদের প্রতি আরবজাতি কেমন আচরণ করে?
গ) আতিথেয়তার বিচারে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি হল আরবজাতি। কোনো অতিথি আরবদের গৃহে উপস্থিত হলে তাঁরা সাধ্যানুসারে সেই অতিথির পরিচর্যা বা আপ্যায়ন করেন। এমনকি সেই ব্যক্তি আরবদের শত্রু হলেও তাঁরা তাঁদের প্রতি কোনোরূপ অনাদর বা বিদ্বেষ প্রদর্শন করেন না।
৪. আরবসেনাপতি কীভাবে অতিথির আতিথেয়তা করেন ?
→ আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে বিপদের সময় আশ্রয় দিয়েছিলেন। ক্ষুধা-তৃয়ায় কাতর মুরসেনাপতির জন্য খাদ্য পানীয় ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করেছিলেন। পরদিন সকালে দ্রুত নিজের শিবিরে পৌঁছানোর জন্য আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে দ্রুতগামী অশ্বও দিয়েছিলেন।
৫. আরব ও মুরসেনাপতি কী বিষয়ে কথোপকথন করছিলেন ?
মুরসেনাপতি আরবসেনাপতির শিবিরে খাদ্যগ্রহণ এবং বিশ্রাম নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হলে উভয় সেনাপতি বন্ধুর মতো কথাবার্তায় মগ্ন হন। নিজেদের পূর্বপুরুষদের সাহস, পরাক্রম ও সংগ্রাম-কৌশল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাঁদের কথাবার্তা হয়েছিল।
৬. সহসা আরব সেনাপতির মুখ বিবর্ণ হয়ে ওঠার কারণ কী ?
মুরসেনাপতি পথ ভুল করে আরবসেনাপতির কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। শত্রু হওয়া সত্ত্বেও আরবসেনাপতি তাঁকে আশ্রয় দেন ও অতিথি হিসেবে যত্ন করেন। কিন্তু দুজনের কথোপকথনের সময় আরবসেনাপতি জানতে পারেন যে, মুরসেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী। এই কথা শোনামাত্র আরবসেনাপতির মুখ বিবর্ণ হয়ে ওঠে।
৭. ‘তদবিষয়ে যথোপযুক্ত আনুকূল্য করিব।’—বক্তা কোন বিষয়ে, কেন যথোপযুক্ত আনুকূল্য করার প্রতিশ্রুতি দিলেন?
বক্তার প্রতিশ্রুতি : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা” আখ্যানে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন আরবসেনাপতি। আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, পরদিন ভোরবেলা যাতে মুরসেনাপতি নিজের শিবিরে পৌঁছোতে পারেন, তার সব ব্যবস্থা তিনি করে দেবেন।
প্রতিশ্রুতির কারণ: আরবজাতি অতিথি সেবা সম্পর্কে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। শত্রু হলেও মুরসেনাপতি আরবসেনাপতির আশ্রিত। তাই তাঁর কোনো ক্ষতি করেননি আরবসেনাপতি। বরং তাঁর নির্বিঘ্নে শিবিরে পৌঁছোনোর ব্যবস্থা করতে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
অদ্ভুত আতিথেয়তা mcq:
অদ্ভুত আতিথেয়তা: 多 বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন [MCQ] ও উত্তর (ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো
১. আরবসেনাপতির লোক তাঁহার নিদ্রাভঙ্গ করাইল- ক) মধ্যরাতে খ) দিবাবসানে গ) রজনীশেষে।
উওর:- গ) রজনীশেষে।
২. আরবসেনাপতি কার মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন?
ক) অশ্বের খ ) গজের গ) রথের (ঘ) চতুর্দোলার
উওর:- ক) অশ্বের।
৩. “তিনি সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন।” এখানে ‘তিনি’ হলেন—
(ক) মুরসেনাপতি (খ) আরবসেনাপতি গ) আরবসেনাপতির পিতা ঘ) মুরসেনাপতির পিতা
উওর:- আরবসেনাপতি।
৪. মুরসেনাপতি ফিরে যাওয়ার জন্য আরবসেনাপতির কাছ থেকে কী পেয়েছিলেন? (ক) ঘোড়া (খ) হাতি (গ) রথ (ঘ) নৌকা
উওর:- (ক) ঘোড়া।
৫. “আপনি তাড়াতাড়ি প্রস্থান করুন” –‘তাড়াতাড়ি’ শব্দের বদলে পাঠ্যে কোন্ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে? —
ক দেরি না করে খ) অনতিবিলম্বে । গ ) সত্বর (ঘ) জলদি।
উত্তর:-গ ) সত্বর।
৬. কে • আরবসেনাপতির পিতাকে হত্যা করেছিলেন— ক) মুরসেনাপতি খ) মুরসেনাপতির বন্ধু গ মুরসেনাপতির পূর্বপুরুষ ঘ) মুরসেনাপতির সৈন্য
উওর:- ক) মুরসেনাপতি।
৭. “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই”-
ক) অতিথির পরিচর্যা করি, না খ) অতিথির সমাদর করি না গ)অতিথির অনিষ্টচিন্তা করি না ঘ) অতিথির প্রাণরক্ষা করি না
উওর:- গ)অতিথির অনিষ্টচিন্তা করি না।
৮. “আমাদের উভয়ের সম্ভাবনা।” ক) প্রাণরক্ষার(খ) প্রাণ যাওয়ার গ) প্রাণ থাকার (ঘ) বিপদের ।
উওর:- ক) প্রাণরক্ষার।
অদ্ভুত আতিথেয়তা: অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. “কী কারণে আরবসেনাপতি এরূপ বলিয়া পাঠাইলেন”—এখানে কে, কী কথা বলে পাঠালেন?
* আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির সঙ্গে কথা বলতে বলতে হঠাৎ উঠে গিয়েছিলেন এবং বলে পাঠিয়েছিলেন যে, তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে চলে যেতে হয়েছিল।
২. “তাঁহার নিদ্রাভঙ্গ করাইল”—কারা, কার নিদ্রাভঙ্গ করাইল ?
→ মুরসেনাপতি পথ ভুলে তাঁর শত্রু আরবসেনাপতির শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাত্রিশেষে আরবসেনাপতির লোক এসে মুরসেনাপতির নিদ্রাভঙ্গ করিয়েছিল।
৩. “সন্দিহানচিত্তে শয়ন করিলেন। ” এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্য থেকে উদ্ধৃত এই অংশে মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।
৪. “দ্বারদেশে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন” – কে, কী দেখলেন?
মুরসেনাপতি তাঁবুর দরজায় দাঁড়িয়ে দেখলেন যে, আরবসেনাপতি একটি সুসজ্জিত ঘোড়ার মুখের লাগাম ধরে তাঁর অপেক্ষাতেই দাঁড়িয়ে আছেন।
৫. “বারংবার এই শপথ ও প্রতিজ্ঞা করিয়াছি”–কে, কী প্রতিজ্ঞা করেছেন?
আরবসেনাপতি বারবার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, সূর্যোদয়ের পর তিনি পিতার হত্যাকারীর প্রাণনাশের চেষ্টা করবেন এবং পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবেন
৬. “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই”—জাতীয় ধর্মটি কী
[ ] অথবা, “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই”–কাদের, কোন্ ধর্মের কথা বলা হয়েছে?
আরবসেনাপতি মুরসেনাপতিকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের জাতীয় ধর্ম হল—প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হলেও অতিথির কোনো ক্ষতি তাঁরা করেন না।
৭. “আপনি সত্বর প্রস্থান করুন।”—বক্তা কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে ‘সত্বর প্রস্থান’ করার নির্দেশ দিলেন?
বক্তা আরবসেনাপতি উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ মুরসেনাপতিকে সূর্যোদয়ের আগেই শত্রুশিবির থেকে নিজেদের শিবিরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা বলেছেন। কারণ, সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধের নিয়মে তিনি শত্রু হিসেবে মুরসেনাপতিকে হত্যা করতে পারেন।
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর: অদ্ভুত আতিথেয়তা
১. “আমাদের জাতীয় ধর্ম এই”–কাদের জাতীয় ধর্ম’ কী?
* আরবদের জাতীয় ধর্ম হল কেউ অতিথি হিসেবে তাঁদের বাড়িতে এলে তাঁর যথাসাধ্য সেবা করা। এই জাতীয় ধর্ম অনুসারে, আরবরা প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেও কখনোই অতিথির অনিষ্ট চিন্তা করে না।
২. “তাহা হইলে আমাদের উভয়ের প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা।”—কী হলে কাদের প্রাণরক্ষার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে?
আরবসেনাপতি তাঁর জাতিগত অতিথিপরায়ণতার কারণে পিতার হত্যাকারী মুরসেনাপতিকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু আরবসেনাপতি অঙ্গীকার করেছিলেন, সূর্যোদয়ের পর তিনি পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেবেন। তাই তিনি মুরসেনাপতিকে সূর্যোদয়ের পূর্বে অশ্বে আরোহণ করিয়ে এ কথা বলেন যে, দ্রুত গমন করতে পারলে তাঁদের দুজনেরই প্রাণরক্ষা হবে।
৩. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ কাহিনিতে আরবসেনাপতিকে তোমার কেমন লেগেছে নিজের ভাষায় লেখো ।
‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ কাহিনিতে আরবসেনাপতির অতিথিসেবা এবং সততার সঙ্গে জাতীয় ধর্ম পালন আমাকে এক মহৎ শিক্ষা দান করেছে। আশ্রয়প্রার্থী মুরসেনাপতি তাঁর পিতার হত্যাকারী জেনেও আরবসেনাপতি নিজ কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন। আরবসেনাপতির কর্তব্যনিষ্ঠা এবং অতিথিবৎসলতা তাঁকে আমার চোখে মহৎ করে তুলেছে।
৪. “সন্দিহানচিত্তে শয়ন করিলেন।”—কে, কেন সন্দিগ্ধ হয়েছিলেন ? [বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল]
মুরসেনাপতি তাঁর শত্রু আরবসেনাপতির আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হলে আরবসেনাপতি তাঁর যথেষ্ট পরিচর্যা করেন। কিন্তু হঠাৎই তিনি মুরসেনাপতিকে একাকী রেখে চলে যান এবং খবর পাঠান যে, পরদিন ভোরে তিনি মুরসেনাপতির সঙ্গে দেখা করবেন। আরবসেনাপতির আচমকা সেই স্থান থেকে চলে যাওয়া মুরসেনাপতিকে সন্দিগ্ধ করে তোলে।
৫. “কিন্তু সেখানে আরবসেনাপতিকে দেখিতে পাইলেন না।”আরবসেনাপতি কোথায় ছিলেন?
ভোরবেলা আরবসেনাপতিকে মুরসেনাপতি আহারের স্থানে দেখতে পাননি। কারণ, আরবসেনাপতি মুরসেনাপতির তাঁবুর বাইরে ঘোড়ার লাগাম ধরে দাঁড়িয়েছিলেন।
অদ্ভুত আতিথেয়তা: পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ
১ . নীচের শব্দগুলির ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো— বিদ্যাসাগর, প্রাণভয়ে, আশ্রয়-প্রার্থনা, হতবীর্য, দর্শনমাত্র পিপাসাশান্তি,
উত্তর: বিদ্যাসাগর—বিদ্যার সাগর (সম্বন্ধ তৎপুরুষ)।
→ প্রাণভয়ে—প্রাণের নিমিত্ত ভয়, তাতে (নিমিত্ত তৎপুরুষ)।
→ আশ্রয়-প্রার্থনা—আশ্রয়ের নিমিত্ত প্রার্থনা (নিমিত্ত তৎপুরুষ)। )
পিপাসাশান্তি—পিপাসা হইতে শান্তি (অপাদান তৎপুরুষ)।
* হতবীর্য—হত বীর্য যার (বহুব্রীহি সমাস)।
দর্শনমাত্র—কেবল দর্শন (নিত্য সমাস)।
২. নীচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করে মুক্তদল ও রুদ্ধদল চিহ্নিত করো—সেনাপতি, পিতৃহন্তা, মর্মগ্রহ, ক্লান্তি
উত্তর: সেনাপতি—সে (মুক্ত) · না (মুক্ত) · প (মুক্ত) · তি (মুক্ত) ) > পিতৃহন্তা—পিত্ (রুদ্ধ) · রি (মুক্ত) · হন্ (রুদ্ধ) · তা (মুক্ত) → মর্মগ্রহ—মর্ (রুদ্ধ) · ম (মুক্ত) · গ্র (মুক্ত) · হ (মুক্ত) > ক্লান্তি—ক্লান্ (রুদ্ধ) · তি (মুক্ত) . .
___________________________